ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ডাকসুর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে ছাত্রলীগের সমাবেশ

প্রকাশিত: ০১:৫৬, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

ডাকসুর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে ছাত্রলীগের সমাবেশ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে এবার মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে গণরুম, সান্ধ্যকালীন কোর্সসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা নিয়েও তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন । ‘স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ বিনির্মাণের দাবিতে বুধবার বিকেলে মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল নিয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন। এসময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা ও হল শাখা ছাত্রলীগের সহস্রাধিক নেতাকর্মী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ ‘স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের’ জন্য বেশ কিছু দাবি তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। সেগুলো হলো: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার রুপরেখা প্রণয়ন, প্রশাসনিক-একাডেমিক-পরীক্ষা-ভর্তি সংক্রান্ত কাজ অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা, বিশ্বের সর্বাধুনিক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ, ক্যাম্পাসে গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণ ও রিক্সাভাড়া নির্ধারণ, গবেষণাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রদান, সান্ধ্যকালীন কোর্স' নিয়ে বিচার বিশ্লেষণের জন্য 'শিক্ষা কমিশন' গঠনের মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি ও বাস্তবায়ন, ক্যান্টিনে খাবারের মান যথোপযুক্ত করা, অযৌক্তিকভাবে সকল হল ও বিভাগের পরীক্ষার বর্ধিত ফি প্রত্যাহার, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য রুট বৃদ্ধি ও পর্যাপ্ত পরিবহনের মাধ্যমে যাতায়াত সমস্যার স্থায়ী সমাধান, ১ম বর্ষের সকল শিক্ষার্থীর জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে বর্ণাঢ্য নবীনবরণ প্রদান, আবাসন সংকট নিরসনের জন্য আপৎকালীন সমাধানের জন্য কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ, মুক্তিযুদ্বের জীবন্ত আর্কাইভ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ অধ্যয়ন ইনস্টিটিউট নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণে আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি গ্রহণ ও শেখ হাসিনা গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, বাংলাদেশ দিনদিন নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যাচ্ছে। ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা সম্ভব। দীর্ঘ ২৮ বছর পর হাইকোর্টের নির্দেশে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা চলছে। আমরা সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন এ বিষয়ে আন্তরিক। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, আমরা অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন চাই । যেন অতিদ্রুত তফসিল ঘোষণা করা হয়। কেননা, সাধারণ ছাত্রদের কথা কারা বলবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের ভালবাসায় নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সিন্ডিকেটে গিয়ে তাদের কথা বলুক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিৎ চন্দ্র দাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার প্রত্যাশা নিয়ে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি হান্ড্রেড পারসেন্ট আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ছাত্ররা যাতে রাজনৈতিক চর্চা করতে পারে তাই প্রশাসনকে অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দিতে অনুরোধ করছি। হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তার প্রতি আমরা সাধারণ ছাত্ররা অবশ্যই শ্রদ্ধাশীল। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য অবশ্যই ডাকসু নির্বাচন চাই। সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ছাত্ররা ২৮ বছর ডাকসুর জন্য অপেক্ষা করেছে, আর ২৮ দিনও তারা অপেক্ষা করবে না। অবিলম্বেই ডাকসুর তফসিল ঘোষণা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে চলমান সান্ধ্যকালীন বাণিজ্যিক কোর্স অনতিবিলম্বে বন্ধের দাবি জানান তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় টাকা গড়ার কোনো কারখানা নয়, এই বিশ্ববিদ্যালয় স্বল্পকালীন শিক্ষাদানের কোনো ট্রেনিং সেন্টার নয়। সান্ধ্যকালীন কোর্সের নামে শিক্ষকরা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকবেন আর শিক্ষার্থীরা মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে এসে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে এই বিষয়টি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কোন অবস্থাতেই মেনে নেবে না। তিনি আরো বলেন, প্রায় সাত হাজার নবীন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও তাদের কোনো দায়িত্ব নেয়নি। প্রশাসনকে বলতে চাই, আবাসন সংকটের উপর ভিত্তি করে, সিট দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ রাজনীতি করতে চায় না। আমাদের রাজনীতি করতে গণরুমের দরকার নেই, হৃদয়ের ভালবাসা দিয়ে আমরা রাজনীতি করতে চাই।
×