ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগেরই পরাজয় হয়েছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯

 ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগেরই পরাজয় হয়েছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ ১৯ জানুয়ারি সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম জিয়াউর রহমানের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির পতাকা উত্তোলন এবং সকাল ১০টায় জিয়াউর রহমানের মাজারে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পমাল্য অর্পণ করবেন। এ ছাড়াও জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে সুপ্রীমকোর্ট বার অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা আয়োজন করে বিএনপি। এতে সভাপতির বক্তব্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি নয়, নৈতিকভাবে আওয়ামী লীগেরই পরাজয় হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন একটি কাজে দিয়েছে, আর তা হচ্ছে আওয়ামী লীগ চিরদিনের জন্য জনগণের মন থেকে দূরে সরে গেছে। পরাজয় আমাদের হয়নি, পরাজয় হয়েছে আওয়ামী লীগের, নৈতিকভাবে তাদের পরাজয় হয়েছে। আওয়ামী লীগ সেই দল যারা শুধু ক্ষমতায় থাকতে চায় ছাড়তে চায় না। সংবিধান এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে তারা ব্যবহার করছে নিজেদের স্বার্থে। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হতাশার কোন জায়গা নেই, হতাশীরা জিয়াউর রহমানের অনুসারী হতে পারে না। আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন। তিনি বলেন, দেশে উন্নয়নের প্রথম ভিত্তি স্থাপন করেছেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তাঁর আদর্শকে ধারণ করে এগিয়ে গেলে বিএনপিকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে চিরদিনের জন্য দূরে ঠেলে দিয়েছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, পরাজয় মনে করলেই পরাজয়। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। দেশের মানুষকে একত্রিত হয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। গ্রেফতার হওয়া আমাদের ভাইদেরকে মুক্ত করতে হবে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে আলোতে উঠে আসতে হবে। এজন্য এগিয়ে আসতে হবে যুবকদের। এই দেশটা আপনাদের, আপনাদেরই রক্ষা করতে হবে। আমাদের যেসব ভাইয়েরা পঙ্গু, ক্ষতিগ্রস্ত ও কারারুদ্ধ তাদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে। এই শপথ নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হলে দল পুনর্গঠন করতে হবে। যারা প্রার্থী ছিলেন নিজ নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের মামলা থেকে পরিত্রাণ করা ও জেল থেকে মুক্ত করতে হবে। যেসব এলাকায় আমাদের প্রার্থী ছিল না সেখানে দলের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করতে হবে। তিনি বলেন, ভোট ডাকাতির নির্বাচন সারাবিশ্ব দেখেছে। এ সরকার নির্বাচনকে কলঙ্কিত করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের এলাকা ছাড়া করে দিয়েছে সরকার। এখন আমাদের দু’টি কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো পুনর্বাসন আর অপরটি পুনর্গঠন। এখন ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার লাখ লাখ নেতাকর্মীকে পুনর্বাসন করতে হবে। আর দলের ত্যাগীদের সামনে এনে দলকে পুনর্গঠন করতে হবে। ৩০ ডিসেম্বর একটি নীল নক্সার ওপরে ভিত্তি করে নির্বাচন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা কখনই আমাদের সংবিধানসম্মত নির্বাচন হয়নি। ৯৭ শতাংশ আসন মহাজোট পেয়েছে। আপনারা যদি নিউইয়র্ক টাইমস পড়েন, ওয়াশিংটন পোস্ট পড়েন, গার্ডিয়ান পড়েন, লন্ডনের অবজারভার পড়েন সারা দুনিয়ার কেউ বিশ্বাস করে না অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, আবদুল মান্নান, ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর, ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন, এ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, আতাউর রহমান ঢালী প্রমুখ।
×