ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের পর ভোগ্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক

প্রকাশিত: ০১:৫২, ৪ জানুয়ারি ২০১৯

নির্বাচনের পর ভোগ্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের পর জমে উঠতে শুরু করেছে রাজধানীর ভোগ্যপণ্যের বাজার। তবে ভোগ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ভোট প্রদানে গ্রামে যাওয়া নগরবাসীরা ফিরে আসছেন ঢাকায়। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হওয়ায় স্বস্তি বিরাজ করছে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় পণ্য সরবরাহ বেড়েছে। পেঁয়াজ ডিম ও মাছের দাম কিছুটা বাড়লেও সব ধরনের পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, ফার্মগেট কাঁচা বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট এবং মিরপুর সিটি কর্পোরেশনের বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটের আগে ও পরে তিনচারদিন রাজধানীতে পণ্য সরবরাহ কমে যায়। ওই সময় নগরীর একটি বড় অংশ ভোট প্রদানে চলে যায় নিজ গ্রামে। ফলে ভোগ্যপণ্য ও কাঁচা বাজারে ভোক্তা উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। কিন্তু ভোটের পর বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। পণ্য সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি জিনিসপত্রের দাম আর বাড়েনি। পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারের সবজি বিক্রেতা মিজান জনকণ্ঠকে বলেন, নির্বাচনের আগে পরে মিলিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ক্রেতা উপস্থিতি কম ছিল। কমে গিয়েছিল সবজির সরবরাহ। তবে এখন বাজারভর্তি মানুষ। পণ্য সরবরাহ বাড়ার পাশপাশি বেচাবিক্রি বেড়েছে। নতুন করে জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর বেশির ভাগ বাজারে সবজির দাম স্বাভাবিক রয়েছে। কমে এসেছে পাকা টমেটোর দাম। তবে নতুন ধুন্দল, ঝিঙ্গা এবং চিচিঙ্গার মতো সবজির দাম কিছুটা বেশি। এছাড়া শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু ও লাউয়ের মতো সবজি ১৫-৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ৬০-৭০ টাকার টমেটো এখন ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। তবে কেজিতে পাঁচ টাকা দাম বেড়ে প্রতিকেজি পেঁঁয়াজ ২৫-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, নির্বাচনের পর বাজারে ভোগ্য ও মুদি পণ্যের দাম বাড়েনি। আগের মতো ৩৮-৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জাতের মোটা চাল। মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪-৬২ টাকা। এছাড়া মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৪৪-৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম কিছুটা বেড়ে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৪-৩৫ টাকায়। তবে ইতোপূর্বে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম কয়েকদফা কমে যাওয়ায় এ শিল্পখাতের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া ভোজ্যতেল, চিনি, লবণ, আটা ও ডালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে বাজারে মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। বিশেষ করে দেশীয় জাতীয় মাছের সরবরাহ বাড়লেও দাম কমছে না। প্রতিকেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকায়, প্রতিকেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কাতাল মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ১৪০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ইলিশের সরবরাহ কমে গেছে। যেসব জাটকা সাইজের ইলিশ আসছে তার দামও চড়া। কাওরান বাজারের মাছ ক্রেতা সাইফুল মিয়া জনকণ্ঠকে বলেন, অন্যসব পণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকলেও বাজারে মাছের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। গত কয়েক মাস মাছের দাম বেশ কমছিল। কিন্তু হঠাৎ করে দাম আবার বেড়ে গেছে। এছাড়া বাজারে ব্রয়লার মুরগি, গরু ও খাসির মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা, সোনালী মুরগি প্রতিপিস বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৬০ টাকা এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকায়। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৭০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা ও খাসি ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে হাঁসের সরবরাহ বেড়েছে। সাইজ ও আকারভেদে প্রতিপিস হাঁস ৪০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
×