ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ারবাজারে নতুন পণ্য চালুর আগে সার্ভিলেন্স আরও উন্নত করতে হবে

প্রকাশিত: ০৯:১০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

শেয়ারবাজারে নতুন পণ্য চালুর আগে সার্ভিলেন্স আরও উন্নত করতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, ডেরিভেটিভ মার্কেট চালুর আগে সার্ভিলেন্স সিস্টেম আরও উন্নত করতে হবে। কারণ নতুন পণ্য কারসাজি বন্ধ করতে আরও কঠোর নজরদারির প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, শর্ত পরিপালন হলে দ্রুত প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দেয়া হবে। এর আগে দ্রুত শর্ত পরিপালনের কারণে এক-দেড় মাসের মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দেয়ার রেকর্ড আছে। আবার শর্ত পরিপালনে ব্যর্থতার কারণে অনেক কোম্পানির আইপিও বাতিলও করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর ফারস হোটেলে অনলাইন বিজনেস পোর্টাল বিজনেস আওয়ার টোয়েন্টিফোর ডটকম ও ডিএসই ব্রোকার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত ‘দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নে শেয়ারবাজারের গুরুত্ব শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবিএ’র সভাপতি শাকিল রিজভী। খায়রুল হোসেন বলেন, এখনও প্রত্যেকটি কোম্পানির আইপিওতে কয়েকগুণ আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু তারপরেও আইপিও’র সংখ্যা বাড়াতে গেলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ শেয়ারবাজারে লেনদেনের পরিমাণ কম। এছাড়া আইপিও বেশি দিতে গেলেই নানা জায়গা থেকে অভিযোগ আসে। যা আইপিও কম দেয়ার একটি কারণ। যাতে সুযোগ থাকলেও ২০১৭ সালে তুলনামূলক কম আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। তিনি বলেন, সব কোম্পানিরই শেয়ারবাজারে আসার অধিকার রয়েছে। কিন্তু শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পরে কোন কোম্পানি খারাপ করলেই নানা ধরনের সমালোচনা করা হয়। অথচ আইন পরিপালন করেনি এমন একটি কোম্পানিকেও আইপিও দেয়া হয়নি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, শেয়ারবাজারের স্বার্থে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভাল ভাল কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে ভাল কোম্পানিকে যোগ্যতা অনুযায়ী প্রিমিয়াম দিতেই হবে। এ নিয়ে সমালোচনার সুযোগ নেই। মির্জ্জা আজিজ বলেন, ২০১০ সালে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সময় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার মতো ২৬টি সরকারী কোম্পানি নির্বাচন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ১টি কোম্পানিকেও শেয়ারবাজারে আনা যায়নি। অথচ এক গবেষণায় দেখা গেছে, মালয়েশিয়ার শেয়ারবাজার ৪০ শতাংশ সরকারী কোম্পানির দখলে। তিনি বলেন, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে যোগ্যতা অনুযায়ী অনেক কোম্পানির যথার্থ দর নির্ধারণ হচ্ছে না। এটা দুঃখজনক। এমতাবস্থায় বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির ভাবার দরকার আছে। বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, আমাদের দেশের কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগেরই যাত্রা শুরু হয় পারিবারিকভাবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও পারিবারিক কোম্পানির মধ্যেকার করহারের পার্থক্য কম হওয়ার কারণেই কোম্পানির পর্ষদের আগ্রহ কম থাকে। ডিএসই ব্রোকার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য ভাল ভাল কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত করতে হবে। এর জন্য যাবতীয় প্রণোদনা এবং সুযোগ সুবিধা কোম্পানিগুলোকে দিতে হবে। তাহলেই কেবল দেশের জন্য একটি শক্তিশালী শেয়ারবাজার গঠন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন। ডিবিএ সভাপতি বলেন, আমাদের দেশের অর্থনীতি দিনদিন বড় হচ্ছে। এখন আমাদের দরকার প্রাইম কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করা। এজন্য এসব কোম্পানিগুলো নির্বাচন করে এদের জন্য আলাদা পরিকল্পনা গঠন করতে হবে। ভাল ১০০ কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনতে পারলে বর্তমানের চেয়ে আরও বেশি সফল হওয়া সম্ভব। তাহলে বাজার শক্তিশালী হবে এবং বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গাজী টিভির প্রধান প্রতিবেদক রাজু আহমেদ এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ওমেরা ফুয়েলসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আকতার হোসেন সন্নামাত।
×