সংসদ রিপোর্টার ॥ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বাধীন গণমাধ্যম ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ বর্তমান সরকারের সাফল্যের অন্যতম মাইলফলক। সরকার সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন করা হয়েছে। গত বছরের ১ মার্চ সংবাদপত্রের গণমাধ্যমকর্মীর শতকরা ৪৫ ভাগ মহার্ঘ ভাতা দেয়া হচ্ছে। ওয়েজ বোর্ড কর্তৃক দাখিলকৃত রোয়েদাদের সুপারিশমালা পরীক্ষা শেষে শীঘ্রই গেজেট প্রকাশ করা হবে।
ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে একাধিক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলমের এ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে একটি মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির সভাপতি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে, যিনি দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন। ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্টেক-হোল্ডারদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আমরা আশাবাদী, শীঘ্রই ওয়াজ বোর্ড রোয়েদাদের গেজেট প্রকাশের পর তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রতœার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে যুগান্তকারী উন্নয়নে দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে সারাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৪০ লাখ, আর এখন ৮ কোটির উপরে। আর অনলাইন মিডিয়া কয়েক হাজার। আমরা অনলাইন নীতিমালা করছি। দেশের সমস্ত অনলাইন মিডিয়াকে নীতিমালার আওতায় নিবন্ধিত হতে হবে। তিনি বলেন, অনলাইন মিডিয়ার জন্য একটি অনলাইন নীতিমালার খসড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হবে। মন্ত্রী পরিষদে অনুমোদিত হলে সম্প্রচার কমিশন গঠন করা হবে। সেক্ষেত্রে সকল অনলাইন মিডিয়াকে অবশ্যই নিবন্ধন নিতে হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি অনলাইন মিডিয়ার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।
সরকারী দলের জ্যেষ্ঠ এমপি আবদুল মান্নানের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ জানান, গণমাধ্যমের দিক থেকে বগুড়া জেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে সংসদ সদস্য আমার কাছে বগুড়ায় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার যে কার্যালয়টি বন্ধ করা হয়েছে তা চালুর জন্য চিঠি দিয়েছেন। কার্যালয়টি শীঘ্রই বগুড়ায় পুনরায় চালু করা হবে।
সরকারী দলের এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বেসরকারী টিভি চ্যানেলের সংখ্যা ৪৪। সম্প্রচার আছে ৩৩। প্রয়োজনের নিরিখে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অনেক চ্যানেলের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী কর্মকা- প্রচারের অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, কিছু বেসরকারী টিভি চ্যানেলে যে মিথ্যা ও বানোয়াট খবর সম্প্রচার করা হয়, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ওয়াকিবহাল রয়েছে। অচিরেই সব বেসরকারী টিভি চ্যানেলের বার্তা প্রধানদের ডেকে বৈঠক করব। সেখানে আর যেন মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার না করা হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেব।
সরকারী দলের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ জানান, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে অনেক সাংবাদিককে আর্থিক ও চিকিৎসা সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতা পেশা ও স্বাধীনভাবে তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
