ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বীরাঙ্গনাদের নিয়ে লিসা গাজীর ‘রাইজিং সাইলেন্স’

প্রকাশিত: ০৩:০০, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

বীরাঙ্গনাদের নিয়ে লিসা গাজীর ‘রাইজিং সাইলেন্স’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাঙ্গালি জাতির গৌরবময় অধ্যায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। এসময় বাংলাদেশের প্রায় চার লক্ষ নিরিহ নারী পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের দ্বারা ধর্ষিত হয়। পরবর্তিতে বাংলাদেশ সরকার এসব নারীদের বীরাঙ্গনা খেতাব প্রদান করে। ধর্ষিত হাজার হাজার নারী গর্ভধারণ, যুদ্ধশিশুর জন্ম, গর্ভপাত, আত্মহত্যা ইত্যাদি সমস্যার সূত্রপাত হয়। বিভিন্ন চলচ্চিত্রে, সাহিত্যে এবং চিত্রকর্মে এসব ধর্ষিতাদের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশের অভিনেত্রী ও নির্মাতা লিসা গাজী তার ‘রাইজিং সাইলেন্স’ ডকুমেন্টারীতে তুলে ধরেছেন এমন নয়জন বীরাঙ্গনার একান্ত জীবনের গল্প। ‘রাইজিং সাইলেন্স’ ডকুমেন্টারীর প্রচার ও প্রসারকল্পে এক সংবাদ সম্মেলন হয় রাজার বাগের পুলিশ লাইনের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে রবিবার দুপুরে। এতে উপস্থিত ছিলেন তথ্যচিত্রটির পরিচালক লিসা গাজী ও ফটোগ্রফি পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ ও লন্ডনের প্রযোজনা সংস্থা কমোলা কালেক্টিভের এ্যাডভাইজার জন ব্রেকার। সংবাদ সম্মেলনে লিসা গাজী ‘রাইজিং সাইলেন্স’ তথ্যচিত্রটির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বলেন, নয়জন বীরাঙ্গনার একান্ত আপন কথাগুলো তুলে আনার চেষ্টা করেছি। দিনের পর দিন তাদের সঙ্গে থেকেছি, গ্রামে গ্রামে, বাড়িতে, মাঠে ঘাটে ও কর্মক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে ঘুরেছি। নির্দিধায়, অতি আপন ভেবে আমাকে তাদের নির্যাতনের কথা বলেছেন, তাদের বীরত্ত্বগাঁথার গল্প শুনিয়েছেন। এগুলো আমার ফিল্মে তুলে ধরেছি। এটা কোন ইতিহাসবিদ নয়, গবেষণা নয়, তারা নিজের মত করে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। এতে মিউজিক একটি চরিত্র হিসেবে এসেছে। বীরাঙ্গনাদের অনেকেই গান করেন, তারা নিজের মতো করে গেয়েছেন। তিনি বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি কিন্তু বাবার কাছে এই যুদ্ধের বয়াবহতা সম্পর্কে শুনেছি। পরবর্তিতে বীরাঙ্গনাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছি। তাদের ব্যক্তিগত বিবরনী সংগ্রহ করে ‘বীরাঙ্গনা উইমেন অফ ওয়ার’ নামে একটি নাটক লিখেছি। এতে আমি অভিনয়ও করেছি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে এসে বীরাঙ্গনাদের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করি। এরপর নির্মান করি ‘রাইজিং সাইলেন্স’। নয়জন বীরাঙ্গনার পাঁজ জন মারা গেছেন। একে একে হারিয়ে যাবে এসব বীরাঙ্গনারা। কিন্তু তাদের মুখের ভাষা থেকে যাবে ভবিষ্যতের জন্য। এই কর্তব্যরোধ থেকে ডকুমেন্টারীটি নির্মানে আগ্রহী হয়েছি। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ‘রাইজিং সাইলেন্স’ ফিল্মের প্রমো দেখানো হয়। লিসা গাজী রচিত ‘তারা বাত্তি জ্বলে রে’ এবং ‘আবার আসিব ফিলে’ গানের সঙ্গে বীরাঙ্গনাদের কথা ও জীবনাচরণ ডকুমেন্টারীকে সমৃদ্ধ করেছে। এটি প্রযোজনা করেছে লন্ডনের কমোলা কালেকটিভ ওপেনভিযার এন্ড মেকিং হেরস্টোরি। সম্পাদনা তিজমেন ভেলধুইজেন, মিউজিক পরিচালনা সোহিনী আলম এন্ড ওলিভার উইকস্।
×