ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চাই মানবিকতা

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

চাই মানবিকতা

জীবনের গতি প্রকৃতি খুবই বিচিত্র। কখন কিভাবে মানুষ বদলে যাবে তা কারও জানার কথা নয়! সব বিপত্তির পরও মানুষ বাঁচতে চায়। আবার কখনও কখনও স্বার্থপর মানুষের নির্মিত নিয়তি অদৃশ্যের টানে, সে বেঁচে থাকাটা দুর্বিসহ হয়ে যায়। বিষয়টি একটু মানবিক বিবেচনা করলেই কী নয়? সমাজের গরিব অনাহারিদের কথা, যাদের সখ্য দারিদ্র্যের সঙ্গে, ক্ষুধা ও রোগব্যাধি যাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, মৌল মানসিক ও মানবিক চাহিদার অভাবে বেড়ে ওঠা যাদের জীবন, সমাজে অবহেলিত। ব্যক্তির সম্মান ও চিকিৎসা কেবলই অর্থ সঙ্গতির ওপর নির্ভর করে। দেশের যত্রতত্র, সমাজের অবহেলিত মানুষ সহযোগিতা পাওয়া তো দূরের কথা, তাদের প্রতি করা হয় অবিচার। সম্রাট অশোকের সময় ভারতবর্ষে সরকারী অর্থায়নে প্রথম হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। এক অর্থে তিনি মনে করতেন, চিকিৎসা ও সেবার সুবিধা পাওয়া মানুষের এক ধরনের অধিকার। তিনি তাঁর রাজ্যে ধনী থেকে শুরু করে একজন কপর্দকশূন্য ব্যক্তির জন্যও বিনামূল্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা করেছিলেন। স¤্রাট অশোক সমগ্র ভারতে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রসারিত করেন। তিনি মানবিক কারণে পশু পাখির জন্যও বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারী কোষাগার থেকে খরচ করার ব্যবস্থা করেছিলেন। তার রাজ্যের পরিধি ছিল বর্তমান সময়ে আফগানিস্তান থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। আজ আমরা কি দেখছি? মানুষ চিকিৎসা করতে গিয়ে পরিস্থিতির শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। কারণ ওষুধ কারখানার মালিকেরা ও সরকারী- বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেবা ও ব্যবসার নামে, ইমারত নির্মাণে মানবতা ভুলেছেন। তারা ভুলেছেন সেবার কথা, স্বার্থ চরিতার্থের বেড়াজালে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন। আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে ফুঁসে উঠেছে চিকিৎসার গাফিলতি! এভাবে কি সমাজে চলতে পারে? আমরা পত্রিকার পাতায় দেখতে পাই যে, ভুয়া ডাক্তার তার নামের পাশে ডাক্তারী বিভিন্ন ডিগ্রী বসিয়ে বহাল তবিয়তে চাকরি করে চলেছে। আবার সরকারী- বেসরকারী চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে কোন অনুমতি ছাড়াই ডাক্তারগণ বছরের পর বছর অনুপস্থিত থাকে। জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসা উচিত। কেননা, সরকারের একার পক্ষে এই বিরাট দায়িত্ব পালন করা কঠিন। বেসরকারী সেক্টর এগিয়ে না এলে জনগোষ্ঠী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। পত্রিকার পাতায় দেখা যায় সরকারী হাসপাতালে দরকারী ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসকের সঙ্কট। বিশেষত কর্মরত চিকিৎসকদের গাফিলতির কারণে, বিভিন্ন রোগে আল্ডান্ত রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে এসে পড়ছে নানাবিধ বিড়ম্বনায়। আবার কোন কোন সরকারী হাসপাতালে ডাক্তার যথাসময়ে না এসে তিন-চার ঘণ্টা পর এলেও খোলা চেম্বারে ব্যাগ রেখে অন্যত্র চলে যায়। যদি সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার, কোন সঙ্কটাপন্ন জটিল রোগীদের দ্রুত আগ্রহ নিয়ে ধৈর্য সহকারে চিকিৎসা করেন, তাহলে সত্যিকার অর্থে ডাক্তারি পেশা মানবিক আদর্শে রূপ লাভ করবে। মাইজদী বাজার, নোয়াখালী থেকে
×