ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শীতের উষ্ণতা ছড়াচ্ছে সপ্তদশ ঢাকা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বহু দেশের চলচ্চিত্র, দেখা ও আদান প্রদানের সুযোগ

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

বহু দেশের চলচ্চিত্র, দেখা ও আদান প্রদানের সুযোগ

মোরসালিন মিজান ॥ বাংলাদেশের সিনেমা ধুঁকছে। সেই কবে থেকে সঙ্কট! সঙ্কট উত্তরণে এই উদ্যোগ সেই উদ্যোগ। কিছু ভাল ছবিও হয়েছে। হচ্ছে। কিন্তু বড় কোন পরিবর্তন আসেনি। দর্শকও সচরাচর ছবি দেখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন না। সিনেমাকেন্দ্রিক আয়োজনগুলোকে ফিকে মনে হয়। টানাপোড়েন চলতেই থাকে। জরুরী অনেক চর্চা ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে। এ অবস্থায় পৃথিবীর নানা প্রান্তে নির্মিত নতুন ছবি সংগ্রহ করা, পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন, তাদের এই দেশে আনা নেয়ার ব্যবস্থা করা, সিনেমাপ্রেমীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আশার কথা এই যে, চ্যালেঞ্জ গ্রহণে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছে রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি। সোসাইটির উদ্যোগে ১৯৯২ সালে প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। এরপর থেকে মোটামুটি অব্যাহত আছে। এবার ১৭তম আসর। রাজধানী ঢাকায় গত বৃহস্পতিবার এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উৎসবের স্লোগান- নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ। অর্থাৎ স্লোগানের মধ্য দিয়ে আয়োজনের উদ্দেশ্য ও চাওয়াটুকু পরিষ্কার করেছেন আয়োজকরা। বলা চলে, একই চাওয়া থেকে নির্বাচন করা হয়েছে চলচ্চিত্র। এরই মাঝে তাই বেশ জমে উঠেছে উৎসব। শীতের দিনে দারুণ উষ্ণতা ছড়াচ্ছে বাৎসরিক আয়োজনটি। উৎসবে এবার ৭২ দেশ। ২১৮টি চলচ্চিত্র। সঙ্গত কারণেই বৈচিত্র্যপূর্ণ আয়োজন। বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে- এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন্স ফিল্ম, শর্ট এ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস এবং উইমেন্স ফিল্ম। যার যেমন ছবি পছন্দ, দেখতে পারেন। দেখছেনও বটে। গত কয়েকদিন ভেন্যুগুলো পরিদর্শন করে দেখা যায়, প্রায় সবক’টিতে একযোগে ছবি দেখানো হচ্ছে। উপচেপড়া ভিড় নেই। নেই তো কী হয়েছে? যারা সিনেমাপ্রেমী, পৃথিবীর কোন প্রান্তে কী ধরনের ছবি হচ্ছে যারা জানতে চান, নির্মাতাদের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের সুযোগ কাজে লাগাতে চান যারা তারা ঠিক চলে আসছেন। ব্যক্তিগত কাজ? ব্যস্ততা? কোনটাই তাদের রুখতে পারছে না। ‘যাব যাচ্ছি’ করে আফসোস করার পক্ষপাতি নন তারা। আঁলিয়স ফ্রঁসেজের কথাই ধরা যাক। শনিবার ধানমন্ডির এই ভেন্যুতে গিয়ে মন সত্যি ভাল হয়ে গেল। সিনেমা দেখার জন্য দীর্ঘ লাইন। অনেক দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল। ফুটপাথের পুরোটাজুড়ে দর্শক। ভেতরে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখানে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগের ছবিগুলো দেখানো হচ্ছে। এদিন প্রথম শোতে দেখানো হয় কাজাখস্তানের পরিচালক ঝানাবেক জেতিরোওবের ছবি ‘শোইনিরাউ।’ দ্বিতীয় শোতে ছিল ইরানের ছবি ‘আইসোলেশন।’ পরিচালক আব্বাস মির্জাই। তৃতীয় ছবিটি ভারতের। রোহিত দ্বিবেদী পরিচালিত ছবির নাম ‘খেজদী।’ একই দেশের ছবি ‘এক যে ছিল রাজা’ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রদর্শনী। পশ্চিম বঙ্গের জনিপ্রয় পরিচালক সৃজিত মুখার্জীর ছবি। নামটি ঢাকার দর্শকের কাছে অনেক বেশি পরিচিত। দর্শক মুগ্ধ চোখে দেখেছেন প্রিয় পরিচালকের ছবি। এর আগে শুক্রবার থেকে আঁলিয়স ফ্রঁসেজের গ্যালারি কক্ষে শুরু হয় পঞ্চম আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস্ কনফারেন্স। বলার অপেক্ষা রাখে না, নারী নির্মাতাদের মিলনমেলা। উৎসবের এটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। কত দেশ থেকে যে নারীরা এসেছেন! একেকজনের