ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-অস্ট্রেলিয়া তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজ এখন ১-১

প্রকাশিত: ০২:০১, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯

ভারত-অস্ট্রেলিয়া তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজ এখন ১-১

অনলাইন ডেস্ক ॥ অ্যাডিলেডে ফিরলেন ‘ফিনিশার’ ধোনি। শেষ ওভারের প্রথম বলে যে ভাবে ছয় মারলেন তিনি, তাতে পুরনো ধোনিরই ছায়া। পরের বলেই সিঙ্গলস নিয়ে জেতালেন দলকে। ৫৪ বলে ৫৫ রানের ম্যাচ-জেতানো ইনিংস খেলে ফিরলেন ধোনি। যাতে থাকল দুটো ছয়। চার বল বাকি থাকতে ছয় উইকেটে জিতল ভারত। একইসঙ্গে সমতা ফিরল সিরিজে। তিন ম্যাচের সিরিজ এখন ১-১। মেলবোর্নে সিরিজের শেষ ম্যাচ শুক্রবার। ম্যাচের সেরা অবশ্য বিরাট কোহলি। সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে ভারতের দরকার ছিল ২৯৯ রান। যা এল ৪৯.২ ওভারে। সেই লক্ষ্যে দুরন্ত সেঞ্চুরিতে বিরাট কোহলিই টানলেন দলকে। শিখর ধাওয়ান (২৮ বলে ৩২), রোহিত শর্মা (৫২ বলে ৪৩) ও অম্বাতি রায়ডু (৩৬ বলে ২৪) ফিরে যাওয়ার পর ধোনির সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে যোগ করলেন ৮২ রান। কোহলির কেরিয়ারের ৩৯তম শতরান এল ১০৮ বলে। সিডনিতে প্রথম একদিনের ম্যাচে তিন রানে আউট হয়েছিলেন। এদিন কিন্তু বড় রানের লক্ষ্যে সঙ্কল্পবদ্ধ দেখাল তাঁকে। ‘চেজমাস্টার’ কোহলি শেষ পর্যন্ত থামলেন ১১২ বলে ১০৪ রান করে। তাঁর ইনিংসে থাকল পাঁচটা চার ও দুটো ছয়। তার আগে ওপেনিংয়ে ৭.৪ ওভারে ৪৭ রান যোগ করেছিলেন রোহিত-শিখর। তুলনায় বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন শিখর। সিডনিতে কোনও রান করেননি। এদিন আগাগোড়া আগ্রাসী দেখাল তাঁকে। দ্বিতীয় উইকেটে রোহিতের সঙ্গে কোহলি যোগ করলেন ৫৪ রান। ১০১ রানে পড়ল ভারতের দ্বিতীয় উইকেট। তৃতীয় উইকেটে রায়ডুর সঙ্গে কোহলি যোগ করলেন ৫৯ রান। তারপর জুটি বাঁধলেন কোহলি-ধোনি। কোহালি ফেরার পর অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে ৫৭ রান যোগ করলেন ধোনি ও দীনেশ কার্তিক। কার্তিক ১৪ বলে অপরাজিত থাকলেন ২৫ রানে। দারুণ ভাবে সঙ্গ দিলেন ধোনিকে। টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কেউ সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছতে পারেননি। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও হোম টিমের কেউ তিন অঙ্কের রানে পৌঁছননি। কিন্তু, মঙ্গলবার অ্যাডিলেডে সিরিজের দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে ১০৮ বলে শতরান পূর্ণ করলেন শন মার্শ। যা ৩৫ বছর বয়সীর ওযানডে কেরিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি। এই ইনিংসের সুবাদেই ভারতকে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল অস্ট্রেলিয়া। শন মার্শ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল একসময় যে ভাবে খেলছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল ৩২৫-৩০ তুলে ফেলবে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু। স্লগ ওভারে পরপর উইকেট হারানোয় তা হয়নি। তিনশোই পেরতে পারল না অজিরা। নয় উইকেটে ২৯৮ তুলল তারা। অর্থ্যাৎ, সিরিজে সমতা ফেরাতে ভারতের চাই ২৯৯ রান। সিডনিতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২৮৯ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে পারেনি বিরাট কোহালির দল। ফলে, প্রায় তিনশো রান তাড়া করা এদিন সহজ হওয়ার কথা নয়। অবশ্য ভারতের সামনে আরও বড় রান তাড়া করার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু ২৮৩ রানে অস্ট্রেলিয়ায় ষষ্ঠ উইকেট পড়ার পর নামে ধ্স। নবম উইকেট পড়ে ২৮৬ রানে। তিন রানের মধ্যে চার উইকেট হারায় অজিরা। ৩৭ বলে ৪৮ রানে প্রথমে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল। তার একবল পরেই ফেরেন মার্শ। ১২৩ বলে ১৩১ রানের ইনিংসে তিনি মারেন ১১ বাউন্ডারি ও তিনটি ছয়। দু’জনকেই ফেরান ভুবি। পরের ওভারে মোহাম্মদ শামির বলে আউট হন রিচার্ডসন (২)। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে ভুবি নেন পিটার সিডলকে (০)। নেথান লায়ন (১২ নট আউট) অস্ট্রেলিয়াকে তিনশোর কাছে নিয়ে আসেন। ভারতের সফলতম বোলার ভুবনেশ্বর কুমার। তিনি ৪৫ রান দিয়ে নিলেন চার উইকেট। সিডনিতে তাঁর বোলিং উদ্বেগ আমদানি করেছিল। এদিন অবশ্য পুরনো ছন্দে দেখা গেল তাঁকে। ৫৮ রান দিয়ে তিন উইকেট নিলেন মোহাম্মদ শামি। তবে অভিষেক মধুর হল না মোহাম্মদ সিরাজের। দশ ওভারে ৭৬ রান দিলেন তিনি। সকালে ফের টস হারলেন বিরাট কোহালি। এবং বাধ্য হলেন প্রথমে ফিল্ডিং করতে। সিডনিতে একদিনের সিরিজের প্রথম ম্যাচেও টস হেরেছিলেন ভারত অধিনায়ক। মঙ্গলবারও তাই হল। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। টস জিতলে তাই করতেন, জানিয়ে দিলেন কোহালিও। অ্যাডিলেডে এদিন মারাত্মক গরম। তাপমাত্রা চল্লিশের উপরে থাকার পূর্বাভাস ছিলও। সেই উত্তাপের মধ্যেই প্রথমে বল করতে হল ভারতকে। প্রথম এগারোয় এদিন একটা বদল করেছিল টিম ইন্ডিয়া। বাঁ-হাতি পেসার খলিল আহমেদের পরিবর্তে দলে এসেছিলেন ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক হল তাঁর। তবে নতুন বল তাঁকে দেওয়া হল না। ভুবনেশ্বর কুমারের সঙ্গে নতুন বলে আক্রমণ শুরু করলেন মহম্মদ শামি। দুই ওপেনারকে ২৬ রানের মধ্যে ফিরিয়ে দিয়েছিল ভারত। অধিনায়ক ফিঞ্চকে (৬) বোল্ড করেছিলেন ভুবনেশ্বর। আর শামির বাউন্সারে শিখর ধওয়নকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন অ্যালেক্স কারে (১৮)। এরপর তৃতীয় উইকেটে ৫৬ রান যোগ করেন উসমান খাজা ও শন মার্শ। রবীন্দ্র জাদেজার দুরন্ত ফিল্ডিংয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন খাজা (২১)। এরপর পিটার হ্যান্ডসকম্বের (২০) সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৫২ রান যোগ করেন শন মার্শ। জাদেজার বলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি স্টাম্পড করেন হ্যান্ডসকম্বকে। তারপর পঞ্চম উইকেটে মার্কাস স্টোইনিসের (২৯) সঙ্গে ৫৫ রান যোগ করেন তিনি। শামির বলে ধোনিকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্টোইনিস। তখন অস্ট্রেলিয়ার রান পাঁচ উইকেটে ১৮৯। তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজ এখন ১-১। অস্ট্রেলিয়া সিডনিতে প্রথম ম্যাচে ৩৪ রানে জিতেছিল। অ্যাডিলেডে এদিন সমতা ফেরাল ভারত। টেস্ট সিরিজ জেতার পর ওয়ানডে সিরিজও ভারত জিততে পারে কিনা, তা জানতে এ বার ক্রিকেটমহলের চোখ থাকবে শুক্রবারের মেলবোর্নে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×