ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

শেখ হাসিনার সঙ্গে তোশিমিতসুর সাক্ষাত

বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে জাপান

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯

বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে জাপান

সফররত জাপানের অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ বিষয়ক মন্ত্রী তোশিমিতসু মোটেগি বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশের প্রধান উন্নয়ন ক্ষেত্র, বিশেষ করে রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে জাপান বিনিয়োগে আগ্রহী।’ জাপানের মন্ত্রী তোশিমিতসু মোটেগি মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এসে এসব কথা বলেন। খবর বাসস’র। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তোশিমিতসু মোটেগি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই জাপান বাংলাদেশের মহান উন্নয়ন সহযোগী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যার গোড়া পত্তন করেছিলেন। জাপানের মন্ত্রী সাক্ষাতে সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। তিনি দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের চলমান মেয়াদে বাংলাদেশ এবং জাপানের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। জাপানের মন্ত্রীকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাপান বাংলাদেশের পুরনো বন্ধু হিসেবে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। জাপান বাংলাদেশের জন্য উন্নয়নের মডেল, বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানের অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং প্রতিটি গ্রামকে শহরের নাগরিক সুবিধা দিয়ে গড়ে তোলায় তার সরকারের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপও তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী আইটি পার্কগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তির প্রশিক্ষণ এবং গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের জন্য জাপানের সহযোগিতা জন্য প্রস্তাব করেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেবিকা নেয়ার জন্য জাপানের মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানালে জাপানের মন্ত্রী ও এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেন, জানান প্রেস সচিব। শেখ হাসিনা বৈঠকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তার সরকারের দৃঢ় অবস্থানের পুনরোল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ সন্ত্রাস এবং জঙ্গীবাদের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। জাপানের মন্ত্রী এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনকালীন তার অভিজ্ঞতা বিনিময়কালে বলেন, এই মহান নেতার বিভিন্ন স্মৃতি এবং তথ্যাদি দেখে তিনি হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। নেপালের রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাত ॥ নেপালের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ড. চোপ লাল ভূশাল এবং তার সহধর্মিণী মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে বিদায়ী সাক্ষাত করেছেন। ড. ভূশাল তার দায়িত্ব পালনকালে সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং তার সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাণিজ্যমন্ত্রীর সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বৈঠকে তারা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষ করে জলবিদ্যুত এবং যোগাযোগ খাতে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ বাংলাদেশে জলবিদ্যুত রফতানিতে আগ্রহী। তিনি বলেন, আসন্ন ব্যবসায়িক সম্মেলনে নেপাল থেকে বাংলাদেশের ৫শ’ মেগাওয়াট জলবিদ্যুত আমদানির বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। শেখ হাসিনা বৈঠকে নেপালকে বাংলাদেশের সৈয়দপুর বিমান বন্দর ব্যবহার করতে দেয়ার প্রস্তাব পুনরুত্থাপন করেন। কেননা এটি ইতোমধ্যেই আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে তৈরি করা হয়েছে এবং পূর্ব নেপাল থেকে আকাশ পথে বিমানবন্দরটির দূরত্ব মাত্র ২০ মিনিটের পথ। সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত এবং নেপাল এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নের লক্ষ্যে সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তিনি বিবিআইএন চুক্তির বাস্তবায়ন এবং বিদ্যমান ভিসা জটিলতা নিরসনের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। নেপালের রাষ্ট্রদূত এ সময় বাংলাদেশে অধ্যয়নরত প্রায় ৪ হাজার নেপালী শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষণস্থায়ী অনুমতির পরিবর্তে পূর্ণ মেয়াদের ভিসা প্রদানের অনুরোধ জানান। শেখ হাসিনাকে এই অঞ্চলের নেতা আখ্যায়িত করে নেপালের রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, তার দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বর্তমান সরকারের মেয়াদে আরও শক্তিশালী হবে।
×