একেক ভাবনা। ভিন্ন ভিন্ন স্বপ্ন। সবই এখানে এসে পাখা মেলতে চায়। এখানে চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা, কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলে মতবিনিময়। আড্ডা। আলোচনা। প্রথম দিন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের নির্মাতা সামিয়া জামান। আলোচনা করেন পির্য়ে সাইমন গুটমান, ভগবতী কুমারী প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আরেক খ্যাতিমান চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক ও তাত্তি¡ক সিডনি লেভিন। দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনে ছিল একই ধরনের আয়োজন। এদিন বড় বড় পরিচালক আর বিদগ্ধজনের সামনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পশ্চিমবঙ্গের অপেক্ষাকৃত তরুণ নির্মাতা অভিনেত্রী অপরাজিতা ঘোষ। গত বছর রবীন্দ্রনাথের নৃত্য ভাবনা নিয়ে তথ্যসমৃদ্ধ একটি ডক্যুফিচার ফিল্ম নির্মাণ করেন তিনি। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ১৬তম আসরে দেখানো হয় তার ‘ডান্স অব জয়।’ প্রশংসিতও হয় খুব। আর তার পর শনিবার ‘ইমার্জেন্স অব ওমেন ফিল্ম মেকারস এ্যান্ড দ্য রোল অব ফিল্ম ইনস্টিটিউশনস ইন দ্য চেঞ্জিং সিনারিও’ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিনি। নাতিদীর্ঘ বলা। সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ। নারী নির্মাতা প্রশ্নে কিছু তথ্য ও বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করেন তিনি। চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে নারীর একাডেমিক শিক্ষার গুরুত্ব, প্রতিবন্ধকতা এবং করণীয় ব্যাখ্যা করেন। চা বিরতিতে কথা হয় অপরাজিতার সঙ্গে। বাচ্চা বাচ্চা চেহারা। চটপটে স্বভাব। কিন্তু ঝরঝরে বলা। তিনি যোগ করেন, প্রবন্ধে আমি যা বললাম তা শুধু ভারতের নয়। এই সাবকন্টিনেন্টের বাস্তবতা। ফিল্ম স্কুলে মেয়েরা কম যাচ্ছে। যারা যাচ্ছে তাদের অনেকেই খুব ভাল ভাল ডক্যুমেন্টারি ফিল্ম করছেন বটে। মূল ধারার ছবি নির্মাণে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এর বাইরে আপনি দেখবেন, নায়িকা হওয়ার ব্যাপারে মেয়েরা ভীষণ আগ্রহী। পরিচালনার বেলায় ঠিক তার উল্টো। এসব বিষয়ে ওভার অল এওয়্যারনেস সৃষ্টির ওপর জোর দেন তিনি। কথা হয় নেপাল থেকে আসা নির্মাতা ভগবতী কুমার মৈনালীর সঙ্গেও। বাংলাদেশে আসতে পেরে ভীষণ খুশি তিনি। বলেন, ঘটনাক্রমে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম আমি। এখন সত্যি খুব উপভোগ করছি। বাংলাদেশে এসে অনেকের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশে অবস্থান করছি। অথচ মনে হচ্ছে সব দেশ মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এই আদান প্রদানের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে বলে মনে করেন তিনি। উৎসব ভেন্যুগুলো চষে বেড়াচ্ছেন আরও অনেক বিদেশী নির্মাতা। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন ১১৫ জনের মতো বিদেশী ডেলিগেটস আছে। এই আসা যাওয়া চলবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। উৎসবে যেসব দেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, আলবেনিয়া, আর্মেনিয়া, আর্জেন্টিনা। অস্ট্রেলিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, বেলজিয়াম, ভুটান। ব্রাজিল, কানাডা, চিন, কিউবা, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স। প্যালেস্টাইন, জার্মানি, গ্রিস, হংকং, হাঙ্গেরি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কাজাখস্তান। কসোভো, কিরগিস্তান, লাটভিয়া, লেবানন, লুক্সেমবার্গ। মালয়েশিয়া, মেক্সিয়া, নেপাল, নরওয়ে, পাকিস্তান, ফিলিপিন্স, পোল্যান্ড। পর্তুগাল, কাতার, রাশিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড। সিরিয়া, তাইওয়ান, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, আরব-আমিরাত। