ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী

নবম ওয়েজবোর্ডের জন্য নতুন পর্যালোচনা কমিটি গঠিত হবে

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

নবম ওয়েজবোর্ডের জন্য নতুন পর্যালোচনা কমিটি গঠিত হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার সাংবাদিক-কর্মচারীদের জন্য নবম ওয়েজবোর্ড যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। ওয়েজবোর্ডের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন যাতে হয়, সেক্ষেত্রেও পদক্ষেপ নেয়া হবে। নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের কাজ অনেকদূর এগিয়ে গেলেও আরও কিছু ধাপ বাকি আছে। এটি করতে গেলে কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হয়। নতুনভাবে মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করতে হবে। নবম ওয়েজবোর্ডের সুপারিশ পর্যালোচনায় নতুন মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা হবে। সবার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে ডিআরইউ আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আজকে আগে গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক করতে চিন্তা-ভাবনা করেছিলাম। এজন্য বিগত মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু নতুনভাবে আবারও সরকার গঠিত হওয়ায় আগের কমিটি দিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। যে কারণে আজ ওই কমিটির সভা রাখা সম্ভব হয়নি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা নিয়ে নতুনভাবে মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা হবে। এরপর নতুন মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় নবম ওয়েজবোর্ডের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হবে। ২৩ জানুয়ারি সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং পরে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে যত দ্রুত সম্ভব ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে কাজ করব। আবার ওয়েজবোর্ড ঘোষণা হলেও অনেক সময় বাস্তবায়ন হয় না। সেটির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন যাতে হয়, সেটিও সরকারের পক্ষ থেকে দেখভাল করা হবে। নবম ওয়েজবোর্ডে টেলিভিশন সাংবাদিকরা অন্তর্ভুক্ত হবেন না-কি কিংবা তাদের জন্য নতুন নীতিমালা ও ওয়েজবোর্ড করা হবে- সেটিও সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে বলেও জানান তিনি। সাম্প্রতিক নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই প্রচার সম্পাদক বলেন, বিএনপির পরাজয়ের কারণ হচ্ছে জনগণের স্বার্থের বদলে নিজেদের স্বার্থ নিয়ে আন্দোলন করা এবং মানুষের সমর্থন ও ভালবাসা না পাওয়া। গত ১০ বছর ধরে তাদের যাবতীয় আন্দোলন ছিল তারেক রহমানের মামলা থেকে প্রত্যাহার, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনাসহ নিজস্ব স্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে। আমজনতার কোন বিষয়ে তাদের আন্দোলন করতে দেখা যায়নি। বরং নিজেদের বিষয়গুলো নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে তারা জনগণের ওপর হামলা পরিচালনা করেছে, জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, জ্বালাও-পোড়াও ও সন্ত্রাস করেছে। তাহলে তারা মানুষের সমর্থন পাবে কী করে? তিনি বলেন, বিএনপির নিজেদের দলের মধ্যে কোন ঐক্য ছিল না। তাদের একে অপরের প্রতি কোন বিশ্বাস নেই। তারা জনগণকে প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করেছে। এগুলো ছাড়াও তাদের পরাজয়ের আরেকটি বড় কারণ ছিল ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা। সরকার চায় শক্তিশালী বিরোধী দল। কিন্তু কোন দল যদি নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে না পারে, অন্য কেউ তাকে দাঁড় করিয়ে দিতে পারে না। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী হত্যাকান্ডের বিচার প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি, আমি এখনই বলতে পারব না, যে কতদিনের মধ্যে এই মামলার বিচার শেষ হবে। তবে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি কোন জায়গায় আটকে আছে- তা খুঁজে বের করে যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থা করব। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়েও আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। কারণ এটা সুরাহা করা দরকার।’ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে গণমাধ্যমের উদ্বেগ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই আইন সাংবাদিকদের জন্য নয়। সারাদেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য। সাংবাদিকদের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে, তা দূর করার চেষ্টা করব। সম্প্রচার আইন হয়ে গেলে অনলাইন সংবাদমাধ্যমের নিবন্ধনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য অনলাইন নীতিমালা হয়েছে। সম্প্রচার আইন হয়ে গেলে এগুলোকেও নিবন্ধন দেয়া যাবে। সুতরাং এই ধাপগুলো হয়ে গেলে এগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনার ব্যবস্থা শুরু হবে এবং এটি প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারকে আরো যুগোপযোগী করার পরিকল্পনা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকার বাইরে বিটিভির জন্য চট্টগ্রামে সম্প্রচার কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। আমাদের ইচ্ছে আছে বাকি বিভাগীয় শহরগুলোতেও সম্প্রচার কেন্দ্র স্থাপন করার। এছাড়া রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আগের তুলনায় যেন আরও বেশি কার্যকর ও দর্শকপ্রিয় হয়, সে লক্ষ্যেও আমরা কাজ করছি। ডিআরইউ সভাপতি ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান।
×