ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২২ জানুয়ারি ২০১৯

ঢাকার দিনরাত

সুখবর দিয়ে শুরু করা যাক। প্রথমবারের মতো দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই রাজধানী ঢাকাকে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনা হয়েছে, অর্থাৎ শুধু দিনেই নয়, গভীর রাতেও রাস্তায় থাকবে ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক আইন ভেঙে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ছোটানোর দিন এবার শেষ। চলমান ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষের (১৫-৩১ জানুয়ারি) তৃতীয় দিন থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। আগে সাধারণত ট্রাফিক পুলিশ ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত দুই শিফটে দায়িত্ব পালন করে থাকতেন। কখনও কখনও বিশেষ কারণে তারা মধ্যরাতেও দায়িত্ব পালন করে থাকেন, তবে রাতভর নয়। এখন ট্রাফিক পুলিশের শিফট হবে তিনটি। রাত এগারোটা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত ধরা হচ্ছে নাইট শিফট। গভীর রাতেও ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় অভিযান চালানো অব্যাহত রাখায় কর্মস্থল থেকে রাত করে ঘরে ফেরাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসবে। রাজধানীর অভিজাত এলাকায় একশ্রেণীর উঠতি বয়সের তরুণ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দ্রুত গতিতে প্রাইভেট কার চালাবার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। ভোর রাতের দিকে ঢাকার বাইরে থেকে রাজধানীতে আসা অনেক মানুষ ছিনতাইয়েরও শিকার হয়ে থাকেন। ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় ঢাকার মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে প্রায়শ যানজট লেগে থাকত। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ২৫ সিগন্যাল ও মোড়ে রাতেরবেলা সৃষ্টি হতো একই অবস্থা। তাই এসব পয়েন্টে সারারাত ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ট্রাফিক কর্তৃপক্ষের অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। রাতে ঢাকা শহরের সড়ক অরক্ষিত থাকতে পারে না। এ ব্যাপারে আমাদেরও সচেতন হতে হবে। শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, দেশের কোথাও গভীর রাতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু নাই। ফলে চালকরা আইন-কানুনের তোয়াক্কা করেন না। রাতে বেপরোয়া যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হলেই পরিস্থিতি বদলে যাবে। মানুষ নির্ভয়ে চলাচল করতে পারবে। এবার খারাপ খবর। না, সাবধানী বার্তা। ঢাকার রাস্তায়, এমনকি বড় বড় প্রধান সড়ক দিয়েও যারা চলাচল করেন, তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মাথা নিচু করে রাস্তার দিকে না তাকিয়ে যদি হাঁটেন তাহলে সমূহ বিপদ ঘটতে পারে। বিশেষ করে আমার মতো পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তিদের। অসমান সড়কে লুকানো সরু গর্তে বা খানাখন্দে পা পড়লে পা মচকে যেতে