ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লজ্জা থাকলে ফখরুলের পদত্যাগ করা উচিত ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

লজ্জা থাকলে ফখরুলের পদত্যাগ করা উচিত ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আন্দোলন ও নির্বাচনের ব্যর্থতার দায়ে লজ্জা থাকলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ট্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, টিআইবিকে বলব, গল্প সাজাচ্ছেন অলীক। অবিশ্বাস্য রূপকথার কাহিনী সাজাচ্ছেন যে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি। দেশের জনগণই একদিন আপনাদের এমন মিথ্যাচারের জবাব দেবে। বুধবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে ‘নির্বাচনে কারচুপির কারণে ওবায়দুল কাদেরকে জাতির সামনে ক্ষমা চাইতে হবে’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল হচ্ছেন বেপরোয়া গাড়ি চালক। কখন যে কোন এক্সিডেন্ট করে। সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। যে মহাসচিব ১০ বছরে ১০ মিনিটও আন্দোলন করতে পারেনি। নির্বাচনে ১০টিও আসন পায়নি। আন্দোলন ব্যর্থ, নির্বাচনেও ব্যর্থ লজ্জা থাকলে তাঁর (ফখরুল) পদত্যাগ করা উচিত। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ এ অভূতপূর্ব বিজয় যারা প্রত্যাখ্যান করছে তাদের জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। নির্বাচন স্বচ্ছ ও সুন্দর হয়েছে। নির্বাচনের দিন বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের কোনো এজেন্ট কি নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রতিবাদ করেছে? মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে! মির্জা সাহেব আপনি যে জিতলেন, কারচুপি হলে সেখানে আপনি কেমন করে জিতলেন, এটার জবাব দিন। টিআইবির প্রতিবেদনের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন টিআইবির কোন এজেন্ট কি নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিয়ে কথা বলেছে? নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হয়েছে। আপনাদের (টিআইবি) অথবা প্রতিপক্ষের একজন প্রতিনিধিও কি নির্বাচনের দিন যখন ভোট গ্রহণ শুরু হয় তখন একটি কেন্দ্রে চ্যালেঞ্জ করেছে? একজন এজেন্টও কি প্রতিবাদ করেছে? টিআইবির কোন প্রতিনিধি কি কেন্দ্র উপস্থিত থেকে প্রতিবাদ করেছে? স্বচ্ছতার বিরুদ্ধে কথা বলেছে? না বললে এতদিন পরে কেন? তখন বলেননি, তখন বলার কোন কারণ খুঁজে পাননি। তবে এত দিন পরে এই অলিক অবিশ্বাস্য রূপকথার কাহিনী কেন সাজাচ্ছেন আমরা তা জানি। এর রহস্য আমরা জানি। এর জবাব বাংলাদেশের জনগণই দেবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগকে অন্যদের ফলো করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যুবলীগ বক্তৃতার চেয়ে কাজে বেশি বিশ^াসী। আওয়ামী লীগের সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠন মিছিলসহ আসে। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ নতুনত্ব নিয়ে এসেছে। তারা বাংলাদেশের প্রতীক লাল-সবুজের সমারোহ ঘটায়। নেত্রীর জনসভাকে নান্দনিক রূপ দিয়ে থাকে। দক্ষিণের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুসংগঠিতভাবে মাঠে থাকে। নেত্রীর বক্তৃতা শেষ হলেই তারা মাঠ ছাড়ে। দক্ষিণের কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে। তাদের ফলো করুন। আগামী ১৯ জানুয়ারির সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যেক ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জনসভায় মিছিল নিয়ে আসে, আবার ট্রাকে করে চলেও যায়। যারা এই যাওয়া-আসার মধ্যে থাকেন, তাদের বলব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগকে ফলো করুন। নেত্রীর জনসভা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকুন। যারা শেখ হাসিনার কথা শেষ না করেই চলে যায়, তারা কোনভাবেই সাচ্চা কর্মী নয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী স¤্রাটের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজার পরিচালনায় অনুষ্ঠানের যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদসহ দক্ষিণের নেতারা বক্তৃতা করেন। সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, দলের নেতাকর্মীদের জানতে হবে শেখ হাসিনা এখন দলের উর্ধে চলে গেছেন। তিনি এখন জনগণের নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে গেলে শেখ হাসিনার চিন্তা, দর্শন উপলব্ধি করতে হবে। তিনি সবাইকে নিয়ে চলতে চান। আওয়ামী লীগকে বুঝতে হবে দেশের মালিক জনগণ, এটাই শেখ হাসিনার দর্শন। এজন্য তিনি দল দেখেন না, দেখেন জনস্বার্থ। তাই নেতাকর্মীদের বলি, কারো ওপর খবরদারি করবেন না। সাবধান হয়ে যান। সভাপতির ভাষণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী স¤্রাট নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া বিজয় উৎসবের অংশ হিসেবে আগামী ১৯ জানুয়ারি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়ছে। ওই জনসভায় রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনাকে জানান দিতে চাই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সত্যিকারের শক্তিশালী ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। আমরা লাল-সবুজ ফিতা, সবুজ ক্যাপ ও গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় দুপুরের আগেই জনসভাস্থলে প্রবেশ করব। রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনার বক্তৃতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে উপস্থিত থেকে সভাকে সাফল্যম-িত করব।
×