ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের জন্য শিশু পার্ক সাময়িক বন্ধ

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

 আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের জন্য শিশু পার্ক সাময়িক বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের জন্য রাজধানীর শাহবাগের শিশুপার্ক সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন বছরের শুরু থেকে শিশুদের এ বিনোদন কেন্দ্রটির সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ৪০ বছরের এ পার্কটি বন্ধ হলেও নগরবাসীর অনেকেই সে তথ্য জানেন না। ফলে অনেকেই শিশুদের নিয়ে ঘুরতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। হঠাৎ করে বিনা নোটিসে পার্কটি বন্ধ করে দেয়ায় অনেকেই ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সহকারী প্রকৌশলী ও শিশুপার্কের ম্যানেজার জাকির হোসেন জানান, নোটিস দিয়েই পার্কটি বন্ধ করা হয়েছে। হয় তো নগরবাসীর চোখে পড়েনি। রবিবার দেখা যায় পার্কের দুটি প্রবেশপথে ডিএসসিসির প্রকৌশল বিভাগের (যান্ত্রিক) নির্বাহী প্রকৌশলী নুর মোহাম্মদের নামে দেয়া একটি বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে। তাতে লেখা রয়েছে, ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় শাহবাগ শিশুপার্কের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন কাজ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন থাকায় অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রী শিশুপার্ক সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে। পার্কের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কাজের সমাপ্তির পর শিশুপার্কটি সর্বসাধারণের জন্য খোলার বিষয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। পার্কের ভেতরে ভাংচুর ও সংস্কার কাজ চলছে। বুলডোজার দিয়ে রাইডগুলো ভাঙ্গা হচ্ছে। সেগুলো এদিকে সেদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। টিকেট কাউন্টারগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। দক্ষিণদিকের ফুডকোর্টগুলো ভাঙ্গার কাজ চলছে। ড্রেজিং মেশিনে মাটি খুঁড়ে গর্ত করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের (তৃতীয় প্রকল্প) অধীনে ৫০০টি ভূগর্ভস্থ গাড়ি পার্কিং, দৃষ্টিনন্দন জলাধারসহ হাঁটারপথ, আন্ডারপাস, মসজিদ ও অত্যাধুনিক রাইডসহ শিশুপার্কের আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। প্রকল্প মেয়াদকাল জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯। ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে ১৯৭৯ সালে ‘শহীদ জিয়া শিশুপার্ক’ নামে পার্কটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য পাবলিক সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম এই শিশুপার্কটি ১৯৮৩ সাল থেকে শিশুদের বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে। সরকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের উদ্যোগে ১৫ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা এ পার্ক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। শিশুপার্কটিতে ১২টি রাইড রয়েছে। যেখানে একটি খেলনা ট্রেন, একটি গোলাকার মেরিগো রাউন্ড রাইড ও একাধিক হুইল রাইড রয়েছে। ১৯৯২ সালে এ পার্কে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে সৌজন্য হিসেবে একটি জেট বিমান দেয়া হয়। রাজধানী ঢাকার সরকারী ও বেসরকারী বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম খরচ হওয়ায় ধনী-গরিব প্রতিটি পরিবারের কাছে জনপ্রিয় ছিল। বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার পার্কটি বেলা ২টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চালু ছিল। রবিবার ছাড়া শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার ২টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত রাইডগুলো চালু থাকত। এ শিশুপার্কে প্রতিদিন ছয় হাজারের অধিক মানুষ আসত। আর ঈদ-উল ফিতর ও ঈদ-উল আজহার মতো আনন্দঘন সময়ে তা কয়েকগুণ বেড়ে যেত।
×