ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এম মনসুর আলীর জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তোফায়েল

শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা দেশ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা দেশ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নতুন মন্ত্রিসভার ভূয়সী প্রশংসা করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই স্বপ্ন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) একটি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। এই মন্ত্রিসভা দেশ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। মঙ্গলবার কাকরাইলের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মিলনায়তনে শহীদ জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ১০২তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, আমি তো অনেকবার মন্ত্রী ছিলাম। একদিন না একদিন তো জায়গা ছেড়ে দিতেই হবে। ব্যক্তিগত জীবনে ২৮ বছর বয়সে মন্ত্রী হয়েছি। এখন একঝাঁক নতুন এমপি দিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা করা হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাভাবিক অর্থে আমরাও অভিজ্ঞতা নিয়ে মন্ত্রী হইনি। মন্ত্রী হয়েই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। বিশ^াস করি নতুন মন্ত্রিসভা সেই অভিজ্ঞতা অর্জন করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমাপ্ত করবে। এই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিশে^ আরও মর্যাদাশীল হবে। আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা বলেন, বিএনপি বলেছে তারা পার্লামেন্টে যাবে না। একটি অবাধ নির্বাচন হয়েছে। মা-বোনেরা সারিবদ্ধভাবে ভোট দিয়েছে। এই নির্বাচনকেও তারা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। এই রকম একটি দিনের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছিল- কবে তারা সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে। যেখানে স্বাধীনতাবিরোধীরা থাকবে না। কবে বাংলাদেশের সংসদ হবে যেখানে বঙ্গবন্ধুর খুনীরা থাকবে না। এবার দেশের মানুষ গণভোটের মাধ্যমে এই রায় দিয়েছে। সেই লক্ষ্যও তাদের পূরণ হয়েছে। এবারের সংসদে খুনীও নেই, স্বাধীনতাবিরোধী তারাও নেই। এই সংসদ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শহীদ এম মনসুর আলীর পুত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ শহীদ এম মনসুর আলী, আমার সবচেয়ে বেশি গৌরব আমি শহীদ এম মনসুর আলীর সন্তান। খুনী মোশতাকের মতো বেইমানের সন্তান আমি নই। তিনি বলেন, এম মনসুর আলী মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলেন তবুও বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শের সঙ্গে বেইমানি করেননি। জাতীয় চার নেতার পরিবার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেইমানি করেনি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও বেইমানি করবে না। তিনি বলেন, ১৪ দলীয় জোট একটি আদর্শিক জোট। জোটে কোন ধরনের বিভ্রান্তি নেই, ছিলও না। ১৪ দল ছিল, আছে এবং থাকবে। এ সময় তিনি ১৪ দলের নেতাকর্মীদের তিনটি নির্দেশ দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চোখের মণির মতো দেখা, সরকারের ভুল ধরিয়ে দেখা এবং যে কোন চক্রান্ত মোকাবেলায় মাঠে থাকার কথা বলেন তিনি। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের এ বিজয় ধরে রাখতে হলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। এ বিজয়ে আমরা যেন আত্ম-অহমিকায় না ভোগী। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে ১৪ দলীয় জোট হয়েছে সেটি যেন অটুট থাকে। এবারের নির্বাচনে আমাদের নিরঙ্কুশ বিজয় এসেছে, এতে সন্দেহ নেই। তবে এই বিজয় সহজে এসেছে, এটা মনে করার কোন কারণ নেই। এ ধরনের বিজয় অনেক সময় আত্মম্ভরী করে তোলে, মনের মধ্যে এককেন্দ্রিক চিন্তা এসে যায়। আমাদের মনে রাখতে হবে, জনগণ সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এই ম্যান্ডেট দিয়েছে। আমরা যেন আত্মম্ভরী না হই। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে এম মনসুর আলী যে অবদান রেখেছেন তা ইতিহাসে বিরল। মনসুর আলীর রাজনৈতিক জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তিনি একজন দলবান্ধব এবং দেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন। ‘রক্তের উত্তরাধিকার থাকা দরকার’Ñ মন্তব্য করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার যেমন আজকের শেখ হাসিনা, তেমনি শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর উত্তরাধিকার আজকের মোহাম্মদ নাসিম ও তাঁর ছেলে জয়। একজন সফল রাজনীতিক শহীদ মনসুর আলীর সফল শিক্ষাজীবনের কথা বর্ণনা করে তিনি বলেন, শহীদ এম মনসুর আলী ১৯৪১ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি আলীগড় বিশ^বিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও আইনে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। তার (এম মনসুর আলী) অত্যন্ত মেধা আর জ্ঞানের প্রতিফলন তার কর্মজীবনে পড়েছে। মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ডাঃ আব্দুল আজিজ, এম মনসুর আলীর দৌহিত্র প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদের সভাপতি এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম ঠান্ডু প্রমুখ।
×