ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চুয়াডাঙ্গায় মাথাভাঙ্গা নদী থেকে বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯

চুয়াডাঙ্গায় মাথাভাঙ্গা নদী থেকে বালু উত্তোলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা, ২৩ জানুয়ারি ॥ দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের দমদমা মাঠ এলাকায় অবৈধভাবে মাথাভাঙ্গা নদী খনন করে মাটি তুলে ইটভাঁটিতে বিক্রি করছে সমাজ বিরোধীরা। যেখানে সেখানে ড্রেজার দিয়ে মাটি তোলার কারণে নদী ভরাট হয়ে এবং ওপরের ব্যক্তি মালিকনা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এরপরেও ভয়ে সমাজ বিরোধীদের এ অপকর্মের ব্যাপারে কেউ মুখ খুলছে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫টি ট্রাক্টর মাটি নেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছে আর মাথাভাঙ্গা নদীর পাড়ের অংশে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে ট্রাক্টরের ডালায় ঢালছে শ্রমিকরা। উজিরপুর দমদমা মাঠ এলাকার নদীর ধারে অনেক দিন থেকে বসবাস করে আসছে জবেদের দুছেলে মহব্বত ও সানোয়ার। এরা দুভাই মাঠেঘাটে শ্রম বিকিয়ে জিবিকা নির্বাহ করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বৃদ্ধা জানায়, গত ১০ দিন ধরে প্রতিদিন কয়েকশ গাড়ি মাটি নদীর পাড় থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইটভাঁটির মালিকরা প্রতি সেপটি মাটি ৫ অথবা ৬ টাকা দরে কিনছে। এতে করে ট্রাক্টরের প্রতি ডালা মটির দাম পড়ছে ১ হাজার টাকা করে। সমাজ বিরোধীদের দেখিয়ে দেয়া স্থান থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে তুলে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাঁটি মালিকরা। সে কারণে সমাজ বিরোধীদের কোন খরচ না থাকায় তাদের পুরো টাকাটাই লাভ। এর ফলে ইটভাটার মালিকরা মাটি সংগ্রহের কাজে তাদের কাজে লাগাচ্ছে। সেখানকার কয়েকজন অভিযোগ করেন, দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গাঙপাড়ার মরহুম আকবারের ছেলে ও দামুড়হুদা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একরামুল, ওই গ্রামের মোল্লাপাড়ার মরহুম মকছেদের ছেলে আকুব্বার আকু, স্কুলপাড়ার মরহুম লোকমান বিশ্বাসের ছেলে মতিসহ যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতা এই অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে মাটি কাটা কাজের সঙ্গে জড়িত। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ না করার কারণে এরা তাদের অপকর্ম নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গার একজন প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার ৩টি ইটভাঁটির মালিক ইকবাল মাহমুদ টিটু বলেন, ইট তৈরির কাজে মাটি প্রয়োজন। কিন্তু চুয়াডাঙ্গায় মাটি পাওয়া দুষ্কর হচ্ছে। সেকারণে মাটি সংগ্রহে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেক সরবরাহকারী ইটভাঁটির মাটি সরবরাহের সময় ব্যক্তি মালিকানা জমি থেকে মাটি কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে তাদের জানায়। কিন্তু সেটা কোথা থেকে আনা হয় তা দেখা সম্ভব হয় না। এছাড়া গেল জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ নদী খনন ও বালি উত্তোলন কাজে উৎসাহিত করত। সে সময় ইটভাঁটি মালিকরা মাথাভাঙ্গা ও চিত্রা নদী ও নবগঙ্গা খাল কেটে সেখান থেকে মাটি সংগ্রহ করত। বর্তমান জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস যোগদানের পর নদী ও খাল থেকে মাটি না কাটার নির্দেশ জারি করেন।
×