ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাখাইনে বৌদ্ধ সংগঠন আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সেনা অভিযান

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

রাখাইনে বৌদ্ধ সংগঠন আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সেনা অভিযান

মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ আবারও অশান্ত হয়েছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান চালিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হওয়ার পর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে রাখাইনের সশস্ত্র বৌদ্ধ সংগঠন আরাকান আর্মি বিরোধী অভিযান। এ অভিযান সফল করার লক্ষ্যে বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন কার্যক্রম এখনও চলছে সে দেশের সরকারের নির্দেশে। রাখাইনে সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানকার রোহিঙ্গারা রয়েছে সম্পূর্ণ অনিশ্চিত অবস্থায়। এর ফলে নতুন করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার শঙ্কায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যদের পাহারা জোরদার করা হয়েছে। ওপারের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার বুচিদং এলাকায় এক রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছে। নিহত রোহিঙ্গা বুচিদং টাউনশিপের ফুইমালি নামক গ্রামের আবুল কাসেমের পুত্র সৈয়দ আলম বলে জানা গেছে। তার লাশ মঙ্গলবার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ওপারের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নতুন বছরের শুরুতে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এর আগে চারটি সেনাপোস্টে আরাকান আর্মির সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারী নির্দেশে নতুন এ সেনা অভিযান শুরু হয়েছে। আরাকান আর্মির গুঁলিতে সে দেশের ১৩ সেনা প্রাণ হারায়। এরপরই সুচি সরকার আরাকান আর্মির আস্তানা গুড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সীমান্তের সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, রাখাইনে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে এক দশক আগে গঠিত হয়েছে আরাকান আর্মি। এ সংগঠনটির দাবি কেন্দ্রীয় সরকার তাদের শোষণ করছে। মূলত এর প্রতিবাদেই গঠিত হয়েছে আরাকান আর্মি, যারা বিভিন্ন সময় ধরে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে। রাখাইন রাজ্যে আবারও সেনা অভিযানের ঘটনায় ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের দুই কর্মকর্তার সফর স্থগিত করা হয়েছে। এদের একজন হচ্ছেন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি। অপরজন হলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি। এদিকে, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে আশ্রিত এলাকা টেকনাফ উখিয়ার মানুষ। উখিয়ার বালুখালি এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের কারণে প্রতিটি জিনিষের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। দুটি শীত মৌসুম পার হয়ে যাচ্ছে, অথচ এখনও শীতকালীন শাকসবজির দাম আকাশচুম্বী। শুনেছি উত্তরবঙ্গে দাম না পেয়ে চাষীরা ক্ষেতের টমেটো গরুকে খাওয়াচ্ছে। অথচ রোহিঙ্গা আসার কারণে এখানে এখনও টমেটোর কেজি ৪০ টাকা। মাছ-মাংস, তরিতরকারি এমনকি গাড়িভাড়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে। অতি সহসা আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার দাবি উঠেছে ওই জনপদে।
×