ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এনএআইডি সেবা চালু, উদ্বোধন করলেন মন্ত্রী

চোরাইপথে বিদেশ থেকে মোবাইল ফোন আনার দিন শেষ হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯

চোরাইপথে বিদেশ থেকে মোবাইল ফোন আনার দিন শেষ হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদেশ থেকে চোরাই পথে মোবাইল ফোন আনার দিন শেষ হচ্ছে। এজন্য বৈধ আমদানিকারক ও দেশী উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে ‘এনওসি অটোমেশন এ্যান্ড আইএমইআই ডাটাবেজ’ (এনএআইডি) চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তত্ত্বাবধানে মোবাইল ফোন ইম্পোটার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) আর্থিক সহায়তায় এনএআইডি কার্যক্রম চলবে। মঙ্গলবার ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বিটিআরসি ভবনে এ সেবার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলা হয়, নতুন মোবাইল কেনার ক্ষেত্রে প্যাকেটের গায়ে লেখা ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর (*#/,. ইত্যাদি বিশেষ চিহ্ন থাকবে না-শুধুমাত্র পনেরোটি নম্বর থাকবে)। ব্যবহৃত মোবাইলের ক্ষেত্রে *#০৬# চেপে প্রাপ্ত ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর ‘কেওয়াইডি’ ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে ১৬০০২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে আইএমইআই নম্বরটি বিটিআরসির ডাটাবেজে সংরক্ষিত রয়েছে কিনা তা জানা যাবে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, এই ডাটাবেজ উদ্বোধন তথ্যপ্রযুক্তির ইতিহাসে একটি মাইলফলক। অবৈধ সেট আমদানি প্রযুক্তি ছাড়া অন্য কোনভাবে ধরা সম্ভব না। সেটি এখন থেকে সম্ভব হবে। আমরা ডিজিটাল যত হচ্ছি ডিজিটাল অপরাধ প্রবণতা তত বাড়ছে। অপরাধের চরিত্র ডিজিটাল এবং এটি মোকাবেলার জন্য ডিজিটাল পদ্ধতি দরকার। প্রযুক্তি দিয়েই প্রযুক্তির মাধ্যমে করা অপরাধ শনাক্ত করতে হবে। অন্য কোন মাধ্যম দিয়ে তা করা সম্ভব হবে না। একরাতে সেনাবাহিনীর নামে ৭৬০ লিংক তৈরি করে গুজব ছড়ানো হচ্ছিল, এটা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন একটি বিষয় ছিল। কিন্তু ফেসবুকে বিটিআরসি সেটা শনাক্ত করে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের শনাক্ত করতে পেরেছে। দেশে মোবাইল ফোন তৈরি হচ্ছে। মাদারবোর্ড তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। পাশাপাশি বাংলাদেশে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হতে একটি কনসোর্টিয়ামে যুক্ত হতে যাচ্ছে। দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। ৫-জি থেকেও এক মুহূর্ত দূরে থাকতে চাই না। বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, ডাটাবেজ তৈরি করে অবৈধ বাজার বন্ধ এবং মোবাইল ফোন চুরি-ছিনতাই বন্ধ হবে। পাশাপাশি নিশ্চিত হবে রাজস্ব হারানোর ক্ষতি। এতে গ্রাহক লাভবান হবেন। বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ বলেন, আনুমানিক ৯ কোটি মানুষ ১৫ কোটি সিম ব্যবহার হয়। এজন্য আনুমানিক ১০ কোটি হ্যান্ডসেট ব্যবহার হয়। মানুষ ২৫-৩০ শতাংশ সেট অবৈধ বাজার থেকে কেনেন। ফলে সরকার এক হাজার থেকে ১২শ’ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। নিম্নমানের সেট স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। এই ডাটাবেজ তৈরি হওয়ায় রাজস্ব হারানো বন্ধ হবে এবং ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সেট নিয়ে আসলে ট্যাক্সসহ বা ট্যাক্স ছাড়া রশিদ দেবে, তাতে ওইসব হ্যান্ডসেট ব্যবহার করা যাবে। যারা ইতোমধ্যে নিয়ে এসেছেন তাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ, ভবিষ্যতে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) স্থাপিত হলে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। বিএমপিআইএ সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, এর মাধ্যমে মোবাইলের অসৎ ব্যবসায়ীরা আর থাকতে পারবে না। এতে দেশের টাকা দেশেই থাকবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বিটিআরসির কমিশনার আমিনুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
×