ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা মহাসড়কে ধুলায় জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রকাশিত: ২৩:০৪, ২২ জানুয়ারি ২০১৯

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা মহাসড়কে ধুলায় জনজীবন বিপর্যস্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার। বাসস্ট্যান্ড এলাকা দিনরাত ধুলায় ধুসর থাকে। ফলে এই মহাসড়কে যাতায়াতকারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এতে বাড়ছে বিভিন্ন রোগ। মহাসড়কে ইটের সলিং এ ধূলার সৃষ্টির প্রধান কারণ। দীর্ঘদিন যাবত এই অবস্থার জন্য টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের গাফিলতিকেই দায়ি করছেন ভুক্তভোগীরা। জানা যায়, উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহসহ দেশের প্রায় ২৩ জেলার যানবাহন চলাচল করে এই মহাসড়ক দিয়ে। যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৪-১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বাসস্ট্যান্ডের অদূরে রয়েছে এলেঙ্গা সরকারি শামসুল হক কলেজ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এলেঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বালক উচ্চ বিদ্যালয়, হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি, বৃহত্তর বাজার, ব্যাংক, বীমা অফিস, হাসপাতাল ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ অনেক কল-কারখানা। ফলে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড দিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করেন। ধুলার কারণে মহাসড়কের পশ্চিম পাশ থেকে পূর্ব পাশের মানুষ দেখা যায় না। বাসস্ট্যান্ডে দুইপাশের দোকানগুলো ধুলায় সাদা হয়ে গেছে। বাসের জন্য অপেক্ষমান দাঁড়ানো যাত্রীরা মুখে কাপড় দিয়ে ধুলা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের হোটেল ও দোকানগুলোর খাবারের উপর ধুলার আস্তর লেগে আছে। বাসস্ট্যান্ডের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ধুলার কারণে আমাদের দোকানে ক্রেতা কম আসে এবং কেনাবেচা কম হয়। এদিকে ধুলার মধ্যে যাতায়াত করতে করতে এই এলাকার শিশু বৃদ্ধসহ মানুষের মধ্যে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রকম রোগ। এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর এসএম শহীদুর রহমান বলেন, অসহনীয় ধূলার কারণে আমাদের ডিউটি করা খুব কষ্টকর ও ভয়াবহ হয়ে পড়েছে। পুলিশ সদস্য ও সাধারণ মানুষ শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অতিদ্রুত এই অবস্থার সমাধান প্রয়োজন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুজা উদ্দিন তালুকদার বলেন, ধুলা মানব দেহে নিয়মিত প্রবেশ করতে থাকলে শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে ইনফেকশন এবং এ্যাজমা হবে। নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হবে, ঘ্রাণশক্তি কমে যাবে। এতে শিশু ও বৃদ্ধদের মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। এ বিষয়ে এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূর এ আলম সিদ্দিকী বলেন, ধুলার কারণে এই এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত। বিষয়টি আমি অনেকবার উপজেলা ও জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় বলেছি। গত ৯ মাসেও কোন কাজ হয়নি। এতো গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে ইটের সলিং এটা খুবই হাস্যকর এবং বেমানান। সড়কের বাকি অংশ পাকা করে জনগণকে ধুলার জ্বালা থেকে দ্রুত মুক্তি দেয়া উচিত। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী আমিমুল এহসান বলেন, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের ৩০০ মিটার সড়কে ইটের সলিং রয়েছে। এটুকু সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিউনাল ইকোনমিক কর্পোরেশন (সাসেক-২) কর্তৃপক্ষের পাকাঁকরণের কথা থাকলেও তারা করেনি। ইটের সলিং এবং যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে এই ধুলার সৃষ্টি হয়। জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এটুকু সড়ক অতি দ্রুত পাকাঁ করা হবে।
×