ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিথ্যা হলফনামা

সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুল হাইয়ের মামলা বাতিলের রিট খারিজ

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

 সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুল হাইয়ের মামলা বাতিলের রিট খারিজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মিথ্যা হলফনামা দেয়ার অভিযোগে সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এবং মুন্সীগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির সাবেক এমপি মোঃ আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিলের রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে থাকা দুদকের এ মামলাটির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছে আদালত। এর ফলে তার বিরুদ্ধে মামলাটি চলতে আর কোন বাধা থাকল না বলে জানিয়েছে আইনজীবীরা। রবিবার বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল খারিজ করে এ রায় দেন। আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোঃ খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মোঃ খুরশিদ আলম। রাজউক সূত্রে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ আবদুল হাই ২০০৪ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান বরাবরে গুলশান ও বনানী আবাসিক এলাকায় তার নামে একটি প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন। তার আবেদনের সঙ্গে রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী একটি হলফনামা দাখিল করেন। হলফনামায় অঙ্গীকার করেন যে, বৃহত্তর ঢাকা মহানগরীর রাজউকের আওতাধীন কোথাও তার নিজের নামে, স্ত্রী/নির্ভরশীল ছেলেমেয়ে অথবা পোষ্যের নামে কোন আবাসিক জমি বা বাড়ি/ফ্ল্যাট ক্রয় কিংবা উত্তরাধিকারসূত্রে নেই। এরপর ২০০৫ সালের ৭ জুন মোঃ আব্দুল হাই সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে তার নামে গুলশান ও বনানী আবাসিক এলাকায় সাময়িকভাবে বরাদ্দ প্লটের বরাদ্দপত্র জারির জন্য রাজউকের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পর আব্দুল হাইয়ের নামে বনানী আবাসিক এলাকায় একটি প্লট শর্তসাপেক্ষে সাময়িকভাবে বরাদ্দ দেয় রাজউক। ২০০৫ সালের ২০ জুন বনানী আবাসিক এলাকার ৩নং রাস্তায় ৫ কাঠা আয়তনবিশিষ্ট ৯নং প্লটটি আব্দুল হাইয়ের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে অনুসন্ধানে রাজউক থেকে ৯ প্লট গ্রহীতার বিষয়ে রাজউকের সংশ্লিষ্ট থানা থেকে তথ্য গ্রহণ করা হয়। এতে ওই ৯ জনের নাম, আইডি নং ও প্লটের নাম এবং তাদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদের নাম ও আইডি নং সংগৃহীত হয়। রাজউকের ওই তথ্যপত্রে উল্লেখ করা হয়, বর্ণিত ৯ জনের মধ্যে (১) জামিলা খাতুন, মোঃ আব্দুল হাইয়ের স্ত্রীর বারিধারা (কে-১৩-৩৩) (২), জিয়াউল মুজিবের (সেলিমা রহমানের ছেলে) প্লট নং নিকুঞ্জ-১ (নিকি-১০৩-২) এই দুটি বরাদ্দের তথ্য আজ পর্যন্ত এন্ট্রি করা তথ্যের মধ্যে পাওয়া গেছে। বাকিদের নামে বরাদ্দের তথ্য পাওয়া যায়নি। মোঃ আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী জামিলা খাতুন ১৯৮৭ সালের ১২ এপ্রিল তার নামে বরাদ্দ প্লটটি মনোয়ার হোসেনের কাছে বিক্রি করেন। ফলে আব্দুল হাই তথ্য গোপন করে হলফনামা দিয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে সরকারী সম্পদ আত্মসাত করেছেন বলে প্রমাণিত হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে দুদকের উপ- পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ২০১৬ সালের ৯ নবেম্বর মতিঝিল থানায় মামলা করেন। একই উপ-পরিচালক তদন্ত করে ২০১৭ সালের ২৮ নবেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
×