ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সোয়াইন ফ্লু

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সোয়াইন ফ্লু

* সোয়াইন ফ্লু (অপর নাম মেক্সিকান ফ্লু, পিগ ফ্লু, সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা) এক ধরনের সংক্রামক ব্যাধি যার দ্বারা মূলত মানুষের শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হয়। * সোয়াইন ফ্লু সাধারণত সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস বা শুকুরজাত ইনফ্লয়েঞ্জা ভাইরাস দ্বারা হয়ে থাকে। * অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতো সোয়াইন ফ্লুর জীবাণুও একইভাবে ছড়ায়ে থাকে। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ ভাইরাস বাতাসে ছড়ায়। তারপর বিভিন্ন নিত্য ব্যবহার্য বস্তুর ওপর এই ভাইরাসগুলো লেগে থাকে, যখন সুস্থ ব্যক্তি এই নিত্য ব্যবহৃত বস্তু যেমন রিমোট কন্ট্রোল, এটিএম বুথের বোতাম, দরজার হাতল বা বা কম্পিউটারের কিবোর্ডে লেগে থাকা জীবাণুর সংস্পর্শে আসে তখন এই রোগ ছড়ায়। * শুকুরের ফার্মে কর্মরত ব্যক্তিরাও আক্রান্ত হতে পারে শুকুরের কাছ থেকে। তবে শুকুর থেকে ছড়ানো ভাইরাসের জেনেটিক অভিযোজন ঘটে এবং পরে তা মানুষের শরীরের রোগ ছড়ানোর উপযোগী হয়। * সাধারণত হাঁচি, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, গা, হাত-পায়ে ব্যথা হয়ে থাকে উপসর্গ হিসেবে। অবসাদ ও ডায়েরিয়াও দেখা যায় কোন কোন ক্ষেত্রে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি * সাধারণত ৬৫ বছরে উপরে এবং ৫-এর নিচের বয়স ঝুঁকিপূর্ণ। * যারা বহুদিন ধরে কাশিতে ভুগছে তারা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি। * যারা বহুদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছে তারা ঝুঁকিপূর্ণ। * গর্ভবতী মহিলারা ঝুঁকিপূর্ণ মারা যায় সাধারণত * শ্বাস ক্রিয়ার অকার্যকারিতার জন্য। * নিউমোনিয়ার কারণে। * অতি উচ্চ তাপমাত্রার কারণে। * ডায়েরিার পানিশূন্যতার জন্য। * শরীরের লবণের ভারসাম্যহীনতার জন্য। * কিডনির অকার্যকারিতার জন্য। রোগ নির্ণয় * সাধারণত প্রাদুর্ভাব, স্থান ও রোগের উপসর্গ দেখে রোগ নির্ণয় করা হয় তবে ল্যাবরেটরিতে পিসিআর পদ্ধতিতে বিশেষ ভাইরাস শনাক্ত করা যায়। চিকিৎসা * সাধারণত চিকিৎসা দেয়া হয় উপসর্গ অনুযায়ী। * প্যারাসিটামল জ্বর ও ব্যথার জন্য। * এন্টিভাইরাস : এন্টিভাইরাস যেমন ওসেল্টামিভির, জানামিভির দেয়া যেতে পারে। * এন্টিভাইরাস রোগ উপশম করে না কিন্তু প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে * ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা এই রোগের শুরুতে এন্টিভাইরাস গ্রহণ করতে পারেন। * এন্টি বায়োটিকস : যে ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার কোন প্রদাহ হয় সে ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক দেয়া যেতে পারে। * ভ্যাকসিন : আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২১ অক্টোবর ২০০৯ থেকে সোয়াইন ফ্লু ভ্যাকসিন প্রোগ্রাম শুরু করেছে। বিশেষত ৬ মাস থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত, বাৎসরিক ফ্লুতে আক্রান্তদের জন্য, গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এবং এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সোয়াইন ফ্লু ভ্যাকসিন দেয়া প্রয়োজন। তবে ৬ বছরের নিচের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সোয়াইন ফ্লু ভ্যাকসিন দেয়া থেমে যায় ২০১০ সালে। * যুক্তরাজ্যে এখন টিকা তালিকায় সোয়াইন ফ্লু ভ্যাকসিন রীতিমতো দেয়া হয়। প্রতিরোধ প্রতিরোধে কিছু বিষয় মেনে চলা উচিত * প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। * বাড়ির বা অফিসের আসবাবপত্রের উপরিভাগ পরিষ্কার করা। * মুখমÐলে মাস্ক ব্যবহার করা। * ব্যবহৃত মাস্ক প্রতিদিন আবার যথাযথভাবে ময়লা আর্বজনার পাত্রে ফেলা। লেখক : রেজিস্ট্রার শিশু বিভাগ হলি ফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
×