ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জঙ্গী ও মাদক দমনে সিএমপির ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯

 জঙ্গী ও মাদক দমনে  সিএমপির  ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দেশে অপরাধ নির্মূলে পুলিশ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে। সন্ত্রাসী দমনে এবার মসজিদভিত্তিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে অপরাধ বন্ধের কার্যক্রম শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে। এ চেষ্টায় সিএমপি কমিশনার থেকে শুরু করে বাকপটু পুলিশ কর্মকর্তা মসজিদে মসজিদে গিয়ে মাইক্রোফোন হাতে তুলে নিচ্ছে। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও মাদকের মতো অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সচেতন করে পরিবারে শান্তি বিরাজ করাই সিএমপির লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। সিএমপির বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, আইনের প্রয়োগে সবকিছুর সমাধান সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন সমাজ সচেতনতা। মানুষ যেহেতু সামাজিক জীব আর সমাজেই মানুষের বসবাস। মানুষ অপরাধের সঙ্গে জড়ালেই সমাজের বাইরে কাজ শুরু করে। কিন্তু সমাজ সচেতন ব্যক্তিরাই এ ধরনের অপরাধীদের আবারও আলোর পথে টেনে নিয়ে আসতে পারেন এমন ধারণা পুলিশ কর্মকর্তাদের। মূলত ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার পর থেকে এদেশে জঙ্গীরা একের পর এক হামলার মাধ্যমে নিজেদের জাহির করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। দেশব্যাপী এ হামলার পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ। শুরু হয় জঙ্গীবিরোধী অভিযান কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার তৎপর হয় জঙ্গী নির্মূলে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার কারণে ৬টি সংগঠনের নিবন্ধন ও কার্যক্রম বাতিল করা হয়। কিন্তু সমূলে ধ্বংস করা যায়নি এসব সংগঠনের জঙ্গী সদস্যদের। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জঙ্গীরা তাদের নেটওয়ার্ক অব্যাহত রেখে এখনও তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নামে বেনামে এসব জঙ্গী সংগঠন নিজেদের প্রচার চালাতে তৎপর রয়েছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে হ্যান্ডবিল, লিফলেটসহ রাতের আঁধারে পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়ে তাদের অবস্থান চাঙ্গা করার অপপ্রয়াস চালিয়ে আসছে। জঙ্গীদের এ ধরনের অপচেষ্টা ও জঙ্গী নির্মূলে পুলিশী তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। সর্বশেষ, কয়েক মাস আগে সিএমপির নতুন কমিশনার মাহাবুবর রহমান যোগদানের পর থেকে জঙ্গী, সন্ত্রাস ও মাদকের ছোবল থেকে সকলকে দূরে রাখতে মসজিদভিত্তিক সচেতনতা সৃষ্টির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের খুৎবার আগে মসজিদে মসজিদে সিএমপির বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে জঙ্গী, সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী বক্তব্য দেবেন। এতে মসজিদে উপস্থিত তরুণ সমাজ যেমন অপরাধ থেকে দূরে থাকতে সচেতন হবে তেমনি সচেতন হবেন আগত মুসল্লি অভিভাবকরাও। সিএমপির মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, সিএমপি কমিশনার থেকে শুরু করে ডিসি, এডিসি থেকে শুরু করে ১৬ থানার ওসিদেরকেও এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে গত দুমাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতি জুমার নামাজের আগে খুৎবার সময় মুসুল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য প্রদান করছেন সিএমপির বিভিন্ন কর্মকর্তারা। বক্তব্যের মূল কথা হলো, জঙ্গীবাদমুক্ত সমাজ গড়তে হবে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সকলকে সচেতন হতে হবে। যারা মাদকের সঙ্গে জড়িত রয়েছে তাদেরকে সচেতনতা বৃদ্ধি করে স্বাভাবিক জীবনে আনয়ন করা গেলেই অপরাধ থেকে দূরে সরানো যাবে।
×