নিজস্ব সংবাদদাতা রূপগঞ্জ, ১০ ফেব্রুয়ারি ॥ নারায়ণঞ্জের রূপগঞ্জে সবুজ বাংলা মাল্টিপারপাস নামের একটি সমিতির বিরুদ্ধে স্থানীয় কৃষকদের কোটি টাকারও বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সমিতির প্রতারণার শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে এখানকার সহজ-সরল কৃষকরা। ওই সমিতির প্রতারকদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও টাকা ফেরত দেয়ার দাবিতে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছেন। রবিবার দুপুরে রূপগঞ্জ থানার সামনে অবস্থান নিয়ে এসব কর্মসূচী পালন করেন তারা।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, প্রায় ১০ বছর আগে রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাগবেড় এলাকায় সবুজ বাংলা মাল্টিপারপাস নামের একটি সমিতি গড়ে তোলেন স্থানীয় মৃত আফজাল হোসেনের ছেলে যুবদল নেতা রুহুল আমিন। ওই সমিতির নামে একটি ব্যাংক খোলা হয়। ওই ব্যাংকে অধিক পরিমাণে লাভ দেয়া হবে বলে স্থানীয় কৃষকদের আশ্বাস দেয়া হয়। এরপর কৃষকরা পূর্বাচল উপশহরের প্লট বিক্রিসহ আশপাশের বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের কাছে জমি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা ওই ব্যাংকে রাখেন। কিন্তু ১০ বছর পার হয়ে গেলেও লাভের টাকা দেয়া দূরের কথা, আসল টাকাও দিচ্ছে না। প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা রুহুল আমিনের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন কাজ হয়নি। বিভিন্ন গ্রাহককে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। বর্তমানে নিজের অপরাধ ঢাকতে যুবদল নেতা থেকে যুবলীগ নেতা বনে গেছে। যুবলীগ নেতা বনে যাওয়ার পর থেকে রুহুল আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। তার বিরুদ্ধে জ্বালাও পোড়াও একাধিক মামলাও রয়েছে।
বিশেষ করে গ্রাহকরা প্রতারণার শিকার হয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ দায়েরের পরও কোন সুরাহ পাচ্ছে না ভুক্তভোগী এসব কৃষকরা। বাধ্য হয়ে তারা থানার সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী দিয়েছেন। তবে পুলিশ প্রশাসন ভুক্তভোগীদের তাদের টাকা ফিরিয়ে দেয়া এবং প্রতারক রুহুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বলে আশ্বাস দিলে গ্রাহকরা শান্ত হয়।
ইতোমধ্যে স্থানীয় নিশিকান্তের ৪ লাখ, আতাবরের ১ লাখ ২৪ হাজার, শহর আলীর ৫ লাখ, বাতেন মোল্লার ২ লাখ, নাবিয়ার ১ লাখ ৮০ হাজার, কামরুন্নাহারের ৫০ হাজার, সোনাবানুর ২ লাখ ২০ হাজার, রহিমার ২ লাখ, মিনারার ৪ লাখ ৭৫ হাজার, নিলুফার ৪ লাখ, প্রিয়াংকার ৫০ হাজার, শান্তিরঞ্জন ৮৫ হাজার, আনোয়ারা বেগম ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রূপগঞ্জ থানা ও নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা ও সাধারণ ডায়েরি রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় বিষয়ক অফিসার হাফিজা বেগম বলেন, আমার কাছেও অভিযোগ রয়েছে। গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে সবুজ বাংলা মাল্টিপারপাসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রুহুল আমিনকে চাপ দেয়া হচ্ছে। চাপের মুখে পড়ে কিছু টাকা পরিশোধও করেছে। সকলের টাকা পরিশোধ না করলে আমাদের পক্ষ থেকেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: