ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রিহ্যাব মেলা

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 রিহ্যাব মেলা

নাগরিক অধিকারের পাঁচ মৌলিক চাহিদার একটি বাসস্থান। সময়ের মিছিলে এই ব্যাপক কর্মদ্যোতনটি ব্যক্তিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ না থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন কোম্পানি এবং স্বল্পসুদে ঋণদান সংস্থার আওতায় চলে এসেছে। সঙ্গত কারণে বর্তমানে গৃহায়ন ব্যবস্থায় স্বল্প আয়ের মধ্যবিত্ত শ্রেণী যারা অধিক অর্থ ব্যয়ে বাসস্থান তৈরিতে হিমশিম খায় তাদের জন্য এমন সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রকল্প সচ্ছল জীবনযাত্রার এক নবতর সংযোজন। ফলে বাসস্থান তৈরির এই জনবান্ধব প্রকল্প আজ অনেক মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁইকে তাদের হাতের নাগালে পৌঁছেও দিচ্ছে। এমন বৃহৎ কর্ম আয়োজনকে সামনে রেখে ৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার শুরু হয়েছে আবাসন প্রকল্প প্রতিষ্ঠান রিহ্যাবের ৫ দিনব্যাপী এক মহতী মেলার উদ্বোধন। সতর্ক থাকা দরকার যাতে আবাসন প্রকল্পে সংশ্লিষ্টরা কোনভাবেই প্রতারণার খপ্পরে না পড়ে। আবাসন প্রতিষ্ঠান এবং ঋণদান সংস্থাগুলো কোন ধরনের অপকৌশল যাতে গ্রাহকদের ওপর চাপিয়ে দিতে না পারে সে ব্যাপারেও প্রকল্পের ব্যবসায়ী এবং ঋণদাতাদের সজাগ ও সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরী। সাধারণ মানুষ যারা স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে কোন আবাসন ব্যবসায়ীর কাছে বাসস্থান নির্মাণের সমস্ত শর্ত পালন সাপেক্ষে অর্থ লগ্নি করে সেখানে তারা কোন অনিয়ম কিংবা বিশৃঙ্খলার শিকার হলে তা চিহ্নিত করা সংগত। শুধু তাই নয়, আবাসন উদ্যোক্তাদের বিধিসম্মত উপায়ে পরিবেশ সুরক্ষায় ভবন তৈরিতে মনোযোগ দেয়া জরুরী। বর্তমান যান্ত্রিক সভ্যতা পরিবেশবান্ধব আবহ তৈরিতে যে পরিমাণ সঙ্কটের আবর্তে পড়ছে বহুতল ভবন নির্মাণ তেমন আশঙ্কাকে যেন অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অতিক্রম করতে পারে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের সে ব্যাপারেও নজরদারির প্রয়োজন আছে। ভবন নির্মাণে সমস্ত আইনানুগ ব্যবস্থাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় এনে প্রকল্প বাস্তবায়নে যেন কোন ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার সুযোগ না থাকে সেই দিকটাও ভাবা বিশেষ জরুরী। সুপরিকল্পিত স্থাপনা তৈরিতে যেমন বিধিনিষেধ দেয়া আছে তাকে আমলে নিতে না পারলে পুরো কর্মপরিকল্পনা শুধু যে অনিয়মের করলে পড়ে তা নয়, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়ও পৌঁছে যায়। ইতোমধ্যে হয়ে যাওয়া অনেক বাসস্থান প্রকল্পে রাজউকের তদন্ত সাপেক্ষে বিভিন্ন অনিয়মও ধরা পড়েছে যা কোনভাবেই আবসান আইনের পর্যায়ে পড়ে না। এসব অব্যবস্থাকে আমলে নিয়ে আবাসন ব্যবসায়ীরা যাতে আরও বেশি করে আইনী প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দেন সে ব্যাপারেও নির্দেশনা থাকা উচিত। চলমান রিহ্যাবের বৃহৎ মেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক আবাসন কোম্পানিগুলোর বিশেষ মূল্য ছাড়। ঋণদাতা সংস্থাও স্বল্প সুদে অর্থ দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও মেলার গ্রহণযোগ্যতাকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যায়। বিশেষ করে আইনসিদ্ধ যথার্থ কাগজপত্রের মাধ্যমে একদিনেই ঋণ প্রদান করা হবে বলে মেলা কর্তৃপক্ষ জানায়। শুধু তাই নয়, নারীদের বেলায় আরও বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থাও রয়েছে বলে জানা যায়। এই মেলাতে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার গৃহঋণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংক। ভবন নির্মাণের সার্বিক নিরাপত্তাও এই মেলার নজরদারিতে। সাধারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ যাতে নিরাপদে, নির্বিঘ্নে অর্থ বিনিয়োগ করে আবাসন ব্যবসায়ীদের ওপর ভরসা করতে পারে তেমন সম্ভাবনাও মেলাকে সবার কাছে গ্রহণীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়। অর্থ বিনিয়োগকারী ঋণ গ্রহীতারা এই রিহ্যাব মেলায় অংশ নিয়ে একটি নিরাপদ বাসভবনের আকাক্সক্ষায় আবাসন কোম্পানিগুলোর চারপাশে অবস্থান করতে থাকে। একটি বাসযোগ্য, সুন্দর, নিরাপদ গৃহের প্রত্যাশায় স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষ সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় অনেক কিছু দিতে প্রস্তুত। এমন মহতী উদ্যোগ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জনগোষ্ঠীতে কেমন কার্যকরী ভূমিকা রাখবে এখন সেটাই দেখার বিষয়।
×