ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

৪০০ কোটি মাইল দূর থেকে পৃথিবীতে সঙ্কেত !

প্রকাশিত: ২০:২৪, ২ জানুয়ারি ২০১৯

৪০০ কোটি মাইল দূর থেকে পৃথিবীতে সঙ্কেত !

অনলাইন ডেস্ক ॥ মঙ্গলবার ছিল ইংরেজি নববর্ষের প্রথমদিন। এদিন ইতিহাস সৃষ্টি করল যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মহাকাশযান নিউ হরিজনস। পৃথিবী থেকে ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন কিলোমিটার (৪০০ কোটি মাইল) দূরে থেকে পৃথিবীকে বার্তা পাঠাতে সক্ষম হয়েছে মহাকাশযানটি। এর ফলে এই প্রথম মনুষ্যতৈরি কোনো মহাকাশযান পৃথিবী থেকে এত দূর থেকে বার্তা পাঠাতে সক্ষম হলো। মহাকাশযানটি বর্তমানে সৌরজগতের কিনারে অবস্থান করছে। নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পারমাণবিক শক্তি দ্বারা পরিচালিত মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে ৪০০ কোটি মাইল অতিক্রম করে এখন আলটিমা থিউলের ২,২০০ মাইল এলাকার মধ্যে যেতে সক্ষম হয়েছে। আলটিমা থিউল বাদাম আকৃতির একটি শিলা যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ মাইল। এটি কুইপার বেল্টের অভ্যন্তরে অবস্থিত। কুইপার বেল্ট হচ্ছে নেপচুন গ্রহের বাইরের একটি বিশেষ অঞ্চল যেখান থেকে মহাকাশীয় বস্তুর ধ্বংসাবশেষ নিয়মিত প্লুটো ও এর পাঁচটি চাঁদের ওপর আঘাত করতে থাকে। নাসার উদ্ধৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইস্টার্ন টাইম মঙ্গলবার সকাল ১২টা ৩৩ মিনিটে মহাকাশ থেকে সংকেতটি পাঠানো হয় এবং এটি পৃথিবীতে এসে পৌছায় ১০টা ৩১ মিনিটে। সঙ্কেতটি পাওয়া মাত্র উল্লাসে ফেটে পড়েন মিশন অপারেটর ম্যানেজার অ্যালিস বোউম্যান। আমাদের একটি শক্তিশালী মহাকাশযান আছে বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি। নাসা বলছে, সামনের দিনগুলোতে আলটিমা থিউল থেকে ছবি ও ডাটা পাঠাবে মহাকাশযানটি। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে দ্য নিউ হরিজনস মহাকাশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এটি সৌরজগতের দিকে রওনা দিচ্ছে। সৌরজগতে এই রোবটযানটির পাঠানোর উদ্দেশ্য বামন গ্রহ প্লুটো ও এর পাঁচ চাঁদকে নিয়ে গবেষণা করা। বামন গ্রহ প্লুটোর বুকে বেশ কিছু পর্বত। সেগুলো বরফে ঢাকা। আরও আছে সমতল এলাকা। সেখানে নেই কোনো খানাখন্দ। পার্বত্য এলাকাটি উত্তর আমেরিকার রকি পর্বতমালার সমান উঁচু হতে পারে। অনুসন্ধানী রোবটযান নিউ হরাইজনসের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে মার্কিন মহাকাশ সংস্থার (নাসা) বিজ্ঞানীরা এসব কথা জানিয়েছেন। ২০১৫ সালে নাসার মহাকাশযানটি ১০ বছরে প্রায় ৪৮০ কোটি কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মঙ্গলবার প্লুটোর সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছায়। প্লুটোর কাছ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় এটি সেখানকার বেশ কিছু ছবি তোলে। প্লুটোর পৃষ্ঠতলের আলটিমা থিউল অঞ্চল দেখতে অনেকটা মানুষের হৃৎপিণ্ডের মতো। নাসার বিজ্ঞানীরা ওই অঞ্চলটির নাম রেখেছেন মার্কিন জ্যোতির্বিদ ক্লাইড টমবার নামের সঙ্গে মিলিয়ে। তিনি ১৯৩০ সালে প্লুটো আবিষ্কার করেন। পার্বত্য ওই অঞ্চলটির উচ্চতা ১১ হাজার ফুট পর্যন্ত হতে পারে। প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৪ কিলোমিটার গতিতে ধাবমান রোবটযানটি এখন সৌরজগতের কুইপার বেল্ট অঞ্চলের গভীরে প্রবেশ করছে। নেপচুন গ্রহের সীমানার বাইরে সৌরজগতের ওই অঞ্চলটি প্লুটোর মতো হাজারো কাঠামোয় পরিপূর্ণ। ধারণা করা হয়, সেগুলোর সবই প্রায় ৪৬০ কোটি বছর আগে সৌরজগৎ সৃষ্টির সময়ের ধ্বংসাবশেষ। সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স
×