পারে। শুধু কি মচকে যাওয়া? গোঁড়ালির হাড়ে চিড় ধরতে পারে। তাই সাবধান। আমি নিজেই এর ভুক্তভোগী বলে জানি খুব জোরে হাঁটার সময়ে ছোট গর্তে পা হড়কেও অঘটন ঘটতে পারে। আচ্ছা না হয় মাথা নিচু করেই হাঁটলাম, কিন্তু তাতে মাথা বা বুক রক্ষা পাবে তো? প্রধান সড়কের পাশের পেভমেস্ট বা ফুটপাথ দিয়ে হাঁটার সময়ে যদি ঘাড় ঘুরিয়ে আশপাশে না দেখেন তবে ওপর থেকে ঝুলন্ত কিছুতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ব্যথা পেতে পারেন। রামপুরা ব্রিজের আশপাশে দিয়ে যারা রাস্তা পার হন তারা খেয়াল করে দেখবেন এখানে বিটিভি ভবনের ওপর দিয়ে অর্ধবৃত্তাকার উড়াল সড়ক ইউটার্ন নিয়েছে। দক্ষিণ দিক থেকে নেমে আসা গাড়ি উত্তরমুখী চলতে গিয়ে উড়াল সড়ক থেকে অবতরণের পরেই পাবে রামপুরা ব্রিজের দেখা। মালিবাগ-রামপুরা সড়কে ওই উড়াল সড়কের নিচে পথচারীদের জন্য বেশ সরু হাঁটাপথ রয়েছে যা মূল সড়ক থেকে বেশ উঁচুতে। কিন্তু সেখানেই রয়েছে উড়াল সড়কের জন্য একটি বাতির খাম্বা। সেটি স্থাপনের সময়ে পথচারীদের কথা মাথায় রাখা হয়নি বলে ওই এক চিলতে হাঁটাপথের ওপর বাতির পিলারের নিচ দিকের স্থাপনাটি এতটাই প্রশস্ত যে পথচারীর বুক আগলে সেটি বাধা হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং আপনি যদি মাটির দিকে তাকিযে হাঁটেন তবে ইস্পাতের ওই প্রতিবন্ধক সোজা আপনার বুকের বামপাশে এসে লাগবে দড়াম করে। অথচ সেটি উড়াল সড়কের উঁচু রেলিংয়ের ওপর দিয়ে নিলেই নিচের হাঁটাপথে প্রতিবন্ধকতা পথ আগলে থাকত না। পায়ের তলায় মাটি নেই আকাশে ওঠার বাসনা! ঢাকার বহুতল ভবনের অতিরিক্ত সমাহারের দিকে তাকালে এই কথাটিই মনে আসেÑ পায়ের তলায় মাটি নেই, আকাশে ওড়ার বাসনা। মাত্র তিন কাঠা জমির ওপর ছয়তলা বানিয়ে ফেলছে। ২০০৪ সালে প্রথম যখন উত্তরায় থাকতে শুরু করি তখনকার পরিবেশের কথা ভাবলে মন উদাস হয়ে যায়। যে তিনতলা বাড়িতে ভাড়া থাকতাম তার তিনদিকে কোন বাড়িই ছিল না। একদিকে দোতলা বাড়ি। দেখতে দেখতে মাত্র দশ বছরের ভেতর ওই বাড়ির চারদিকেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে গেল একেকটা বহুতল ভবন। কিন্তু রাস্তা তো মাপাই। ওই সড়কে বসবাসকারী লোকদের সিকি শতাংশও যদি বেলা দশটায় একযোগ ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে তাহলে ওই রাস্তাটিতেই তো যানজট লেগে যাওয়ার কথা। একটি প্রতিবেদনে পড়লাম- ঢাকা মহানগরে ১০ বছরের ব্যবধানে ছয়তলার ওপর ভবন নির্মাণের হার বেড়েছে প্রায় ৫১৪ শতাংশ। উঁচু ভবন তৈরির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জায়গা ছাড়া হচ্ছে না। ফলে জনঘনত্বের পাশাপাশি বাড়ছে যানজট। পানি ও গ্যাসের মতো নাগরিক পরিষেবায় চাপ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিটি এলাকার নাগরিক পরিষেবা ও সড়কের নির্দিষ্ট ধারণক্ষমতা আছে। ভবনের অতিরিক্ত উচ্চতার কারণে জনঘনত্ব বাড়ে। এতে এলাকা ধারণক্ষমতা হারায়। এই ঘাটতি মেটানোর জন্য পরিষেবা, রাস্তাঘাট বাড়ানো হয়। কিন্তু তারও একটি সীমা আছে। ১৯৯৬ সালের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী, ছয় মিটার