ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯

 রাজশাহীতে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ এবার রাজশাহীতে আলোরমুখ দেখতে যাচ্ছে প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার। রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে দুই দশমিক তিন শূন্য একর জায়গাজুড়ে মাথা তুলছে এটি। নভোথিয়েটার ভবন নির্মাণ শেষ হবে বছর দেড়েকের মধ্যেই। ইতোমধ্যে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়ে গেছে। ফলে নভোথিয়েটার নিয়ে আশা জাগিয়েছে বিভাগীয় শহর রাজশাহীবাসীর মনে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই নভোথিয়েটারে আধুনিক প্রযুক্তির ডিজিটাল প্রজেক্টর সিস্টেমযুক্ত প্ল্যানেটরিয়াম, সায়েন্টিফিক এ্যান্ড ডিজিটাল এক্সিবিটস, ফাইভ-ডি সিমিউলেটর থিয়েটার, টেলিস্কোপ, কম্পিউটারাইজড টিকেটিং এ্যান্ড ডেকোরেটিং সিস্টেমসহ নানা সুবিধা থাকবে। ভবন নির্মাণ শেষ হলে দ্রুত অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজন হবে নভোথিয়েটারে। ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) তৎকালীন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীতে নভোথিয়েটার স্থাপনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেন। মূলত এরপর থেকেই শুরু নভোথিয়েটারের স্বপ্নযাত্রা। রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, ২২২ কোটি তিন লাখ টাকা ব্যয় ধরে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, রাজশাহী স্থাপন’ প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল রাসিক। এটি বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল ২০১৫-২০১৮। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি এখন বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদফতর। তিনি আরও জানান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিশেষত মহাকাশ সম্পর্কিত জ্ঞান সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করা, বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট কুসংস্কার দূর করতে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনাও রয়েছে। বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক নাগরিক তৈরিতে বিজ্ঞানের সুযোগ-সুবিধা রাজধানীর বাইরে ছড়িয়ে দেয়াই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। জানা গেছে, প্রকল্পটি ২০১৫ সালের আগস্টে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় অনুমোদন পায়। ওই বছরের ডিসেম্বরে যায় একনেকে। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদন হয় এই প্রকল্প। প্রথমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সময়কাল ধরা হয়েছিল ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। একনেক সভায় সময়সীমা ৬ মাস বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এটির নক্সা দেখানো হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তা রাজশাহী গণপূর্ত অধিদফরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অমিত কুমার দেব বলেন, ২২২ কোটি ৩ লাখ টাকার মধ্যে কেবল অবকাঠামো নির্মাণেই ব্যয় হচ্ছে ৮০ কোটি ১০ লাখ টাকা। রাজধানী ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিডেট এই কাজ বাস্তবায়ন করছে। তিনি আরও বলেন, গত বছরের ২২ অক্টোবর শুরু হয়েছে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ। নির্ধারিত স্থানটিতে বড় বড় গাছসহ চিড়িয়াখানার বেশ কিছু প্রাণির খাঁচা ছিল। এগুলো সরিয়ে জমি বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হয়েছে। ফলে প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে বিলম্বে। এদিকে সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নভোথিয়েটারের চারতলা ভিত বিশিষ্ট অফিস ব্লকের নির্মাণ কাজ চলছে। ৭ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের এই অংশের ভিত পড়েছে কেবল। মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সারি সারি পিলার। চলছে মাটি ভরাট। এই অংশের ভরাট কাজ শেষ হলেই ৩৯ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের প্লানেটরিয়াম ব্লকের নির্মাণ কাজ শুরু করবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, এটি রাজশাহীবাসীর জন্য স্বপ্নের একটি প্রকল্প। রাজশাহীতে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গেছে। এরমধ্যে নভোথিয়েটার নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
×