জবি সংবাদদাতা ॥ ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনের (ডাকসু) উদ্যোগ নেয়ার পর নড়ে চড়ে বসেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীরা। নতুন করে শুরু হয়েছে জকসু নির্বাচন উপলব্ধি। এতে মঙ্গলবার দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনা সভার বক্তরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ সংশোধনের মাধ্যমে জকসু নির্বাচনের জোর দাবি জানান। দাবি আদায় না হলে আন্দোলনে নামার কথাও উল্লেখ করেন তারা। জবি শাখা ছাত্রইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিনের নেতৃত্বে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের সুযোগ ও সম্ভাবনা থাকলেও জবির ক্ষেত্রে তা ব্যতিক্রম। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের অধ্যাদেশ যুক্ত হয় নি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়টি কলেজ থাকা অবস্থায় ১৪টি ছাত্রসংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে জবি আইন ২০০৫ এ নির্বাচনের বিধান যুক্ত না থাকলেও ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হলেই তারা বিশেষ প্রক্রিয়ায় জকসু নির্বাচনের আয়োজন করবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের মধ্যে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন শাখা ছাত্রলীগ বলছে স্বাধীনতার স্বপক্ষের সকল ছাত্রসংগঠন অংশগ্রহন করলেও জামাত ইসলামের মদদপুষ্ট ছাত্রসংগঠন শিবিরের অংশগ্রহন মানা হবে না।
এদিকে ছাত্রসংসদ নির্বাচিত নেতাদের মাধ্যমে জাতীয় নেতৃত্বে গুনগত পরিবর্তন এখন আর সম্ভব নয় এবং এই নির্বাচনের মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি তাদের রূপ পরিবর্তন করে ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে ঢুকে পড়ার ব্যাপক আশঙ্কা প্রকাশ করে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.মীজানুর রহমান বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাংস্কৃতিক চর্চা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া, জাতীয় নেতৃত্বে গুনগত পরিবর্তন আসবে এমনটা বলা হচ্ছে। কিন্তু আশি-নব্বই এর দশকে আমান উল্লাহ আমান, সুলতান মনসুর এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার মত কয়েকবার দল পরিবর্তন করী পল্টিবাজ নেতা এই ছাত্রসংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতিক চর্চার বিষয়ে বলেন, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ নির্বাচিত নেতা ছাড়া যথেষ্ট সংস্কৃতির চর্চা হচ্ছে।
বিশেষ করে জবিতে শিক্ষক-ছাত্রছাত্রী মিলে বিভিন্ন সময় নাটক, চলৎচিত্র উৎসব, পূজা পর্বন, গানের অনুষ্ঠান, আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিড়া প্রতিযোগিতাসহ নানা ধরণের সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এগুলো কি সংস্কৃতিক চর্চায় যথেষ্ঠ নয়? এছাড়া জকসু নির্বাচনে রয়েছে আইনি বাঁধা। তবে ডাকসু নির্বাচন হলে আমরাও সমস্ত আইনি বাঁধা সংশোধন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করব।
ছাত্রসংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি করতে স্বাধীনতা বিরোধী ছাত্রসংগঠন অনু প্রবেশ করতে না পারে এদিকে বিশেষ সতর্ক থাকার কথা উল্লেখ করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, এজন্য আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে।
এছাড়া জবি শাখা ছাত্রলীগের প্রচেষ্টায় ২০০৮ সালের পর এখনও পর্যন্ত এই ক্যাম্পাসে কোন শিবির বা ছাত্রদলের কর্মতৎপরতা চোখে পড়ে নি। আর তারা ক্যাম্পাসে ঢুকতেও পারবে না। তবে উন্নয়ন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন জরুরী।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: