ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লবণাক্ততা মুক্তকরণ প্লান্ট

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

লবণাক্ততা মুক্তকরণ প্লান্ট

পৃথিবীর মোট পানির মাত্র আড়াই শতাংশ সুপেয় পানি বা খাবার পানি, যে পানির ৯৯ ভাগই জমাট বরফ হয়ে রয়েছে। এই অবস্থায় সারা বিশ্বের মানুষের জন্য বিপুল পরিমাণ খাবার পানির চাহিদা মেটাতে সমুদ্রের নোনা পানির ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার অধিকাংশ দেশসহ বিশ্বের ১৭৭টি দেশ বর্তমানে লবণাক্ততা মুক্তকরণ প্লান্টের মাধ্যমে সমুদ্রের পানি থেকে ব্রাইন (অতি লবণাক্ত পানি) ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ আলাদা করে খাবার পানিতে পরিণত করছে। তবে দুঃখের বিষয় হলো এই পদ্ধতিতে খাবার পানি উৎপাদনের ফলে বেশি পরিমাণে ব্রাইন ও বর্জ্য পদার্থ উৎপাদিত হচ্ছে। যা আবারও সমুদ্রে ফেলে দেয়ার ফলে পানি দূষণ ও সামুদ্রিক প্রাণীকুলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ইউনাইটেড নেশনস ইউনিভার্সিটির পানি, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘লবণাক্ততা মুক্তকরণ প্লান্ট’ বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ব্রাইন ও বর্জ্য পদার্থ উৎপাদন করেছে। এই পরিমাণের ব্রাইন ও বর্জ্য সব ফ্লোরিডাকে ঢেকে দিতে পারে। এছাড়াও কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, সমুদ্রের পানি থেকে প্রতি লিটার খাবার পানি উৎপাদন করতে গড়ে ০.৪ গ্যালন ব্রাইন ও অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ উৎপাদন হয়। এই হিসাবে বিশ্বজুড়ে ১৫ হাজার ৯০৬টি প্লান্টের থেকে প্রতিদিন ৩৭.৫ বিলিয়ন গ্যালন ব্রাইন ও বর্জ্য পদার্থ উৎপাদিত হয়। সারা বিশ্বের অর্ধেক ব্রাইন ও বর্জ্য পদার্থ উৎপাদিত হয় মধ্যপ্রাচ্যের চারটি দেশ সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে। নেদারল্যান্ডসের ওয়াগেনিনেন ইউনিভার্সিটির গবেষক এডওয়ার্ড জন্স জানিয়েছেন, ‘খাবার পানি উৎপাদন করতে সমুদ্র থেকে যে ব্রাইন এবং অন্য বর্জ্য উৎপাদন হয়, সেটি প্রাণীকুলের ওপর জটিল প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও খাদ্যশস্য ও পরিবেশের ক্ষতির কারণ হতে পারে এই বর্জ্য।’ তবে কানাডা, নেদারল্যান্ডস এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কয়েকজন গবেষক ডেসালিনেশন প্লান্টকে বর্তমান সময়ের জন্য বেশ উপযোগী বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলেছেন, ডেসলিনেশন প্লান্ট থেকে উৎপাদিত ব্রাইন ও বর্জ্য পরিকল্পিতভাবে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। যাতে এই বর্জ্য সামুদ্রিক বা অন্য কোন প্রাণীর জন্য হুমকি হয়ে না দাঁড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেসব দেশ খাবার পানির জন্য ডেসলিনেশন প্লান্টের ওপর নির্ভরশীল, তাদের উচিত এ সমস্যা সমাধানের জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করা। সমস্যাগুলো আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আগেই তা সমাধানের ব্যবস্থা করাই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত। -গিজমডো আর্থার
×