ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেট হয়ে ফের ঢাকায় বিপিএল, অপর ম্যাচে মুখোমুখি কুমিল্লা-রাজশাহী

ঢাকা-চিটাগং হাইভোল্টেজ ম্যাচ আজ

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

ঢাকা-চিটাগং হাইভোল্টেজ ম্যাচ আজ

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) ষষ্ঠ আসরের দুইপর্ব শেষ হয়ে গেছে। আজ আবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে লীগের তৃতীয়পর্ব শুরু হবে। এ পর্বের প্রথমদিনেই ঢাকা ডায়নামাইটস খেলতে নামছে। প্রতিপক্ষ চিটাগং ভাইকিংস। ম্যাচটি সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শুরু হবে। এই ম্যাচটির আগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রাজশাহী কিংসের মধ্যে লড়াই হবে। এই ম্যাচটি দুপুর দেড়টায় শুরু হবে। চার দল খেলবে আজ। তবে সবার দৃষ্টি আছে ঢাকার দিকেই। দলটি যেভাবে ছুটছে, কোন দলই ঢাকার সামনে টিকে থাকতে পারছে না। এক রাজশাহীই শুধু সিলেটে ঢাকাকে আটকাতে পেরেছে। এছাড়া যে দলই ঢাকার সামনে পড়েছে, হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। এবার লীগে চিটাগংয়ের বিপক্ষে ঢাকা প্রথমবার খেলতে নামছে। ঢাকাকে কী চিটাগং রুখতে পারবে? ঢাকা এখন পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে। দলটিকে এ স্থান থেকে কোনভাবেই নড়চড় করা যাচ্ছে না। ৬ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে আছে ঢাকা। আজ যদি জিতে তাহলে ‘প্লে-অফে’ খেলা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলবে ঢাকা। এমন ম্যাচে ঢাকার সামনে পড়া চিটাগং কী ঝলক দেখাতে পারবে? চিটাগং এখন পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বর অবস্থানে আছে। দলটি ৫ ম্যাচ খেলে ৪ জয় পেয়েছে। আজ ঢাকাকে হারাতে পারলে দ্বিতীয় স্থানেই থাকবে। তবে তাতে করে ‘প্লে-অফে’ খেলার সম্ভাবনা ভালভাবেই জেগে উঠবে চিটাগংয়ের। ঢাকার সঙ্গে আসলে কুলিয়ে ওঠা কঠিনই। ব্যাটিং-বোলিংয়ে দলটিতে সমন্বয় ভাল। ওপেনিংয়ে সুনীল নারাইনের সঙ্গে হয় হযরতুল্লাহ জাজাই নয়তো মিজানুর রহমান আছেন। এরপর এক এক করে রনি তালুকদার, সাকিব আল হাসান, দারভিস রাসুলি, আন্দ্রে রাসেল, কাইরন পোলার্ড, নুরুল হাসান সোহানের মতো ব্যাটসম্যানরা আছেন। আবার বল হাতে রাসেল, এ্যান্ড্রু বার্চ, সাকিব, নারাইন, রুবেল হোসেন রয়েছেন। সবাই আছেন ফর্মে। আর যখন একটি দলের সবাই ফর্মে থাকেন তখন সেই দলটিতো উড়বেই। ঢাকা তাই একের পর এক ম্যাচ জিতে উড়ছে। ঢাকার ওড়া থামানোর মতো রসদ আছে চিটাগংয়েও। ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদতো যেদিন ব্যাট হাতে ঝলক দেখান, সেদিন প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেন। ক্যামেরন ডেলপোর্টের সঙ্গে ইয়াসির আলী রাব্বি ঝলক দেখানো শুরু করেছেন। মুশফিকুর রহীমতো নৈপুণ্যে ফিরেছেন। টানা দুই ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি করে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়েছেন। নজিবুল্লাহ জাদরান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকততো ফর্মে আসার অপেক্ষায় আছেন। আর রবি ফ্রাইলিঙ্কতো চিটাগংয়ের ‘প্রাণ’ হয়ে উঠেছেন। বল হাতে ফ্রাইলিঙ্ক, নাঈম হাসান, আবু জায়েদ রাহি, খালেদ আহমেদ, সানজামুল ইসলামতো যে কোন মুহূর্তে ত্রাস ছড়াতে পারেন। কিন্তু চিটাগং