ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাঁশখালীতে ইট ভাটায় পুড়ছে বনের কাঠ, পরিবেশ হুমকিতে

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বাঁশখালীতে ইট ভাটায় পুড়ছে বনের কাঠ, পরিবেশ হুমকিতে

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী ॥ পুড়ছে কাঠ, পুড়ছে মাটি, জ্বলছে পরিবেশ। দিনের পর দিন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলি জমিতে গড়ে উঠছে অবৈধ ইট ভাটা। সেই ইট ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে পাহাড়ের কাঠ ও মাটি। যত্রতত্র ভাবে মাটি ও কাঠ পুড়ার ফলে পরিবেশ বিনষ্টের হুমকিতে পতিত হচ্ছে। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার ৩টি ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতি ইট ভাটায় ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করে। কিন্তু তাতেই থেমে নেই ইট ভাটা কাঠ ও মাটি পোড়ানোর প্রতিযোগিতা। তবে পরিবেশ ও বন অধিদপ্তর অদৃশ্য কারণে দীর্ঘদিন অভিযান পরিচালনা হতে বিরত রয়েছে এই উপজেলার ইট ভাটা গুলোতে। যার দরুন ইট ভাটা মালিকগণ বেপরোয়া হয়ে ফসলী জমির উর্বর মাটি ও পাহাড়ের কাঠ পোড়াতে দ্বিধাবোধ করছে না। আজ সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বাঁশখালা ও ইলশা গ্রামে গিয়ে দেখা যায় শতাধিক একর ফসলি জমির মাঝখানে গড়ে উঠেছে আল্ মদিনা ও চৌধুরী ব্রিকস নামে ৩টি অবৈধ ইট ভাটা। এই ইট ভাটা গুলোতে প্রতিনিয়ত পোড়ানো হচ্ছে পাহাড়ি কাঠ ও ফসলি জমির মাটি। তাছাড়া এই ইট ভাটা গুলোতে অত্যাধুনিক পরিবেশ সম্মত কয়লা ও চিমনী ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। যার দরুন ইট ভাটায় পোড়ানো ধোয়া ইট ভাটা সংলগ্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব। সূত্রমতে, উপজেলায় বাহারছড়ায় ৩টি, চাম্বলে ১টি, শেখেরখীলে ১টি ও বাঁশখালী-সাতকানিয়া সীমান্তের চূড়ামণি এলাকায় ৩টি ইটভাটা রয়েছে। বাঁশখালী-সাতকানিয়া সীমান্তের চূড়ামণি পাহাড়ি এলাকায় অবৈধ ভাবে বনের কাঠ পোড়াচ্ছে ওই ইটভাটা গুলোতে। ফলে আশেপাশের পরিবেশের চরম বিপর্যয় ঘটছে। এছাড়াও লোকালয়ের ইটভাটা গুলোতে সঠিক ভাবে চিমনী ব্যবহার না করাতে কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। ফলে গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে সবার মাঝে। অপরদিকে কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর ফলে দিন দিন বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়ছে পরিবেশ ও বনাঞ্চল। একটি গ্রুপ পাহাড়ি মাটি কেটে ইট ভাটা গুলোতে সরবরাহ করছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। এদিকে পাহাড় থেকে মাটি কেটে ইট ভাটা গুলোতে নিয়ে আসার ফলে দিন দিন বিনষ্ট হচ্ছে পাহাড়ি ভূমি। ইট ভাটা গুলোতে কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে ইট ভাটার মালিকগণ কয়লার সংকটের কারণে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবী করেন। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ কয়লার চেয়ে কাঠের দাম কম হওয়ায় ইট ভাটা গুলোতে প্রতিনিয়ত বেপরোয়া ভাবে পোড়াচ্ছে অবৈধ কাঠ। দিনের পর দিন এসব ইট ভাটা গুলোতে বেপরোয়া ভাবে বনের কাঠ পুড়তে থাকলেও প্রশাসনের যেন কিছুই করার নেই। বনাঞ্চল ও লোকালয়ে গড়ে উঠা এসব ইট ভাটা গুলোতে পাহাড়ি মাটি ও গাছ পোড়ানো বন্ধে অচিরেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
×