ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিদায়ের চিত্রনাট্যটা বদলে গেল ‘টাইগার’ শরীফের ...

প্রকাশিত: ০০:২১, ৪ জানুয়ারি ২০১৯

বিদায়ের চিত্রনাট্যটা বদলে গেল ‘টাইগার’ শরীফের ...

রুমেল খান ॥ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এনামুল হক শরীফ। লড়াকু ফুটবল খেলে সমর্থকদের কাছে ‘টাইগার’ উপাধি লাভ করেন ২০০৭ সালে। সেই থেকে এখনও সবাই তাকে চেনে ‘টাইগার শরীফ’ নামেই! সেই টাইগার শরীফ ফুটবলজীবনের ইতি টানতে চেয়েছিলেন আরও দুই বছর পর। কিন্তু বিধাতার লীলাখেলায় তার বিদায়ের চিত্র্যনাট্যটা বদলে গেল। এই মৌসুমেই বিদায় নেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছেন তিনি। জনকণ্ঠের সঙ্গে একান্ত আলাপনে তিনি জানিয়েছেন, গত অক্টোবরে ফেডারেশন কাপের প্রস্তুতি হিসেবে মোহামেডানের হয়ে একটি প্রীতি ম্যাচে খেলেন আরামবাগের বিরুদ্ধে।সেই ম্যাচে খেলতে গিয়ে বাজেভাবে হাঁটুতে চোট পান। ফলে খেলতে পারেনি ফেডারেশন কাপে। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী চার সপ্তাহের মধ্যেই তার মাঠে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ফেরা হয়নি। কারণ ব্যথাটা কমেনি। তারপরও অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছিলেন স্বাধীনতা কাপে খেলার জন্য। কিন্তু ফিট না হওয়াতে স্বাধীনতা কাপেও খেলা হয়নি। সামনেই (১৮ জানুয়ারি থেকে) প্রিমিয়ার লীগ শুরু। লীগে খেলতে পারায় সম্ভাবনা যাচাই করতে ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে হাঁটুর পরীক্ষা (এমআরআই) করান। সেখানেই ধরা পড়ে বিষয়টি। জানা যায় লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে তার। সার্জারি করাতে হবে। আর সার্জারি করলে প্রায় বছরখানেক ফুটবল খেলতে পারবেন না। এদিকে তার বয়সটাও হয়ে গেছে ৩৭। ফলে সবদিক বিবেচনা করেই চিরতরে বুটজোড়া তুলে রাখার কঠিন সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেললেন কুমিল্লার ছেলে শরীফ। দীর্ঘ ১৮ বছরের ক্যারিয়ার শরীফের। খেলেছেন ভিক্টোরিয়া, মোহামেডান, জামাল ও রাসেলে। অধিনায়ক ছিলেন ২০১১ সালে মোহামেডান এবং ২০১২ সালে জামালের। লীগ রানার্সআপ হয়েছেন ৪ বার (মোহামেডানে ৩ বার, জামাল ১ বার) আর লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ১ বার (জামাল)। ২০০৬-২০১১ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলে নিয়মিত খেলেছেন। এরপর ইনজুরির কারণে ২০১২-১৪ পর্যন্ত ফুটবল খেলেননি। ২০১৫-১৬ সালে পুনরায় কাম ব্যাক করেন। তার আক্ষেপÑ জাতীয় দলের অধিনায়ক হতে না পারা। আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে (প্রথম পর্র্বে) খেলেই ফুটবলকে চিরতরে বিদায় জানাবেন শরীফ। লিগামেন্টের চোট নিয়ে কিভাবে আবাহনীর বিরুদ্ধে খেলবেন? কোচ কি মাঠে নামার অনুমতি দেবেন? ‘অবশ্যই দেবেন। দেখুন, আমি তো আবাহনীর বিরুদ্ধে পুরো সময় খেলবো না। মাত্র ৫-১০ মিনিটের জন্য মাঠে নামবো। এ ধরনের চোট নিয়ে অল্প সময়ের জন্য খেলাটা কোন সমস্যা নয়।’ শরীফের জবাব। কুমিল্লায় শরীফের একটি ফুটবল একাডেমি আছে। নাম টাইগার একাডেমি। প্রায় ছয় মাস আগে এটি চালু করেন তিনি। এখানে ৪০ জন ছেলে ফুটবল প্রশিক্ষণ নেয়। তাদের ফ্রি কোচিং করান শরীফ। অবসর নেয়ার পর এই একাডেমিতে কাজ করে মেধাবী ফুটবলার সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাবেন শরীফ।
×