ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১০ জানুয়ারি ২০১৯

এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না :   অর্থমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ রয়েছে, তা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনও কিছু আলাপ করার আগেই আমার এক দফার কথা বলেছি। আমি বলেছি, আজকের পর থেকে খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়তে পারবে না। আপনারা কিভাবে বন্ধ করবেন, কিভাবে টেককেয়ার করবেন, কিভাবে ম্যানেজ করবেন; আপনাদের ব্যাপার। তারা এই ব্যাপারে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। তাই বলেছি, আজকের পর থেকে খেলাপি ঋণ বাড়বে না ইনশাল্লাহ।’ বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি মিলানায়তনে ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে এসোসিয়েশনের সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার, আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবালসহ ব্যাংক মালিকরা উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত নিয়ে আলোচনা করেছি। তারাই ব্যাংকের মালিক। সবাই প্রায় এসেছেন। তাদের সঙ্গে যেসব আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, তাদের কাছ থেকে ব্যাংকিং খাতের যেসব তথ্য পাওয়া গেছে সেগুলো ভেরিভফাই করবো, এভালুয়েট করবো, মূল্যায়ন করবো। এ জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে। এই মূল্যায়ন শেষ হলে আমরা একটি ব্যবস্থায় যাবো।’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা একটি জায়গায় ঐক্যমতে পৌঁছেছি, মূল যে এলাকা মূল যে চিন্তা সেটি হচ্ছে ননপারফরমিং লোন। এটি আপনাদের উৎকণ্ঠা, জাতির উৎকণ্ঠা, আমাদের উৎকণ্ঠা এবং আমার উৎকণ্ঠা, তবে আমার উৎকণ্ঠা কিছুটা কম। কেননা এরই মাঝে আমি দেখেছি যেভাবে যে পরিমাণ পত্রপত্রিকায় লেখা হয়, সে পরিমাণ ননপারফরমিং লোন না। দেশে ননপারফরমিং লোনের হার ১১ থেকে ১২ শতাংশ। এরচেয়ে অন্যান্য দেশে আরও বেশি। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও আরও বেশি। ননপারফরমিং লোন কমলে ব্যাংক সুদের হার কমে যাবে, সুতরাং এটা কোনোভাবেই বাড়তে দেওয়া হবে না। ননপারফরমিং লোন এখনও ম্যানেজেবল। আর এই ম্যানেজেবল লোন আর বাড়তে পারবে না। পরবর্তী মিটিংয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেবো। এটিই আলোচনার মূল বিষয় ছিল। যেহেতু খেলাপি ঋণ হয়েই গেছে। সে বিষয়ে তারাই আমাকে তথ্য দেবেন কি পরিমাণ, কোন ব্যাংকের কতটা খেলাপি ঋণ আছে। কার কাছে কতটা পাওয়া যাবে, এরমধ্যে কতটা আসল, কতটা সুদ এবং কোন অবস্থায় আছে। ঋণের বিপরীতে তাদের সমপার্শিক অবস্থাও পরীক্ষা করে দেখা হবে।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করে, তারা সবাই প্রভাবশালী। পৃথিবীতে যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করেন, সবাই প্রভাবশালী। ব্যবসায়ীরা যদি প্রভাবশালী না হন, তাহলে বিনিযোগ কিভাবে আসবে। কোথা থেকে কর্মসংস্থান হবে, কিভাবে হবে, দারিদ্র্য কিভাবে কমবে। প্রভাবশালী যারা যারা ব্যবসাবাণিজ্য করে তারা অর্থনীতির ৮২ শতাংশ। এদেরকে বাদ দিয়ে ১৮ শতাংশ নিয়ে অর্থনীতি সাজানো সম্ভব নয়। এটা করতে চাওয়াটাও একটা অবাস্তব চিন্তা। তাদেরকে ব্যবসা করতে সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে ঋণখেলাপি না হয়ে।
×