ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তিন গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

শিক্ষক ও ব্যবসায়ীসহ ছয় খুন

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ১৮ জানুয়ারি ২০১৯

শিক্ষক ও ব্যবসায়ীসহ ছয় খুন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ নওগাঁয় কলেজ শিক্ষক, জামালপুরে ব্যবসায়ী, সান্তাহারে অটোচালক, ধামরাইয়ে কাঠমিস্ত্রি, সিলেটে ফুফাত ভাই, ফরিদপুরে গৃহবধূ খুন হয়েছেন। শাহজাদপুর, ঈশ্বরদী ও কচুয়ায় তিন গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। নওগাঁ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ধামইরহাটে এক কলেজ শিক্ষকের হাত-পা বাঁধা পানিতে ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত কলেজ শিক্ষক হলেন স্থানীয় জগদল আদিবাসী স্কুল ও কলেজের বিএম শাখার বাংলার বিভাগের প্রভাষক এম এম জামাল উদ্দিন (৪৭)। জানা গেছে, এদিন ধামইরহাট বাজারের পূর্ব পাশে ঘুসকি ব্রিজের উত্তর পাশে বড় চকগোপাল মৌজার ঘুকসী নদীতে এক লাশ ভাসতে থাকে। ঘটনাটি জানাজানি হলে হাজার উৎসুক জনতা লাশ দেখার জন্য ঘুসকি নদীর দুই পাশে ভিড় জমায়। লাশের দুই হাত-পা এবং কোমর রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। পানিতে লাশটি উপুড় হয়ে ভাসতে থাকায় তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করলে উপস্থিত জনতা সেটি এম এম জামাল উদ্দিনের লাশ বলে শনাক্ত করেন। তিনি উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত সাহাপুর গ্রামের মরহুম কায়েম উদ্দিনের ছেলে। তিনি ১ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক ছিলেন। জামালপুর মেলান্দহ উপজেলায় নবা ম-ল (৩৭) নামের একজন গরু ব্যবসায়ীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাতে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার দুরমুঠ ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামে ধান ক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত নবা ম-ল ওই ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামের হাফেজ উদ্দিনের ছেলে। পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, আমবাড়িয়া গ্রামের প্রতিবেশী মোফাজ্জল হোসেন বুধবার রাত ১০টার দিকে গরু ব্যবসায়ী নবা ম-লকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। রাতে বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনরা বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে বাড়ির কাছে ধান ক্ষেতে নবা ম-লের লাশ দেখতে পান। তার গলায় ও দুই পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল এবং মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের জখমের চিহ্ন রয়েছে। সান্তাহার বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়ার সান্তাহারে মারুফ হোসেন (২২) নামে এক অটো চার্জার চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, স্থানীয় লোকজন সান্তাহারের ছাতনী বাজার এলাকার অদূরে মৃধাপাড়ায় রাস্তার পাশে মারুফের মরদেহ দেখতে পায়। নিহত মারুফ হোসেন নওগাঁ সদর উপজেলার কোমাইগাড়ী সাকিদারপাড়ার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। এ বিষয়ে আদমদীঘি থানার (তদন্ত) ওসি আবদুর রাজ্জাক জানান, মারুফ বুধবার দুুপুরে বাড়ি থেকে অটো চার্জার গাড়ি নিয়ে বের হয়ে সে আর বাড়িতে ফিরেনি। বৃহস্পতিবার সকালে সান্তাহার-নাটোর বাইপাস সড়কের ছাতনী বাজারের মৃধাপাড়া নামক স্থানে গলায় ফাঁস লাগানো মরদেহটি জঙ্গলের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সাভার অপহরণের ৫ দিন পরে ধামরাইয়ে এক কাঠমিস্ত্রির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ধামরাইয়ের চড়সঙ্গুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা গেছে, ১৩ জানুয়ারি ধামরাইয়ের চড় বড়দাইল এলাকার এলাকার কাঠমিস্ত্রি জোতিষ মজুমদার (৪৫) সাভারে নামাবাজারে সদাই কিনতে এসে অপহরণ হন। পরে অপহরণকারীরা তার পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনে ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় অপহৃতের পরিবারের সদস্যরা মোবাইল ফোনে ৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিলে অপহরণকারীরা সাভারের নামাবাজারের একটি বিকাশের দোকান থেকে টাকা উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে অপহৃতের পরিবারের সদস্যরা সাভার মডেল থানায় অপহরণের একটি লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বুধবার রাতে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থানার