ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তৃতীয়পর্বে মরণ ফাঁদে খুলনা টাইটান্স

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

 তৃতীয়পর্বে মরণ ফাঁদে খুলনা টাইটান্স

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ঢাকায় প্রথমপর্বটা একেবারে ভাল যায়নি খুলনা টাইটান্সের। সিলেট সিক্সার্স ও রাজশাহী কিংসও সুবিধা করতে পারেনি। খুলনা টানা চার ম্যাচ হেরে ছিল পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে আর সিলেট ছ নম্বরে, রাজশাহী পাঁচ নম্বরে। সিলেটে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয়পর্ব শেষেও এই তিনটি দলের অবস্থানে কোন নড়চড় হয়নি। তুলনামূলকভাবে অবশ্য রাজশাহী কিছুটা ভাল অবস্থায় আছে। এবার ঢাকার ফিরতি পর্ব। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরে এই তৃতীয়পর্বের ৬ ম্যাচেই অনেক সমীকরণ পাল্টে যাবে। সেদিক থেকে খুলনা আছে একেবারে মরণফাঁদে। দু’টি ম্যাচ আছে তাদের সিলেট ও রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। এ দুটি ম্যাচ হারলেই এবার গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হবে গত আসরে প্লে-অফ খেলা খুলনাকে। ষষ্ঠ বিপিএলের দুইপর্ব শেষে সবচেয়ে ভাল অবস্থানে আছে গত আসরের রানার্সআপ ঢাকা ডায়নামাইটস। ৬ ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে হেরে ১০ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে শীর্ষে তারা। নেট রানরেটেও অন্য দলগুলোর চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে ঢাকা। তাই অনেকখানিই নিরাপদে আছে দলটি। ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথমপর্বে দুরন্ত ছিল ঢাকা, জিতেছিল ৪টি ম্যাচই। ৪ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল চিটাগং ভাইকিংস। সিলেটপর্ব শেষে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেই অবস্থানটা ধরে রেখেছে চিটাগং। সর্বাধিক ৫ ম্যাচ খেলে রংপুর ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ছিল তৃতীয় অবস্থানে। গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা কাগজে-কলমে এবার সবচেয়ে শক্তিশালী দল গড়লেও মাঠের ফলাফলে তার ছাপ দেখাতে পারেনি। সিলেটপর্ব শেষে আরেক ধাপ পিছিয়ে চার নম্বরে এখন তারা। ৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট তাদের। অবশ্য সিলেটপর্বে শেষ ম্যাচে দারুণ এক জয়ে এখন ছন্দে ফিরেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দলটি। তিনি বলেছেন, ‘এই জয়টা আমাদের প্রয়োজন ছিল আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার জন্য। আশা করছি পরবর্তী ম্যাচগুলোয় এ জয়ের ধারাবাহিকতা থাকবে।’ দলটিতে ক্রিস গেইল, রাইলি রুশো, এ্যালেক্স হেলস ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের মতো বিশ্ব টি২০ ক্রিকেটের মহাতারকারা আছেন। এরপরও দল জিততে পারছে না শিরোপা ধরে রাখার চাপে। ঢাকায় তৃতীয়পর্বে অবশ্য আর মাত্র একটি ম্যাচই আছে তাদের খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে। সেই ম্যাচটি জিততে পারলে আরেকটু অগ্রগতি হবে রংপুরের। সিলেটপর্বে গিয়ে একধাপ উন্নতি হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। এছাড়া দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস ফর্মে ফিরেছেন এটিই তাদের জন্য বড় পাওয়া। এ দলটিতেও আছেন একঝাঁক বিদেশী তারকা। কিন্তু ঢাকায় প্রথমপর্বে চার নম্বরে ছিল তারা। ৪ ম্যাচে জিতেছিল মাত্র দুটি। সিলেটপর্বে দারুণ কেটেছে দলটির, দুই ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছে। ফলে ৬ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে এখন ৩ নম্বরে তারা। এ কয়েকটি দল অনেকটাই ভারমুক্ত থাকলেও সংক্ষিপ্ত তৃতীয়পর্বে পাল্টে যেতে পারে হিসেব-নিকেশ। বিশেষ করে ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যেতে পারে খুলনার। কারণ ভয়ানক বাজে কাটানো ঢাকাপর্বের পর সিলেটে গিয়ে একটি ম্যাচ জিততে পারলেও বাকি দুটিতে হেরেছে খুলনা। ফলে ৭ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে এখনও তলানিতেই আছে। এখন দলটির টিকে থাকার বিষয়টি ঝুলছে পেন্ডুলামের ওপরে। শক্তিশালী রংপুর ও সিলেটের মোকাবেলা করতে হবে তাদের। এ দু’টি ম্যাচে হারলেই গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে যাওয়া একেবারে নিশ্চিতই হয়ে যাবে বলা যেতে পারে। কারণ রংপুর এক ম্যাচ জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ৮, সিলেট ম্যাচটি জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ৬ এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবে ভালভাবেই। কিন্তু দুই ম্যাচ হারলে ৯ ম্যাচ শেষে খুলনার ৮ পরাজয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চারে ওঠা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে। কারণ পরের তিন ম্যাচেই জয় তুলে নিতে পারলেও গ্রুপপর্ব শেষে খুলনার পয়েন্ট দাঁড়াবে সেক্ষেত্রে ৮। রংপুর জিতে গেলে তালিকার চতুর্থ দল হিসেবে ৮ পয়েন্ট হয়ে যাবে তাদের। আর ওপরের সারির এই চারটি দলেরই নেট রানরেট বেশ সমৃদ্ধ। তাই ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে যাবে খুলনার। এ কারণে দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘রান করার পরও যদি দল হারে তাহলে রান করাটা কাজে আসে না। আমাদের জন্য এখন প্লে-অফের সমীকরণ আরও কঠিন হয়ে গেল। এখন খুবই কম সুযোগ আছে আমাদের। আমাদের এখন নিজেদের জন্য হলেও ভাল খেলা উচিত।’
×