ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জন্মবার্ষিকীতে জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা

খালেদাকে মুক্ত করব, তারেককে ফিরিয়ে আনব ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

খালেদাকে মুক্ত করব, তারেককে ফিরিয়ে আনব ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৈতিক পরাজয়ের পর জনদৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই আওয়ামী লীগ বিজয় উৎসব করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার বেলা ১১টায় শেরেবাংলানগরে তাঁর মাজারে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির সঙ্গে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোন টানাপোড়েন নেই। এ বিষয়ে বিরোধী পক্ষ থেকে যা বলা হচ্ছে, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট আছে এবং থাকবে। আমাদের দলেও কোন সমস্যা নেই। তবে চটকদার গল্পের মধ্য দিয়ে অনেক কিছু আসতে পারে। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগেরই পরাজয় হয়েছে। কীভাবে ভোট ডাকাতি হয়েছে, তা দেশের মানুষ দেখেছে। এই ভোট ডাকাতির পর বিজয় উৎসব করা বা আনন্দ করার কোন মানে হয় না। এ মুহূর্তে বিএনপির করণীয় কি এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, বিএনপি কর্মসূচীর মধ্যেই আছে। সাধারণ মানুষ ৩০ ডিসেম্বরের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে। সাধারণ মানুষকেও তার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করতে হবে। বিএনপি এই জোচ্চুরি নির্বাচনের বিরুদ্ধে কর্মসূচী পালন করবে। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের পরাজয় হয়েছে। সঙ্গে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় পরাজয় হয়েছে। কারণ তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা অর্থাৎ গণতন্ত্রের বহুমাত্রিকতার বিষয়টি তিনি সামনে নিয়ে আসেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ভিন্ন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ভোটের অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সামনে নিয়ে আসেন। আজকে দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যিনি জাতিকে স্বাধীনতায় অনুপ্রাণিত করেছিলেন, যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁর জন্মদিনে আওয়ামী লীগ উৎসব পালন করছে। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্রের প্রতি কোন শ্রদ্ধা নেই। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু বিশ্বাস করে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের এই দিনে আমরা শপথ নিয়েছি গণতন্ত্রকে আমরা মুক্ত করব, সর্বোপরি যিনি এই পতাকা ধরে আছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব। জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাজাহান, ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সেলিমা রহমান, রুহুল আলম চৌধুরী, এ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, ডাঃ ফরহাদ হালীম ডোনার, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুল হাবিব দুলু, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, শিরিন সুলতানা, কায়সার কামাল, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, দেওয়ান সালাহউদ্দিন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী, আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান, নবী উল্লাহ নবী, আনোয়ার হোসাইন, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, শাহ নেসারুল হক প্রমুখ। বিএনপি ছাড়াও ঢাকা মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, ড্যাব, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, শ্রমিক দল, ছাত্রদল, ওলামা দল, মুক্তিযোদ্ধা দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদাভাবে জিয়ার মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফ্রি-মেডিক্যাল ক্যাম্প-এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষজনকে স্বাস্থ্যসেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ড্যাব। ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প উদ্বোধনকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা চাই অবিলম্বে প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়েই এই দেশের মানুষের মুক্তি আসতে পারে। তাই আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রকে মুক্ত করি, খালেদা জিয়াকে করামুক্ত করি। তিনি বলেন, আজকে দেশের যে অর্থনৈতিক সচলাবস্থা তা জিয়াউর রহমান তৈরি করেছিলেন।
×