রাস্তার পাশে দুই কাঠার জমিতে সর্বোচ্চ পাঁচতলা ভবন নির্মাণের সুযোগ ছিল। ২০০৮ সালের ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় একই পরিমাণ জমিতে নয়তলা ভবন তৈরির সুযোগ রয়েছে। এর বাইরেও বিধি অমান্য করে ভবনের আকৃতি বা উচ্চতা বাড়ানোর ঘটনা ঘটছে অহরহ। রাজউকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মে মাসে সংস্থাটির আটটি জোনে ৩ হাজার ২৮৮টি ভবন পরিদর্শন করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ২৮৮টি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেই নিয়ম মানা হয়নি। অপরিকল্পিত সুউচ্চ ভবন নির্মাণের ফলে জনঘনত্ব বাড়ছে। এতে চাপ পড়ছে নাগরিক পরিষেবার ওপর। ঢাকা ওয়াসার পানির শতকরা ৭৮ ভাগই আসে ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। কিন্তু প্রতিবছর ঢাকায় পানির স্তর দুই থেকে তিন মিটার করে নিচে নেমে যাচ্ছে। বাড়তি মানুষের চাহিদা মেটাতে আরও পানি তুলতে হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কথা বাড়াব না। আরেকটু যোগ করে প্রসঙ্গান্তরে যাচ্ছি। পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও পরিকল্পনাবিদদের মতে, ঢাকা শহরে সুন্দরভাবে চলাচলের জন্য শহরের মোট ভূমির ২৫ শতাংশ রাস্তা থাকা উচিত। কিন্তু ঢাকা শহরে রাস্তা আছে মাত্র ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। গত ১০ বছরে রাস্তার আয়তন সেভাবে বাড়েনি। কিন্তু বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সাল পর্যন্ত ঢাকা শহরে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ৫০০। এমনি এমনি তো আর সপ্তাহে সাত দিনই মহাযানজট থাকে না! শহরবাসী হয়েও নিজের বাসায় কোন ব্যক্তির আচার আচরণে ত্রুটি থাকলে তা শুধু পরিবারের মানুষের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু পাবলিক প্লেসে, যেমন কোন সামাজিক অনুষ্ঠানের জমায়েতে কিংবা বাসের ভেতর অবাঞ্ছিত আচরণ করা হলে সেটা অন্য দশজনের বিরক্তির কারণ ঘটায়। এক সময় দেশে মোবাইল ফোনের চল ছিল না। হাটে-মাঠে-ঘাটে আর পাবলিক বাসে এত বাচালতারও সুযোগ ছিল না। এখন ঢাকা মহানগরীর পথে যারা বের হন তাদের প্রায় প্রত্যেকের কাছেই একটি করে মোবাইল থাকে বলেই অনুমান করি। বাসের ভেতর মোবাইল ব্যবহার নিয়ে বাসযাত্রীদের সচেতন করার সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। বাসের ভেতর নানা উপদেশ বাণী লেখা থাকত আগে। এখন কমই থাকে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বাসের ভেতর স্টিকার লাগানোর সুপারিশ জানাতে হবে। তাতে বড় বড় করে দুটো বাক্য লেখা আবশ্যক বাসের ভেতর মোবাইল ফোন সাইলেন্ট রাখুন। শুধুমাত্র জরুরী আলাপ সারুন নিচু গলায় অতি সংক্ষেপে। দেখে শুনে যথেষ্ট শিক্ষিতই মনে হয় এমন লোককেও দেখেছি বাসের ভেতর হাই ভলিউমে ফোন চালু রাখেন। উচ্চৈঃস্বরে তার ফোন বেজে চললেও তিনি ধরেন না, পাশের জন বললে তখন ধরেন। আরও এক শ্রেণীর বাসযাত্রী আছেন যারা মোবাইলে একান্ত ব্যক্তিগত আলাপ বা ব্যবসায়িক আলাপ জোশ ও জোরের সঙ্গে চালিয়ে যান। এমনকি ঝগড়াঝাটিও করে থাকেন। তাদের কণ্ঠস্বরও এত চড়া যে বাসের প্রত্যেক যাত্রীর কানের পোকা খসিয়ে দিতে সক্ষম। এরা কবে প্রকৃত শহরবাসী হয়ে উঠবেন? গ্যাস চেম্বার ঢাকা ঢাকার বাতাস ২৪ ঘণ্টাই বিপজ্জনক অস্বাস্থ্যকর- এমন একটা শিরোনাম দেখলে কার না বুক কেঁপে উঠবে। শ্বাসের বাতাসই তো আমাদের বেঁচে থাকার প্রথম জ্বালানি। প্রতিবেদক সবিস্তারে জানিয়েছেন এই ঘোর বিপদের কথা। ঢাকার বাতাসে বিষÑ কথাটা প্রায় সবারই মুখস্থ। কিন্তু কতটা বিষ, কতটা বিপজ্জনক, কতটা ভয়ঙ্কর তা কি সঠিকভাবে আমরা জানি? সেটাও এতদিন ঢাকাবাসীসহ দেশের অনেকেই জেনেছে আমাদের দেশী কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিদেশী কারও যৌথ গবেষণার ফলাফল থেকে, যা মাঝেমধ্যে দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকায় ছাপা হতো। চার বছর হলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি প্রকল্পের আওতায় ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস অত্যধুনিক প্রযুক্তি বসিয়ে ঢাকার বাতাসে দূষণ ও বিপদের মাত্রা, সেই সঙ্গে তাৎক্ষণিক করণীয়ও জানান দিয়ে আসছে। ইন্টারনেটে এটি রিয়াল টাইম এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) নামে পাওয়া যায়, যেটিকে বাংলায় ‘সার্বক্ষণিক বায়ুমান সূচক’ বলে এই প্রতিবেদনে ব্যবহার করা হলো। এটিই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও নির্ভরযোগ্য বায়ুমান সূচক বলে দেশে দেশে স্বীকৃত। ১৫ দিনের বেশিরভাগ সময় ধরে এই সূচকের দিকে তাকিয়ে থেকে শিউরে শিউরে উঠতে হয়েছে আমাদের প্রিয় রাজধানী শহর, প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষের আবাসস্থল এই ঢাকার বাতাসে দূষণ বা বিষের অবস্থা দেখে। আরও আঁতকে উঠতে হয়েছে দেশের বিশিষ্ট স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত শুনে। কারণ সূচকটির দিকে শুধু তাকিয়ে থেকেই নয়, সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেয়া হয়েছে। তাতে উঠে এসেছে আরও ভয়াবহ সব তথ্য। কিছুকাল আগে এক রবিবারে সকাল ১০টায় সার্বক্ষণিক বায়ুমান সূচকে দেখা যায়, ঢাকা হয়ে আছে লাল, মানে ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর। সূচকটি বিশ্বের ১০ হাজার শহরের বায়ুমান জানায় কয়েকটি রং ও বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর বস্তুকণার (ওজোন গ্যাস, হাইড্রোজেন সালফাইড, সিসা, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড) পরিমাণ দিয়ে। বায়ুমান ভাল হলে সবুজ, মোটামুটি ভাল হলে হলুদ, কারও কারও জন্য অস্বাস্থ্যকর হলে কমলা, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর হলে লাল, অতি অস্বাস্থ্যকর হলে বেগুনি আর বিপজ্জনক হলে খয়েরি রং দিয়ে সূচকে চিহ্নিত করা হয়। বিগত ১৫ দিনের ৩৬০ ঘণ্টার কোন একটি মুহূর্তও সূচকটিতে ঢাকার রং সবুজ তো দূরের কথা, হলুদ, এমনকি কমলাও দেখা যায়নি। বেশির ভাগ সময় দেখা গেছে বেগুনি রং, মানে অতিমাত্রায় অস্বাস্থ্যকর। ২০ জানুয়ারি ২০১৯ [email protected]
×