যে দল, ঢাকাই ফেবারিট। কখনও ফেবারিট হয়েও হার হয়। চিটাগং কী ঢাকাকে সেই হারের স্বাদ আজ দিতে পারবে? কুমিল্লা ও রাজশাহী পিঠাপিঠি অবস্থানেই আছে। পয়েন্ট তালিকায় যদিও রাজশাহীর চেয়ে কুমিল্লার অবস্থান ভাল। কুমিল্লা ৬ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে। আর রাজশাহী ২ পয়েন্ট কম নিয়ে আছে পঞ্চম স্থানে। আজ যদি কুমিল্লা জিতে তাহলে অবস্থান আরও মজবুত হবে। আর রাজশাহী জিতলেও একই অবস্থা হবে। কুমিল্লা এবার লীগে দুর্দান্ত খেলছে। প্রথম চার ম্যাচে দুটি ম্যাচে জয়, দুটি ম্যাচে হার হয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ ২ ম্যাচেই জিতেছে কুমিল্লা। দলটির ব্যাটিং গভীরতা এতটাই বেশি, তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, ইমরুল কায়েস, লিয়াম ডওসন, থিসারা পেরেরা, শহীদ আফ্রিদি, জিয়াউর রহমানদের নিয়ে যে কোন দলের বিপক্ষেই বড় স্কোর গড়তে সক্ষম। বোলিংয়ে আফ্রিদিতো দুর্দান্ত ফর্মে আছেন। সঙ্গে পেরেরাও যোগ হয়েছেন। রয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান, ওয়াহাব রিয়াজ, ডওসনদের মতো বোলাররাও। কুমিল্লার তুলনায় রাজশাহী আসলে এত ঝলক দেখাতে পারছে না। একমাত্র দল রাজশাহী, যারা এবার লীগে এখন পর্যন্ত শক্তিশালী দল ঢাকাকে হারাতে পেরেছে। কিন্তু দলটি খুব আকর্ষণ কুড়াতে পারছে না। তবে সর্বশেষ ম্যাচটিতে দলে পরিবর্তন এনে ঢাকাকে হারিয়েছে রাজশাহী। মুমিনুল হক ও সৌম্য সরকারকে একাদশ থেকে ছেঁটে ফেলে শাহরিয়ার নাফীস ও মার্শাল আইয়ুবকে একাদশে ভিড়িয়েছে। তাতেই সাফল্য মিলেছে। শাহরিয়ার ও মার্শাল মিলেই দলের স্কোরবোর্ড মজবুত করে তোলেন। দলটিতে এ দুইজন ছাড়াও মেহেদী হাসান মিরাজ, রায়ান টেন ডয়েশ্চেট, জাকির হাসান, ক্রিশ্চিয়ান জোঙ্কার, সেকুগে প্রসন্ন, ইসুর উদানা রয়েছেন। বল হাতে উদানা, মিরাজ, আরাফাত সানি, মুস্তাফিজুর রহমান, সেকুগে আছেন। যদি স্কোরবোর্ডে বেশি রান জমা করতে পারে রাজশাহী তাহলে কুমিল্লার যতই ব্যাটিং লাইনআপ শক্তিশালী হোক জেতা কঠিনই হবে। এবার তৃতীয়পর্বের খেলা টানা তিনদিন হবে। এরপর আবার খেলা হবে চট্টগ্রামে। সোম, মঙ্গল ও বুধবার খেলা হবে। ২টি করে মোট ৬টি ম্যাচ হবে। ষষ্ঠ আসরে মোট পাঁচপর্বে খেলা হচ্ছে। দুইপর্ব শেষ হয়ে গেছে। ৩৫ দিনের খেলায় ১৫দিন শেষ হয়ে গেছে। এই পর্ব শেষ হলে ২৫ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিপিএলের চতুর্থপর্ব শুরু হবে। ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে চট্টগ্রামপর্ব। এরপর বিপিএলের পঞ্চম ও শেষপর্ব আবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। শেষপর্ব ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে। শেষপর্বে দুইদিনে লীগপর্বের শেষ চারটি ম্যাচ হবে। এরপর ৪ ও ৬ জানুয়ারি ‘প্লে-অফে’র ম্যাচগুলো হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের পর্দা নামবে। প্রথম ও তৃতীয়পর্বে মিরপুরে লীগপর্বের মোট ২০টি (১৪ ও ৬টি ম্যাচ) ম্যাচ হবে। এরই মধ্যে মিরপুরে প্রথমপর্বের ১৪টি ম্যাচ শেষ হয়েছে। এবার তৃতীয়পর্বেও ৬টি ম্যাচ হওয়ার পালা। আজ শুরু হচ্ছে সেই মিরপুরে তৃতীয়পর্ব। এ পর্বের প্রথমদিনে দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী ঢাকার প্রতিপক্ষ চিটাগং। প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা-রাজশাহী লড়াই হবে।
×