ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষের দুর্ভোগ ১০ জানুয়ারি থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ সার্ভার বিকল

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ২২ জানুয়ারি ২০১৯

মানুষের দুর্ভোগ ১০ জানুয়ারি থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ সার্ভার বিকল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত ১০ জানুয়ারি থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের সার্ভার বিকল হয়ে রয়েছে। ফলে ভোগান্ততিতে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে সেবা নিতে হাজার হাজার মানুষ। বাধ্য হয়ে সেবা না নিয়েই তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে। কবে নাগাদ ১০ কোটি ৪২ লাখ মানুষের ডাটাবেস সংরক্ষিত সার্ভার ঠিক হবে তা কেউ ঠিক জানাতে পারেনি। ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, সার্ভার হচ্ছে টেকনিক্যাল বিষয়। ইচ্ছে করলে কেউ ডাউনও করতে পারেন, ইচ্ছা করলে কেউ আপও করতে পারেন। যারা এটা পরিচালনা করেন তারাই ভাল বলতে পারেন। এ বিষয়ে তার কাছে উল্লেখ করার মতো আপডেট কোন তথ্য নেই। সার্ভার ডাউন, এটা হতেই পারে। আবার আপ হয়ে যাবে। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের পরিচালক আব্দুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, সার্ভারে আমাদের কয়েকটি সার্ভিস প্রয়োজন হয় এর মধ্যে শুধুমাত্র নতুন ভোটার হওয়া, বায়োমেট্রিক এটি এখনও আমরা আপ করতে পারিনি। আর আমাদের মাঠপর্যায়ে উপজেলা বা থানা যে সার্ভিসটি আছে এটি আমরা আপ করতে পারিনি। আমাদের টেকনিক্যাল টিম জানিয়েছে আজ মঙ্গলবারের মধ্যে এটি আপ করা সম্ভব হবে। আর এটি হলে আগের মতোই সব সার্ভিস পাওয়া যাবে উল্লেখ করেন। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের সার্ভারে সারাদেশের ১০ কোটি ৪২ লাখ ভোটারের ডাটাবেস সংরক্ষিত আছে। ফলে হারিয়ে যাওয়া পরিচয়পত্র নতুন করে উত্তোলন, পরিচয়পত্রে সংশোধনসহ নানা ধরনের কাজের জন্য দেশেরে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিবন্ধন অনুবিভাগে প্রতিদিন ভিড় করে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু সার্ভার বিকল হয়ে পড়ায় এখন সেই সেবামূলক কাজটি বন্ধ রয়েছে। যারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সেবা নিতে এখনও আসছে তারা পড়েছেন ব্যাপক ভোগান্তিতে। সেব না নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। তারা অভিযোগ করেছে জাতীয়ভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সার্ভারটি কয়েক দিনের জন্য বন্ধ থাকবে, কিংবা এনআইডি সংক্রান্ত সেবা দেয়ার কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে, জনসাধারণকে এ বিষয়ে অবহিত করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়াটা জরুরী ছিল। কিন্তু ইসি বা তাদের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে এ জাতীয় কোন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। যে কারণে ১০ জানুয়ারি থেকে প্রতিদিনই ঢাকাসহ সারাদেশের হাজার হাজার মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তবে আব্দুল বাতেন বলেন, সার্ভিসে সমস্যা হচ্ছে, এটা আমরা ঘোষণা দিয়েছি। উপজেলা বা ইলেকশন কমিশনের ইটিআই ভবনে এ বিষয়ে নোটিস দেয়া আছে। যারা সার্ভিসটা নিতে আসবেন, তাদের জানানোর জন্যই অফিসগুলোয় নোটিস দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ১০ কোটি ৪২ লাখ ভোটার এবং যারা মারা গেছেন সব মিলিয়ে প্রায় ১১ কোটি ভোটারের ডেটা কিন্তু এই সার্ভারে। যখন আপ করছি তখন ৭০ ভাগ আপ হওয়ার পরই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই সমস্যার কারণে আবার নতুন করে শুরু করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, সার্ভারের মেয়াদের একটা আছে। প্রতিনিয়ত ভোটার হচ্ছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের সংশোধন, ভোটার স্থানান্তর হচ্ছে। এজন্য ডেটা সার্ভারের স্পেসেও প্রভাব পড়ছে। এজন্য আরেকটি প্রজেক্ট নেয়ার কথা ভাবছি। যেটাতে ডেটার জন্য স্পেস বাড়ানো হবে এবং যে সার্ভিসগুলো আছে সেগুলো আপডেট করা হবে। ওখানে সার্ভার কেনার এবং আপডেটের বিষয়ও আছে। এটি সম্পন্ন হলে আমরা আরও অনেক বেশি নিরবচ্ছিন্ন সার্ভিস দিতে পারব বলে আশা করি। ইসি সূত্র জানায়, সারাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার মানুষ এনআইডি সেবা নিয়ে থাকেন। গত ১০ জানুয়ারি সার্ভার বিকল থাকায় এসব মানুষকে সেবা না নিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে। কবে নাগাদ এই সেবা চালু হবে তা নিশ্চিত করে তারা জানতে পারছেন না। জানা গেছে ১০ বছরের পুরোনো এই সার্ভারটি এখন আর আগের মতো কাজ করছে না। তাছাড়া ১০ কোটি ৪২ লাখ ভোটারের তথ্য সংরক্ষণের পর এই সার্ভারে এখন আর যথেষ্ট পরিমাণে জায়গাও নেই। যন্ত্রটি ১০ জানুয়ারি বিকল হয়ে যাওয়ার পর যতবার তথ্য আপলোড করার জন্য দেয়া হয়েছে ততবারই অর্ধেক কাজ করার পর তা ভÐুল হয়ে গেছে। যে কারণে নতুন ভোটার হওয়া, ভোটার তথ্য সংশোধন এবং হারানো এনআইডি নতুন করে তোলাসহ নিবন্ধন সংক্রান্ত সব ধরনের সেবা দেয়ার কাজ বন্ধ আছে। তবে আর্থিক ও টেলিকমসহ অন্যান্য ১০৩টি প্রতিষ্ঠানকে সেবা দেয়ার কাজ অব্যাহত আছে।
×