ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অদক্ষ চালক ফিটনেসবিহীন গাড়ি

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯

অদক্ষ চালক ফিটনেসবিহীন গাড়ি

চলমান জীবনে প্রতিটি মুহূর্তেই আমাদের নানামুখী যুদ্ধের সম্মুখীন হতে হয়। কেউ জীবন যুদ্ধে বিজয়ের বেশে হাসি মুখে পরিবারের কাছে ফিরে আসতে পারে আবার অনেকেই পারে না। বিজয়ের খুব কাছাকাছি যেয়েও অনেককে নির্মমভাবে হারতে হয়। পরাজিত হতে হয় অনিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনার কাছে। যে বাহন সময় বাঁচিয়ে দ্রুত কর্মস্থলে পৌঁছিয়ে দেয় ঠিক সেই বাহনই নির্মমভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। প্রত্যক্ষভাবে যদিও দেখা যায় যানবাহনই প্রতিনিয়ত কেড়ে নিচ্ছে তাজা প্রাণ কিংবা দেশের আগামীর কর্ণধারদের। কিন্তু প্রত্যক্ষভাবে যানবাহন নয় বরং এই যানবাহন নিয়ন্ত্রণকারী কিছু লোভী মানুষই একের পর এক কেড়ে নিচ্ছে আমাদের প্রিয় মানুষদের। যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে। কিন্তু মহসড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হচ্ছে না। যদিও গেল বছর তরুণ সমাজ ও শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে চোখে আঙ্গুল দিয়ে ট্রাফিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দিয়েছে। সরকারও শিক্ষার্থীদের সাধুবাদ জানিয়ে তাদের সকল দাবি মেনে নিয়ে সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু কই এখনও তো প্রতিনিয়তই সড়কের আজরাইলরা কেড়ে নিচ্ছে অজ¯্র তাজা প্রাণ। কেড়ে নিচ্ছে কষ্টিপাথরের প্রলেপ দ্বারা বেষ্টিত স্বপ্নিল প্রজন্মকে। শিক্ষার্থীরা যেখানে রাস্তায় আন্দোলন করে সরকারকে নিরাপদ সড়কের দাবি মেনে নিতে বাধ্য করেছে। সেখানে এখনও কেন সেই সড়কেই তাদের প্রাণ দিতে হচ্ছে। আগেই বলেছি সড়কের কী আর দোষ। আর গাড়িরই বা কতটুকু দোষ? বলতে চাচ্ছি এসব গাড়ি যারা রাস্তায় নামাচ্ছেন এবং যারা গাড়িতে করে মহাসড়ক দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন ঠিক তাদেরই তো দোষ হওয়ার কথা। একদিকে আনফিট লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা গাড়ি অধিক লাভের আশায় সড়কে দেদার নামাচ্ছে। অন্যদিকে অদক্ষ এবং অক্ষর জ্ঞানহীনসম্পন্ন লোক দিয়ে এই সমস্ত গাড়ি চালানো হচ্ছে। যার ফলে ট্রাফিক আইন বা ট্রাফিক সিগনাল না বুঝেই দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের। রাজনৈতিক বলয়ে অনেকে দীর্ঘদিনের পুরনো গাড়ি নতুনরূপে রাঙিয়ে রোড পারমিশন ছাড়াই মহাসড়কে নামিয়ে মৃত্যুর খেলায় মেতে উঠেছে। এ সমস্ত লোভাতুর মানুষজনই কিন্তু আবার মহাসড়কের পাশের ফুটপাথ দখল করে হকারদের কাছ থেকে ভাড়া তুলছে। ফুটপাথ দখল করার কারণে পথচারীদের চলাচলের জায়গায় অসুবিধা হওয়ায় তারা বাধ্য হয়েই সড়ক ধরে হাঁটতে থাকে ফলে অবিরতই ঘটছে দুর্ঘটনা। আবার অনেক পথচারীও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করার কারণেও দুর্ঘটনার শিকার হয়। সুতরাং শুধুমাত্র নতুন নতুন সড়ক নির্মাণ, ফ্লাইওভার ও ফুটওভার ব্রিজ করলেই এ সমস্ত দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না। পথচারী, গাড়ি মালিক সমিতি ও সর্বোপরি চালক এবং হেলপারদের আরও সচেতন হতে হবে। চালক ও হেলপারদের ভাবতে হবে নিজেদের সন্তানরাও গাড়িতে যাতায়াত করে সুতরাং অন্যের সন্তানদেরও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছিয়ে দেয়ার পবিত্র দায়িত্ব তাদের। সবমিলিয়ে আমরাও আশা করতে পারি যেহেতু টানা তৃতীয়বারের মতো দেশের হাল ধরেছেন আওয়ামী লীগ সরকার। সেহেতু দেশকে যেমন তথ্যপ্রযুক্তিতে সফলতার স্বর্ণশিখরে পৌঁছিয়ে দেয়ার খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে ঠিক তেমনইভাবে নিরাপদ সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবেন। গাজীপুর থেকে
×