ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুর রাইডার্সের শ্বাসরুদ্ধকর ও চট্টগ্রামের সহজ জয়

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

রংপুর রাইডার্সের শ্বাসরুদ্ধকর ও চট্টগ্রামের সহজ জয়

রুমেল খান ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ক্রিকেটে শনিবারের খেলায় জয় কুড়িয়ে নিয়েছে রংপুর রাইডার্স এবং চিটাগং ভাইকিংস। দুটো খেলাই অনুষ্ঠিত হয় সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। আর এই দুটি ম্যাচ দিয়েই বিপিএল ক্রিকেটের সিলেট-পর্ব শেষ হলো। একদিন বিরতি দিয়ে ২১ জানুয়ারি থেকে আবারও ঢাকায় ফিরবে ব্যাট-বলের এই জমাটি আসর। টানা তিন ম্যাচ পর আবারও জয়ের ধারায় ফিরে এল ‘এমপি’ মাশরাফির রংপুর। তবে এই জয়ের স্বাদ পেতে বিস্তর ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাদের। দুপুরে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে মাত্র তিন বল বাকি থাকতে তারা জিতে যায়। ৪ উইকেটে হারায় স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্সকে। একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত অপর ম্যাচে (দিবারাত্রির ম্যাচ) খুলনা টাইটান্সকে ২৬ রানে হারায় চিটাগং ভাইকিংস। এ নিয়ে টানা তৃতীয় ম্যাচে জিতলো চট্টলার দলটি। শনিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিং বেছে নেয় খুলনা। আগে ব্যাট করে ইয়াসির আলী ৫৪, অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম (৫২), দাসুন শংকলা (৪২*), মোহাম্মদ শাহজাদের (৩৩) বদৌলতে চট্টগ্রাম রানের পাহাড় গড়ে তোলে। ২০ ওভারে ৪ উইকেটে তারা করে ২১৪ রান। এটা বিপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। মাত্র ৪ রানের জন্য ২০১৩ সালে ঢাকার করা ২১৭ রানকে টপকে যেতে পারেনি তারা। খুলনার ডেভিড উইসি ২টি উইকেট লাভ করেন। এছাড়া ১টি করে উইকেট পান শরীফুল ইসলাম এবং তাইজুল ইসলাম। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৮৮ রানের বেশি করতে পারেনি খুলনা। ফলে ২৬ রানের জয় পায় চট্টগ্রাম। খুলনার পক্ষে টপ স্কোরার হন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ (৫০)। এছাড়া ডেভিড উইসের ৪০ ও ব্রেন্ডন টেলরের ২৮ রান ছিল উল্লেখযোগ্য। চট্টগ্রামের আবু জায়েদ ৩টি উইকেট পান। এছাড়া ২টি করে উইকেট পান খালেদ আহমেদ ও ক্যামেরন ডেলপোর্ট। নাঈম হাসান পান ১টি উইকেট। দিনের প্রথম ম্যাচে টস জেতে রংপুর। প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় তারা। ওপেনার সাব্বির রহমানের আগ্রাসী ব্যাটিং (৫১ বলে ৮৫), থাইল্যান্ডে জন্ম নেয়া উইন্ডিজ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরানের হার না মানা ঝড়ো উইলোবাজি (২৭ বলে ৪৭*), অসি অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার এবং ওয়ান ডাউন ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেনের মোটামুটি সংগ্রহ (দুজনেই করেন ১৯ রান করে) সিলেটকে নিয়ে যায় প্রায় দুশ’ রানের কাছাকছি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে তারা করে ১৯৪ রান। এই সংগ্রহ ছিল এবারের আসরের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ, যা পরে ছাড়িয়ে যায় রংপুর। রংপুরের সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা (২/৩১)। এছাড়া শফিউল ইসলাম লাভ করেন ১টি উইকেট। আরেকটি হয় রান আউট (আফিফকে রান আউট করেন রুশো)। রান তাড়া করতে নেমে মারকুটে-তারকা ওপেনার ক্রিস গেইলকে (০) হারিয়ে চাপে পড়ে যায় রংপুর। ক্যারিবিয় এই ব্যাটসম্যানকে আউট করেন মোহাম্মদ ইরফান। এ্যালেক্স হ্যালেস (৩৩) এবং রিলে রুশো (৬১) হাল ধরেন বেশ ভালমতোই। এ জুটি ৬.৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে জমা করেন ৬৩ রান। অলক কাপালি হ্যালেসকে এবং তাসকিন আহমেদ রুশোকে (টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক) আউট করেন। তবে তাতেও থেমে থাকেনি রংপুরের রানের চাকা। প্রোটিয়া তারকা এবিডি ভিলিয়ার্স (এটাই ছিল তার প্রথম বিপিএল ম্যাচ, করেন ৩৪ রান) এবং মোহাম্মদ মিঠুন (১৪) রানের গতি সচল রাখতে সচেষ্ট হন। কিন্তু সেভাবে রানের গতি না ওঠায় ম্যাচের ভাগ্য পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকে একেক সময় একেক দলের দিকে। ভিলিয়ার্স-মিঠুন দুজনেই শিকার হন তাসকিনের। নাহিদুল ইসলাম (১৯) এসে কিছুটা সহায়তা করেন দলকে। কিন্তু তাকেও প্যাভিলিয়নে পাঠান তাসকিন। ফরহাদ রেজাকে নিয়ে জয়ের সংগ্রামে লিপ্ত হন মাশরাফি (৫*)। শেষ পর্যন্ত মাত্র তিন বল হাতে রেখেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ফরহাদ রেজা। শেষের ১২ বলে প্রয়োজনীয় ২৪ রান সংগ্রহ করেন রেজা-মাশরাফি জুটি। শেষ ওভারে বোলার ছিলেন স্পিনার অলক কাপালি। শেষ ওভারের রংপুরের জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ৫ রান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন মাশরাফি, দ্বিতীয় বল ডট খেলেন রেজা। কিন্তু পরের বলেই সোজা বোলারের মাথার ওপর দিয়ে চার মেরে ম্যাচ জেতান (১৯.৩ ওভারে ৬ উইকেটে ১৯৫ রান) মাত্র ৬ বলে ১৮ রান করা রেজা। বিফলে যায় সিলেটের সাব্বিরের ৮৫ রান এবং বোলার তাসকিনের (৪/৪২) প্রচেষ্টা।
×