ঘাষেরচড় গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে অপহরণের মূল হোতা লাল মিয়ার ছেলে রংমিস্ত্রি মোহাম্মদ হালিমকে (৩৫) আটক করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যানুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে ধামরাইয়ের চড়সঙ্গুর এলাকার নদীর পাড়ের গর্ত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ধামরাই থানা পুলিশ। সিলেট কোম্পানিগঞ্জে পারিবারিক কলহের জের ধরে মামাত ভাইয়ের হাতে ফুফাত ভাই খুন হয়েছে। নিহত আফতাব মিয়া (৩৫) কোম্পানিগঞ্জের চিকাডহর এলাকার জব্বার মিয়ার পুত্র। জানা যায়, আফতাব মিয়া ও ইকবাল পরস্পরের মামাত-ফুফাত ভাই। তাদের মধ্যে আগে থেকেই পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ইকবাল মিয়া জোরপূর্বক আফতাব মিয়ার বাড়িতে মাটি ভরাট করতে যায়। এ সময় আফতাব মিয়া বাধা প্রদান করলে দেশীয় অস্ত্রদ্বারা আফতাব তাকে আঘাত করে। ঘটনাস্থলে আফতাবের মৃত্যু ঘটে। ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ইউসুফদিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার ভোরে স্ত্রীকে হত্যার পর তার বাবার বাড়ি ফেলে রেখে গেলেন ঘাতক স্বামী। নিহত ওই নারীর নাম নাসিমা বেগম (৩০)। সে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ইউসুফদিয়া গ্রামের সজল সরদারের মেয়ে। আর ঘাতক স্বামীর নাম রাসেল মাতুব্বর। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের মহারাজপুর এলাকায়। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে ওই পরিবার থেকে ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নাসিমা বেগম নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ আরও জানায়, পরিবার থেকে জানতে পেরেছি তার স্বামী ভোরে তাকে মেরে মেয়েটির নিজ বাড়িতে ফেলে রেখে চলে যায়। ঘর থেকে বাইরে নাসিমার আওয়াজ শুনে তার মা আসিরুন বেগম বাইরে বের হলে উঠানে মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীদের খবর দেয়। এর ভেতর নাসিমা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। শাহজাদপুর শাহজাদপুরে গৃহবধূর লাশ ফেলে পালিয়ে গেলেন স্বামীর পরিবার। জানা গেছে, পৌর এলাকার কান্দাপাড়া মহল্লার জামাত আলীর পুত্র রাজুর তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ইতি খাতুনকে (২০) বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পোতাজিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার রোকসানা হ্যাপী গৃহবধূ ইতিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর শুনেই স্বামীসহ পরিবারের লোকজন ইতির বাবা শুকুর আলীকে ফোন দিয়ে বলে আপনার মেয়ে অসুস্থ তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি । এই বলেই ইতির লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এদিকে এ খবর শোনামাত্র ইতির বাবা শুকুর আলী হাসপাতালে এসে দেখে তার মেয়ের লাশ পড়ে আছে অথচ স্বামীর বাড়ির কেউ সেখানে নেই। ঈশ্বরদী ঈশ^রদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়েছে প্রবাসী স্বামী। পাঁচ বছরের পুত্র সন্তানের জননী গৃহবধূর নাম রেবেকা শাহিন রত্না (৩২)। সে শহরের রহিমপুর খলিলের মোড় এলাকার মৃত আবদুস সামাদ মজনুর মেয়ে ও প্রবাসী আবদুল কুদ্দুসের স্ত্রী। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় স্বামীর ওপর অভিমান করে শোবার ঘরের আঁড়ের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই গৃহবধূ। পারিবারিক সূত্র জানায়, স্বামী আবদুল কুদ্দুস সৌদি প্রবাসী। দীর্ঘদিন পর গত কয়েকদিন আগেই দেশে ফিরেছেন। বুধবার বিকেলে শিশু সন্তান রুম্মানকে অজ্ঞাত কারণে মা রত্না চড়-থাপ্পড় মারেন। এ কারণে স্বামী কুদ্দুস স্ত্রীকে মারধর করেন। এতে স্বামীর ওপর অভিমান করে আঁড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস নেয় রত্না । সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কচুয়া কচুয়ায় শান্তা আক্তার (২১) নামে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্বার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামে প্রবাসী রুবেল হোসেনের বসতঘরে তার মা দেলোয়ারা বেগম শান্তা আক্তারকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে ডাকচিৎকার দেয়। সংবাদ পেয়ে কচুয়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত শান্তা আক্তারের মা খোদেজা বেগমের অভিযোগ শান্তা আক্তারকে তার ননদের স্বামী একই গ্রামের কেরামত হোসেন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখে।
×