ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘উন্নয়নের নতুন দিগন্ত’ সাহেবেরহাট সেতু

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯

‘উন্নয়নের নতুন দিগন্ত’ সাহেবেরহাট সেতু

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ উন্নয়নের নতুন দিগন্তে সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই দরবার শরিফসহ গোটা ইউনিয়নের সাথে বরিশাল মহানগরীর সরাসরি সড়ক সংযোগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংযোগ সড়কসহ সাহেবেরহাট সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নদী বেষ্টিত এ ইউনিয়নটিকে বরিশাল মহানগরীর সাথে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌনে সাতশ’ ফুট দীর্ঘ একটি পিসি গার্ডার সেতু এবং এক কিলোমিটার সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। ফলে বরিশালের সাথে চরমোনাই হয়ে বিচ্ছিন্ন উপজেলা হিজলা, মুলাদী ও মেহেদিগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ সহজতর হলো। বিশেষ করে সেতুটি নির্মাণের ফলে প্রতিবছর চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিলে দেশের দূর-দুরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের চরমোনাই দরবারে যাতায়াতও সহজতর হয়েছে। সূত্রমতে, এতোদিন মাহফিলে আসা লাখ লাখ মুসল্লিগণ কীর্তনখোলা ও সাহেবেরহাট নদী নৌকায় পার হয়ে দরবারে যাতায়াত করতেন। যে কারনে প্রতিবছরই ছোট-বড় দুর্ঘটনায় অনেক জানমালের ক্ষতি লেগেই ছিলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএ’র আপত্তির মুখে দুই দফায় নকশা সংশোধন করে সেতুটির উচ্চতা বৃদ্ধি ও সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য সম্প্রসারিত করে নির্মাণ শেষে অতিসম্প্রতি সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছে এলজিইডি। দুইটি এ্যাবাটমেন্টের ওপর প্রায় ৬৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৮ ফুট প্রস্থ এ সেতুটি চারটি পিলারে পাঁচটি স্প্যানে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার টাইপের সেতুটির নকশা প্রনয়ন করেছেন এলজিইডির প্রকৌশলীগণ। সেতুর মূল স্প্যানটি সাহেবেরহাট নদীর সর্বোচ্চ জোয়ার থেকে ২৬ ফুট উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে সেতুটির তলদেশ দিয়ে অনধীক একশ’ ফুট দৈর্ঘের যাত্রীবাহী নৌযান ছাড়াও তিনশ’ টন বহনক্ষম পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করতে পারবে। সেতুটি নির্মাণের ফলে নদী বেষ্টিত চরমোনাই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ বরিশাল মহানগরী হয়ে সারাদেশের সাথেই সড়ক যোগাযোগের আওতায় এসেছে। স্থানীয়রা জানান, এতোদিন বরিশাল মহানগরীর দুটি খেয়াঘাট থেকে দেশীয় যন্ত্রচালিত নৌকায় করে উত্তাল কীর্তনখোলা নদী পাড় হয়ে চলাচল করতে হতো এ ইউনিয়নসহ পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষকে। আবার কেউ কেউ সড়ক পথে বরিশাল-ভোলা মহাসড়কের সাহেবেরহাট ঘাটে এসে সেখান থেকেও নদী পাড় হয়ে চরমোনাই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতেন। এমনকি জেলা ও বিভাগীয় সদরের সাথে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ না থাকায় এতোদিন চরমোনাই ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগ অবকাঠামোর তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। সাহেবেরহাট সেতু নির্মাণের ফলে ‘আলোর নিচে অন্ধকার’ খ্যাত চরমোনাই ইউনিয়ন দেশের উন্নয়নের মূল ধারায় সংযুক্ত হবে বলেও আশা করছেন এলাকাবাসী।
×