ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিব নৈপুণ্যে জয়ে ফিরল ঢাকা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯

সাকিব নৈপুণ্যে জয়ে ফিরল ঢাকা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ইনজুরি সমস্যা থাকায় ডেভিড ওয়ার্নারের খেলা নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা। তবে শুক্রবার সিলেট সিক্সার্সকে শুধু নেতৃত্বই দেননি ব্যাট হাতে খেলেছেন ৪৩ বলে ৬৩ রানের দারুণ এক ইনিংস। এরপরও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে ৬ উইকেট পরাজিত হয়েছে তারা। আগের ম্যাচে হেরে যাওয়া ঢাকা আবারও জয়ে ফেরার পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বল হাতে দুই উইকেট নেয়ার পাশাপাশি চলতি আসরে প্রথম অর্ধশতক পাওয়া এ অলরাউন্ডার ৪১ বলে ৬১ রানে ছিলেন অপরাজিত। ফলে গত ম্যাচে জয়ে ফেরা সিলেট ষষ্ঠ ম্যাচে দেখেছে চতুর্থ হার। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে তারা ৮ উইকেটে ১৫৮ রান তুলেছিল। জবাবে ৩ ওভার হাতে রেখে ১৭ ওভারেই ৪ উইকেটে ১৬৩ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় ঢাকা। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেট দারুণ শুরু পেয়েছিল। গত ম্যাচে ফর্মে ফেরা ওপেনার লিটন দাস এদিনও দারুণ ব্যাট চালিয়েছেন। কিন্তু ১৪ বলে ৪ চার, ১ ছয়ে ২৭ রান করার পর তাকে থামিয়েছেন সাকিব এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে। পরের ওভারেই দেখেশুনে খেলতে থাকা ওপেনার হয়ে ওঠা সাব্বির রহমান ১৬ বলে ১১ রান করার পর সাজঘরে ফেরেন আন্দ্রে রাসেলের বলে। দ্রুত দুটি উইকেট হারালেও আফিফ হোসেন ধ্রুবর সঙ্গে চার নম্বরে নামা ওয়ার্নার দারুণভাবে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। ৪০ রানের জুটিটা থেমে যায় এ্যান্ড্রু বার্চের বলে উইকেটের পেছনে আফিফ ক্যাচ দিলে। ১৭ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ১৯ রান করেছিলেন এ তরুণ। তবে ওয়ার্নার দ্রুতবেগে রান তুলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু অলক কাপালি (০) ও নিকোলাস পুরান (৬) দ্রুতই সাজঘরে ফিরলে ওয়ার্নার যোগ্য সঙ্গীর অভাবে পড়েন। সাত নম্বরে ব্যাট করতে আসা জাকের আলী ভাল সঙ্গ দেন তাকে। ষষ্ঠ উইকেটে ৬৩ রান যোগ করেন দু’জনে মাত্র ৪১ বলে। এতেই চ্যালেঞ্জিং একটি সংগ্রহ পেয়ে যায় সিলেট। চলতি আসরে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতক হাঁকিয়ে এরপরই থামেন ওয়ার্নার। ৪৩ বলে ৮ চার, ১ ছয়ে ৬৩ রান করেছিলেন। সাকিব তাকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন। জাকেরও শেষ ওভারের পঞ্চম বলে বার্চের দ্বিতীয় শিকার হন। তিনি ১৮ বলে ১ চার, ১ ছয়ে ২৫ রান করেছিলেন। শেষ বলেও বার্চ উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদের। ৪২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সাকিব নেন ৩৪ রানে ২টি। ৮ উইকেটে ১৫৮ রানের ভাল একটি সংগ্রহ পায় সিলেট। ঢাকা পর্বে দুই দলের লড়াইয়ে সিলেটকে ৩২ রানে হারিয়েছিল ঢাকা। এবার রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি তাদের। দলীয় ২৩ রানেই সাজঘরে ফেরেন মিজানুর রহমান (১) ও ঝড়ো ব্যাটিং করতে থাকা সুনিল নারাইন। ১০ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ২০ রান করার পর তিনি তাসকিনের শিকার হন। চলতি আসরে ফর্মের তুঙ্গে থাকা তাসকিন এদিনও দারুণ বোলিং করছিলেন। সে কারণে রান তাড়া করতে নামা ঢাকার ব্যাটসম্যানরা ঠিক স্বস্তিতে থাকতে পারেননি। সেই সুযোগে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ওয়ানডাউনে নামা রনি তালুকদারকে (১৩ বলে ১৩) নেপালি লেগস্পিনার সন্দ্বীপ লামিচানে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান। দলীয় ৩৭ রানে ৩ উইকেট খুঁইয়ে বেশ বিপদেই পড়ে যায় ঢাকা। তখনই হাল ধরেন অধিনায়ক সাকিব। প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা আফগান তারকা দারবিশ রাসুলি তার সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৭৫ রানের জুটি গড়েন মাত্র ৪৮ বলে। এ জুটিতেই জয়ের পথ পেয়ে যায় ঢাকা। রাসুলি ১৫ বলে ১ চার, ১ ছয়ে ১৯ রান করার পর পাক পেসার মোহাম্মদ ইরফানের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হলে জুটি ভাঙ্গে। কিন্তু সাকিবকে থামাতে পারেননি কোন সিলেটি বোলার। আর রাসেল ব্যাটিংয়ে এসে তা-ব চালাতে শুরু করেন। পরবর্তী ৫১ রানের যে অবিচ্ছিন্ন জুটি, তার মধ্যে এ ক্যারিবীয় এ মারকুটে অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকেই আসে ২১ বলে ৪০ রান। ২ চার, ৪ ছক্কায় এ রানে তিনি অপরাজিত ছিলেন বলেই ১৮ বল হাতে রেখেই জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে যায় ঢাকা। ৪ উইকেটে ১৬৩ রান তোলে তারা। জিতে যায় ৬ উইকেটে। সাকিব ৪১ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৬৩ রানে। সিলেটের পক্ষে ৩৮ রানে ২ উইকেট নেন ইরফান। স্কোর ॥ সিলেট সিক্সার্স ইনিংস- ১৫৮/৮; ২০ ওভার (লিটন ২৭, সাব্বির ১১, আফিফ ১৯, ওয়ার্নার ৬৩, অলক ০, পুরান ৬, জাকের ২৫, তাসকিন ১, লামিচানে ০*; বার্চ ৩/৪২, সাকিব ২/৩৪)। ঢাকা ডায়নামাইটস ইনিংস- ১৬৩/৪; ১৭ ওভার (মিজানুর ১, নারাইন ২০, রনি ১৩, সাকিব ৬১*, দারবিশ ১৯, রাসেল ৪০*; ইরফান ২/৩৮, লামিচানে ১/২৭, তাসকিন ১/৩২)। ফল ॥ ঢাকা ডায়নামাইটস ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস)।
×