ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন গ্রহে জল থাকার সম্ভাবনা আছে

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ৮ জানুয়ারি ২০১৯

নতুন গ্রহে জল থাকার সম্ভাবনা আছে

অনলাইন ডেস্ক ॥ ভিন গ্রহের ভিন মুলুকে প্রাণের হদিশ পাওয়ার আশা ফের জোরালো হল। খোঁজ মিলল কিছুটা অন্য ধরনের একটি ভিন গ্রহের। যা আকারে পৃথিবীর প্রায় দ্বিগুণ। আর আমাদের নেপচুন গ্রহের অর্ধেক। সেই ভিন গ্রহটি রয়েছে তার নক্ষত্র থেকে এমন একটি দূরত্বে, যাকে বলে ‘হ্যাবিটেব্ল জোন’ বা বাসযোগ্য এলাকা। যেখানে জলের তরল অবস্থায় থাকার সম্ভাবনা থাকে যথেষ্টই। এ বার ওই ভিন গ্রহে যদি বায়ুমণ্ডলের অস্তিত্বেরও প্রমাণ মেলে, তা হলে সেই মুলুকে প্রাণের হদিশ পাওয়ার সম্ভাবনা আরও জোরালো হবে। সিয়াট্লে আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ২৩৩তম বৈঠকে, সোমবার ওই নজরকাড়া আবিষ্কারের ঘোষণা করা হয়েছে। জানানো হয়েছে নাসার কেপলার টেলিস্কোপের পাঠানো তথ্যাদিই ওই ভিন গ্রহটির খোঁজখবর দিয়েছে। ভিন গ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘কে-২-২৮৮বিবি’। রয়েছে আমাদের থেকে ২২৬ আলোকবর্ষ দূরে। ‘টরাস’ নক্ষত্রপুঞ্জে। আমাদের সূর্যের চেয়ে আকারে অনেক ছোট, অনেক হাল্কা আর প্রায় ‘টিমটিম’ করে জ্বলা একটি তারাকে এক বার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে ভিন গ্রহটি সময় লাগে ৩১.৩ পার্থিব দিন। মানে, আমাদের ৩১ দিনের মাস পেরনোর পর আরও ৩টি ঘণ্টা। পরে নাসার অ্যাসোসিয়েট অ্য়াডমিনিস্ট্রেটর থমাস জুরবুচেন তাঁর টুইটেও ওই আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন। গবেষকদলের নেতৃত্বে রয়েছেন যিনি, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই স্নাতক স্তরের ছাত্রী আদিনা ফিনস্টিন জানিয়েছেন, ওই ভিন গ্রহটি যে তারামণ্ডলে রয়েছে তার নাম ‘কে-২-২৮৮’। সেখানে দু’টি তারা একে অন্যকে প্রদক্ষিণ করছে। কোনও তারামণ্ডলের এই অবস্থাকে বলে ‘বাইনারি সিস্টেম’। সেখানকার দু’টি তারাই আমাদের সূর্যের চেয়ে আকারে অনেকটা ছোট। তাদের তেজও খুব কম। সূর্যের তুলনায় বলা ভালো, তারা ‘টিমটিম করে জ্বলছে’। তবে এই ভিন গ্রহটির বিশেষত্ব এটাই যে, তা তুলনায় আরও ছোট আর বেশি টিমটিম করে জ্বলা তারাটিকেই প্রদক্ষিণ করছে। ওই নক্ষত্রমণ্ডলের দু’টি তারা একে অন্যের চেয়ে রয়েছে ৫১০ কোটি মাইল দূরে। যার মানে, আমাদের সূর্য থেকে বলয় গ্রহ শনি যতটা দূরে রয়েছে, ওই নক্ষত্রমণ্ডলের দু’টি তারা একে অন্যের চেয়ে রয়েছে তার ৬ গুণেরও বেশি দূরত্বে।গবেষণাপত্রটি শীঘ্রই বেরতে চলেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল’-এ। গবেষকরা এও জানিয়েছেন, ওই তারামণ্ডলের দু’টি নক্ষত্রের মধ্যে যেটি বেশি ঝকঝকে, আলো ঠিকরোচ্ছে বেশি, তার ভর আমাদের সূর্যের ভরের অর্ধেক। আর যে তারাটি তুলনায় বেশি ‘টিমটিম’ করে জ্বলছে, সেটির ভর আমাদের সূর্যের এক-তৃতীয়াংশ। মূল গবেষক ফিনস্টিন বলেছেন, ‘‘আকারের জন্যই এই ভিন গ্রহটি কিছুটা বিরল প্রকৃতির। এখনও পর্যন্ত যত ভিন গ্রহের হদিশ মিলেছে (প্রায় ৪ হাজারটি), তাদের প্রায় কেউই আকারে, আচরণে এই ভিন গ্রহটির মতো নয়। তাই ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি রহস্যের জট খুলতে এই ভিন গ্রহটি পথ দেখাতে পারে।’’ গবেষক ফিনস্টিন ইনটার্ন হিসেবে কাজ করেন নাসার গড্ডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×