ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবার ঢাকার ফুটপাথ সবুজায়ন

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯

এবার ঢাকার ফুটপাথ সবুজায়ন

মশিউর রহমান খান ॥ সবুজের ছোঁয়ার মাঝেই নাগরিকদের হাঁটার পথ তৈরি করতে এই প্রথমবারের মতো ফুটপাথেই সবুজায়ন করতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। প্রাথমিকভাবে নগরীর বড় বড় রাস্তার একপাশে বাধ্যতামূলক সবুজায়ন করতে যাচ্ছে নাগরিকদের সেবাদানকারী সংস্থাটি। প্রাথমিক প্রকল্প হিসেবে মিরপুর ১৪ নং এলাকার রজনীগন্ধা মার্কেটের সামনে থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত এলাকায় ফুটপাথের পাশেই সবুজ ফুলের ও পাতাবাহার গাছ লাগাবে সংস্থাটি। এসব গাছে নিয়মিত পানি দিয়ে পরিচর্যাও করবে সংস্থার নির্দিষ্ট লোকজন। রাস্তায় মিডিয়ানের পর এই প্রথমবারের মতো উন্নত বিশ্বের ন্যায় ফুটপাথেও সবুজের ছোঁয়া পেতে ও পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে এই কর্মসূচী নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ পর্যন্ত দেশের কোন এলাকার সিটি কর্পোরেশনের ফুটপাথে সবুজায়ন করা হয়নি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে ফুটপাথের পুরো চেহারাই পাল্টে যাবে। সংস্থাটি তার সীমানায় অধিক পরিমাণ গাছ লাগানোর অংশ হিসেবে পাইলট প্রকল্পে এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন করা গেলে পর্যায়ক্রমে পুরো ডিএনসিসির সকল রাস্তার পাশের ফুটপাথে সবুজ বেল্ট গড়ে তোলা হবে। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুর এলাকার মধ্যে মিরপুর ১৪ থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত রাস্তাটির দু’পাশের ফুটপাথের প্রায় সব অংশই ভাঙ্গা। এসব ফুটপাথ নির্মাণ করে মডেল সবুজায়ন করতেই প্রাথমিকভাবে এই রাস্তাকে সবুজায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্প সূত্র জানায়, বড় বড় রাস্তার বাইরেও যেসব এলাকার গলিপথের মধ্যে বড় আকারের স্থান রয়েছে সেসব স্থানেও ফুটপাথ তৈরি করে সবুজায়ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। ডিএনসিসি ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অতিদ্রুতই বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনাপূর্বক প্রকল্পটির অর্থায়ন নিশ্চিত করে সঙ্গে সঙ্গেই কাজ শুরু করা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা সিটিতে এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় সবুজের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। বর্তমানে রাজধানীর ডিএনসিসির বড় বড় রাস্তার মাঝে ডিভাইডারের মধ্যে সবুজায়ন করার অংশ হিসেবে ছোট ছোট গাছ লাগানো রয়েছে। তবে নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধিকল্পে আমরা সকল স্থানেই সবুজায়নকে ছড়িয়ে দিতে চাই। এরই অংশ হিসেবে উন্নত বিশ্বের ন্যায় রাস্তার ফুটপাথের একটি অংশে নির্দিষ্টস্থানে সবুজায়ন করতে একটি উদ্যোগ আমরা হাতে নিয়েছি। ভারপ্রাপ্ত মেয়র জামাল মোস্তফা বলেন, এর মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটির মিরপুর ১৪ নং এলাকার রজনীগন্ধা মার্কেট থেকে মিরপুর কচুক্ষেত পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারের ফুটপাথে এই সবুজায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পাইলট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে আনুমানিক ২৫ কোটি টাকা। প্রাথমিকভাবে এই এলাকার রাস্তার দ’ুধারের ফুটপাথ নির্মাণ বা সংস্কার করার পর ফুটপাথের একটি সাইডে বিভিন্ন ফুলের ও পাতাবাহারের গাছ লাগানো হবে। সবুজের ছোঁয়ায় নাগরিকদের পথচলা নিশ্চিত করতেই আমরা উন্নত বিশ্বের ন্যায় রাজধানীতেই নাগরিকদের চলাচলে স্বাচ্ছন্দ্য আনতেই এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে পরবর্তীতে ডিএনসিসির বড় বড় রাস্তায়ই ফুটপাথে পরিবেশ রক্ষায় বাধ্যতামূলকভাবে সব ফুটপাথেই এই পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সবুজায়ন ঠিক রাখতে সিটি কর্পোরেশন থেকে নিয়মিত পরিচর্যাও করা হবে। থাকবে নির্দিষ্ট পরিচর্যাকারী। মূলত রাজধানীকে সবুজে ছেয়ে দিতেই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করা অতি জরুরী। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ডিএনসিসির এক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। অতিদ্রুতই প্রকল্পটি কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেজন্য প্রাথমিকভাবে ওই রাস্তাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। অতিদ্রুত অর্থায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এর পর পরই আশা করি আমরা দ্রুতই প্রকল্প কাজ শুরু করব। ঢাকা উত্তর সিটিকে পরিপূর্ণভাবে সবুজায়নের জন্য তিনি নগরের সকলস্তরের নাগরিক ও চলাচলকারীদের সহায়তা কামনা করেন।
×