ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভোলায় ঘুমন্ত গৃহবধূ ও এক শিশুকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

ভোলায় ঘুমন্ত গৃহবধূ ও এক শিশুকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ১৯ জানুয়ারি ॥ ঘুমন্ত অবস্থায় গৃহবধূ সুরমা (২৮) ও তার বড় বোনের শিশুকন্যা খাদিজাকে (৯) পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসময় গৃহবধূর বড় বোনও আগুনে দগ্ধ হন। তার শরীরের ৭০ শতাংশের মতো পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুক্রবার রাতে লালমোহনের চরভূতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খারাকান্দি গ্রামে ঘরে সিঁধ কেটে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নিহতের স্বামী লোমহর্ষক এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে পুলিশ আটক করতে পারেনি। স্থানীয়রা জানান, নিহত সুরমার সঙ্গে বোরহানউদ্দিনের দেউলা এলাকার রফিকের ছয় মাস আগে বিয়ে হয়। এটা ছিল রফিকের তৃতীয় বিয়ে। রফিক তেমন কোন কাজকর্ম করত না। বিয়ের পর রফিকের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না তার স্ত্রীর। তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। এ নিয়ে বিচার সালিশও হয়। দশদিন আগে সুরমাকে রেখে তার স্বামী চলে যায়। তারপর সুরমা বড় বোন আংকুরা বেগমের বাড়িতে ওঠেন। ওই বাড়িতে শুক্রবার রাতে খাবার পর একই বিছানায় সুরমা, তার বোন আংকুরা (৩৮) এবং আংকুরার মেয়ে খাদিজা (৯) ঘুমিয়ে পড়ে। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে তাদের মাটির ঘরের পেছন দিয়ে সিঁধ কেটে প্রবেশ করে দুর্বৃত্ত। চৌকিতে ঘুমন্ত অবস্থায় লেপ-তোষকে ধরিয়ে দেয়া আগুনে ঘটনাস্থলেই সুরমার মৃত্যু হয়। আগুনে বড় বোন আংকুরা (৩৮) ও তার মেয়ে খাদিজা (৮) পুড়ে মারাত্মক আহত হয়। আর্তচিৎকার শুনে এলাকাবাসী ঘরে ঢুকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। স্থানীয়রা ও অগ্নিদগ্ধ আংকুরা জানান, নিহত সুরমার স্বামী রফিক রাতের আঁধারে পেট্রোল দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ভোলা সিভিল সার্জন রথীন্দ্রনাথ মজুমদার জানান, আগুনে দগ্ধ মা ও মেয়ের শরীরের ৭০ ভাগের বেশি পুড়ে গেছে। এদের জরুরী অবস্থায় ভোলা সদর হাসপাতাল থেকে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। বরিশাল শেরই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আগুনে দগ্ধ মা ও মেয়েকে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে শিশু খাদিজার মৃত্যু হয়। ভোলার পুলিশ সুপার মোঃ মোকতার হোসেন জানান, রাতে ঘটনা শোনার পর থেকে দুজন এডিশনাল এসপির নেতেৃত্বে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। প্রবাসীর স্ত্রীকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা ॥ স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, বন্দরের সোনাকান্দা এলাকায় দিনদুপুরে নাঈমা রহমান (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে। পুলিশ বিকেলে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত নাঈমা রহমান থাইল্যান্ড প্রবাসী আনিসুর রহমানের স্ত্রী। নাঈমা রহমান তার দুই সন্তানকে নিয়ে সোনাকান্দা এলাকায় হাসানুল হকের ভাড়াটিয়া বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, দুপুরে নিহতের মেয়ে ও দশম শ্রেণীর ছাত্রী আনুশী স্কুল থেকে বাসায় ফিরে দেখতে পান ফ্ল্যাটের দরজা বাহির থেকে তালা লাগানো। পরে সে তার কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। পরে সে বেড রুমে গিয়ে তার মাকে রক্তাক্ত ও পুড়ে যাওয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেয়। পরে প্রতিবেশীরা আগুন নিভিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনার সময় নাঈমা রহমান একাই বাসায় ছিলেন। বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, কে বা কারা ওই গৃহবধূকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় ৫-৬ আঘাত করে। এতে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। ধারণা করা হয় এতে তার মৃত্যু হয়। পরে সন্ত্রাসীরা গৃহবধূর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। কি কারণে কারা এ হত্যাকা-টি ঘটিয়েছে আমরা তা তদন্ত করে দেখছি। নিহতের স্বামী এখনও থাইল্যান্ড অবস্থান করছে। নিহত নাঈমা রহমানের ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুবাস চন্দ্র সাহা জানান, নিহতের মাথায় ও শরীরে ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। যে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে তাতে আমরা ঘটনাটি শীঘ্রই উদঘাটন করতে পারব। তিনি আরও জানান, আশপাশের লোকজনই এই হত্যার সঙ্গে জড়িত রয়েছে কিনা না তাও আমরা তদন্ত করে দেখছি।
×