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভেনিজুয়েলা। বাংলাদেশের ছবি সে তুলনায় কম। তবে নূর ইমরান মিঠুর ‘কমলা রকেট’, ফয়সাল রদ্দি ও আসিফ আসলামের ‘পাঠশালা’, ইফতেখার আহমেদ ফাহমির ‘টু বি কনটিনিউড’ ইত্যাদি ছবি আগ্রহ নিয়ে দেখছেন দর্শক। উৎসবের প্রধান দুটি ভেন্যু অবশ্য জাতীয় গণগ্রন্থাগার ও জাতীয় জাদুঘর। জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। ছবি দেখানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে। অন্য ভেন্যুগুলোর মধ্যে রয়েছে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন। আঁলিয়স ফ্রঁয়েজ মিলনায়তন ও যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমা। জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে সকাল ১০টা থেকে চলছে শিশুতোষ চলচ্চিত্র। শিশুদের সঙ্গে এখানে অভিভাবকরাও সিনেমা উপভোগ করতে পারছেন। সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকেল ৩টার প্রদর্শনী শিক্ষার্থীরা দেখতে পারছে বিনামূল্যে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করলেই খুলে দেয়া হচ্ছে দ্বার। আর সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকেটমূল্য ধরা হয়েছে মাত্র ৫০ টাকা। কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে সকাল ১০টা থেকে দেখানো হচ্ছে শিশুতোষ চলচ্চিত্র। এখানেও শিশুদের সঙ্গে অভিভাবকরাও বিনামূল্যে ছবি দেখতে পারছেন। সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকেল ৩টার প্রদর্শনী বিনামূল্যে দেখতে পারছে শিক্ষার্থীরা। জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনের সব প্রদর্শনী সবাই বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারছেন। ধানমন্ডির আঁলিয়স ফ্রঁয়েজ মিলনায়তনেও প্রদর্শিত হচ্ছে উৎসবের সিনেমা। সব সিনেমা বিনা টিকেটে দেখা যাচ্ছে। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার প্রদর্শনীগুলোও সবার জন্য উন্মুক্ত। যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমা হলে কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত প্রদর্শনীর বিনিময়ে দর্শকরা উৎসবের চলচ্চিত্রগুলো উপভোগ করতে পারছেন। উৎসবের শেষ দিন পর্যন্ত থাকবে আরও বহুবিধ আয়োজন। সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ্য। অন্যদের ছোটাছুটির মাঝে প্রতিদিনই উৎসব প্রাঙ্গণে দেখা যাচ্ছে পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামালকে। আয়োজক হিসেবে কেমন লাগছে? গত কয়েকদিনের অভিজ্ঞতা কী? জানতে চাইলে সাফল্যের দিকগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেন তিনি। তবে জোর দিয়ে বলেন, উৎসবের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারছি এটা অনেক বড় পাওয়া। তাছাড়া এবার কিছু নতুন বিষয় যোগ হয়েছে। আগামীকাল সোমবার প্রথমবারের অনুষ্ঠিত হবে নির্মাতাদের মিথষ্ক্রিয়ামূলক সেমিনার ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট’। দিনব্যাপী আয়োজনে প্রাচ্য ও পশ্চাত্য ধারার চলচ্চিত্রের দূরত্ব কীভাবে কমে আসছে সে দিকটি খতিয়ে দেখার চেষ্টা হবে। আর দর্শক? কেমন মনে হচ্ছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, নট বেড। আসলেই নট বেড। দর্শক বেড়েছে এবার। তবে একটি পুরনো বিষয়ের অবতারনা না করলেই নয়। উৎসবের সঙ্গে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অভিনেতা, অভিনেত্রী, নির্মাতা, প্রযোজক, পরিবেশক, চলচ্চিত্র সংসদকর্মীসহ তেমন কারও সম্পৃক্ততা চোখে পড়ছে না। সবেধন নীলমনিটি হয়ে দু’ একবার সামনে এসেছেন দেশের খ্যাতিমান নায়ক প্রযোজক পরিচালক ইলিয়াস কাঞ্চন। এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগের জুরি করা হয়েছে তাকে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন না তিনি। সাধারণের মতো পেছনে দর্শক সারিতে বসেছিলেন। ফলে স্বাগতিক ঢাকার চাওয়া পাওয়া কোন কোন ক্ষেত্রে পূরণ হচ্ছে না বলেই মনে হয়। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নামবে আমাগী শুক্রবার। এ সময়ের মধ্যে আয়োজকরা তাদের সীমাবদ্ধতাগুলো নিয়ে ভাববেন। ভাবলে আরও সফল, আরও প্রাপ্তির, আরও যোগাযোগের হয়ে ওঠতে পারে উৎসবটি।
×