ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:৫০, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

দুর্নীতি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ ‘উন্নত সমৃদ্ধ’ দেশ হওয়ার পথে ১০ শতাংশ জিডিপি প্রবিৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে সরকারের বার্তা প্রশাসনের তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দুর্নীতির ‘প্রয়োজন’ যাতে না হয় সেজন্য সরকার বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন পরিবর্তন আনতে হবে মানসিকতায়; দুর্নীতি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাস-মাদক-জঙ্গিবাদের মতো দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। টানা তৃতীয় বার সরকার গঠনের পর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন কর্মসূচির অংশ হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। বিগত সরকারের সময়ের মতো মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি বাড়াতে এবং সৃজণশীলতার বিকাশে এবারও পর্যায়ক্রমে সবগুলো মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। জনপ্রশাসন দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে টানা তিনবার মিলিয়ে চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট একটি নির্দেশনা যেতে হবে- কেউ দুর্নীতি করলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। যে লক্ষ্য আমরা নিয়েছি তা আমরা পূরণ করতে পারবো; তার জন্য প্রয়োজন সুশাসন, তার জন্য দরকার দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা। আমরা বেতন-ভাতা, সুযোগ সুবিধা এতো বেশি বাড়িয়েছি-সে ক্ষেত্রে আমি তো মনে করি, আমাদের এ দুর্নীতির কোনো প্রয়োজনই নেই। যা প্রয়োজন তার সব তো আমরা মেটাচ্ছি তাহলে দুর্নীতি কেন হবে? কাজেই এখানে মানুষের মন মানসিকতাটাকে পরিবর্তন করতে হবে’। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সততা-আন্তরিকতা নিয়ে জনসেবা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপরিচালনার হার্ট জনপ্রশাসন। আপনাদের সেভাবে কাজ করতে হবে, আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করবেন’। জনপ্রশাসনে পদোন্নতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর প্রশাসনসহ সবক্ষেত্রে শুধুমাত্র জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয় এখানে দক্ষতাকে প্রাধান্য দিতে হবে। কে কতো বেশি কাজ করতে পারে, সততার সঙ্গে কাজ করতে পারবে এবং নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলবে, সব কিছু বিবেচনা করে প্রমোশন হওয়া উচিত’। যে যেই বিষয়ে অভিজ্ঞ তাকে সেই বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘পদ ফাঁকা পেলেই পদায়ন নয়, যার যে বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ রয়েছে তাকে সেই জায়গায় পদায়ন করার বিষয়টাও নজরে রাখতে হবে’। স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, সর্বক্ষেত্রে ডিজিটাল সুবিধা ব্যবহার করার মাধ্যমে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত হতে পারে’। তিনি বলেন, ‘একটা সময় বাংলাদেশে দরপত্র বাক্স ছিনতাই হতো। যখনই আমরা ই-টেন্ডারে চলে গেলাম। এখন আর টেন্ডার বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা শোনা যায় না। আমি মনে করি, এভাবেই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা অনেকটা নিশ্চিত করা যায়। আমরা সেটাও করবো’। আগামী পাঁচ বছরে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ ধরা হলেও এটা ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে, প্রবৃদ্ধি এ পাঁচ বছরের মধ্যে যেন ১০ ভাগে তুলতে পারি’। প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির সঙ্গে নিম্ন মূল্যস্ফীতি রাখতে পারার সফলতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উচ্চ প্রবৃদ্ধি আর নিম্ন মূল্যস্ফীতি-এর সুফলটা কিন্তু একেবারে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায়। মানুষ এর সুফলটা ভোগ করে। আমাদের উন্নয়নের সব থেকে বড় সুফলটা হচ্ছে এটাই। কারণ অনেক দেশ অনেক দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করে কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তাদের মূল্যস্ফীতিও অনেক বেড়ে যায়। সেখানে আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি’। অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন- জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফয়েজ আহম্মদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন-প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ।
×