ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দক্ষ লিডারশিপের ম্যাজিকে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

দক্ষ লিডারশিপের ম্যাজিকে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আমরা একটা দক্ষ লিডারশিপ পেয়েছি যার ম্যাজিকে দেশ আজ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক। ২২ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এসডিজি রোড ম্যাপ প্রণয়ন শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ বলেই নেপালে ভূমিকম্পের সময় আমরা ২০ হাজার টন চাল সাহায্য করেছি। তিনি আরও বলেন, মানুষ এখন না খেয়ে আর মারা যায় না। দরিদ্র মানুষগুলোও পেট ভরে দুবেলা খেতে পারে। উত্তরবঙ্গে আর মঙ্গা নেই। সেখানকার মানুষ অনাহারে আর দিন যাপন করে না। আমরা ২০৩০ সালের ভেতর খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০১৩ সালেই দানাদার খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। এখন আমরা পুষ্টিজাতীয় খাদ্য উৎপাদনের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে চাই। দেশের মানুষের পুষ্টি খাদ্যর সমস্যা রয়েছে। সবাইকে পুষ্টিখাদ্যর আওতায় নিয়ে আসতে সরকার কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, এসডিজির রোড ম্যাপ লক্ষপূরণ করতে সবচেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের গুরিত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ কৃষির মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। পেটে যদি খাবার থাকে তাহলেও মানুষ তাদের সঠিক শ্রম দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে পারবে। তাই খাদ্য উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করতে হবে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রচুর পুষ্টিজাতীয় খাদ্য উৎপাদন করি, কিন্তু তা বিদেশে রফতানি করতে পারি না এটা আমাদের একটা ব্যর্থতা। তাই আমাদের নিজেদের পুষ্টিজাতীয় খাদ্যর চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করতে হবে। এতে করে দেশের অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে। কৃষকরা খাদ্য উৎপাদনের প্রকৃতমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই কৃষকদের সাহায্য করতে সরকার প্রতিনিয়ত কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, আমরা ৪ কোটি ১৩ টন খাদ্য উৎপাদন করেছি, যা ২০৩০ সালে লক্ষ্যমাত্রা ৮ কোটি টন খাদ্য উৎপাদন করা। আমরা কৃষি প্রাণিজ, মৎস্য এই তিন খাতেই ২০৩০ সালের ভেতর দ্বিগুণ উৎপাদন করতে দিনদিন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদনের নতুন ফর্মুলা বের করতে হবে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিদেশ থেকে আগে আমরা ১৪-১৫ ভাগ সাহায্য পাইতাম, কিন্তু ২-৪ ভাগ সাহায্য পাই। তাই নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণতা আরও বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, দারিদ্র্যতার সঙ্গে কৃষির একটা সম্পর্ক আছে। কৃষি যদি উন্নত হয় তাহলে দারিদ্র্যতাও হ্রাস পাবে। বর্তমানে দারিদ্র্যতার নিচে ২১ ভাগ মানুষ বাস করে। ২০৪১ সালে অতি দারিদ্র্যের হার শূন্যর কোটায় নামিয়ে নিয়ে আসা হবে। মূলত সরকারের সবার জন্য পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, আমি কৃষির সঙ্গে জড়িত একজন মানুষ। ২০০১ সালে চাকরি থেকে পদত্যাগ করে রাজনীতিতে চলে যায়। তাই এই কৃষি মন্ত্রণালয় আমার প্রাণের প্রতিষ্ঠান। বিএনপি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, তারা ২০১৪-১৫ সালের জ্বালাও-পোড়ায়ের কারণে দেশ অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছিল। তাদের জ্বালাও পোড়াও আর আগুন সন্ত্রাসের কারণে ৩০ ডিসেম্বর জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সঠিক নেতৃত্বের কারণে দেশ দিনদিন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, তারা দেশকে আবার অস্থির করতে পরিকল্পনা করছে। তাই আমাদের সবার সজাগ থাকতে হবে। বিএনপিকে এই সরকারের কাজে সাহায্য করার জন্য আমি অনুরোধ জানায়। এসডিজি রোড ম্যাপ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালরের এসডিজির বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য (সিনিয়র সচিব) সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশনের ড.সামসুল আলম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাসিরুজ্জাম এবং সম্মানীয় অতিথি ছিলেন ড. কাজী এম. বদরুদ্দোজা, এমেরিটাস সায়েন্টিস। কৃষিবিদ আব্দুল রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দক্ষতায় আজ সকল শাখাতে উন্নতের ছোঁয়া লেগেছে। কৃষি খাতও পিছিয়ে নেই। দেশ আজ খাদ্য পরিপূর্ণ। ২০৩০ সালের ভেতর খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ হবে। তিনি আরও বলেন, সবার সহযোগিতায় ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাজ করতে হবে এবং কৃষিখাতে প্রচুর গবেষণার প্রয়োজন তাই এই খাতে অতি জরুরীভাবে দক্ষ গবেষক নিয়োগ দেয়া উচিত। মূল বাজেট এর মাত্র পয়েন্ট ৬ শতাংশ গবেষণা খাতে ব্যয় করা হয়। গবেষণার বাজের আরও বৃদ্ধি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে সরকার এসডিজির রোড ম্যাপ প্রদর্শন করেন। সারাবিশ্বের মানুষের শান্তি, সমৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশে ২০৩০ সালের ভেতর ১৭টি লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার।
×