ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শরীফা খন্দকার

শীতের তাণ্ডবে বসন্তের এক বিবাগী ঘুঘু পাখি

প্রকাশিত: ১১:০৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

শীতের তাণ্ডবে বসন্তের এক বিবাগী ঘুঘু পাখি

রজকিনী রামি, শীতল জানিয়া ও দুটি চরণ শরণ লইনু আমি। বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের কবি চ-ীদাস বলেছিলেন এমন কথা। কিন্তু প্রেয়সী রজকিনী অর্থাৎ ধোপানি রামির পদযুগল কতটা শীতল ছিল সেটা পদকর্তাই জানতেন। কিন্তু হঠাৎ করে একদা নিউইয়র্ক নগরে আশ্রয় নেয়ার আগে কে জানত তার পাদমূলের ভয়ানক শীতার্ততার কথা। তখন এদেশে নবেম্বর মাস পড়েছে কেবল। ক’দিনের মধ্যে হু হু করা ছন্নছাড়া বাতাসে চারদিকের প্রকৃতি আমাদের কাছে যেন মাঘ মাসে বাঘ কাঁপার মতো শীতল হয়ে গেল। রোদ ঝলকানো দুপুরে বাসস্থানের ব্যাক ইয়ার্ডে দাঁড়িয়ে মনে হতো চেনা সূর্যটায় আলো আছে বটে, তবে হয়ে গেছে তাপহীন। একদিন দেশ থেকে সঙ্গে করে আনা ঢাকার বঙ্গবাজারের সবেধন গাবদা-গোবদা জ্যাকেট পরে পাশের এক খুচরো দোকানে দু’জনে গিয়েছি। অবাক কাণ্ড সেখানে কারও পরনে এ রকম ঢাউস পরিধেয় নেই সে ঠা-াতেও। দুই বুড়ো দোকানের ভেতর জমিয়ে গল্প করছে। আমাদের টেরিয়ে দেখে নিয়ে একজন, জানি না মস্করা করে মন্তব্য করল কি-না কে জানে ‘কোল্ড কোল্ড ...’ কিন্তু উত্তরে ধমকে উঠেছিল অন্যজন-কোল্ড? আর ইউ ক্রেজি? ‘ইট ইজ নট ইভেন থাঙ্কস গিভিং। ’ অথচ এ বছরে চলতি ভয়ঙ্কর শীত ঋতুটি এসেছিল থাঙ্কস গিভিং আসবার অনেক আগেই। হেমন্ত ঋতুর পরশে গাছপালা লতাপাতা যখন মেতে ছিল রঙের খেলায় সে সময়ই হুড়মুড় করে আগে-ভাগে প্রকৃতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল যেন খেলা ভাঙার খেলা। শুধু তাই নয়, ঝড়ের শব্দে গাছের ডাল পালা ভেঙ্গে এসেছিল এক তুষারের দিনও। নবেম্বর মাসের শুরু থেকেই ঠাণ্ডা যার নাম ‘বিটারলি কোল্ড’ আছড়ে পড়েছিল আমেরিকার শীতপ্রধান অঞ্চলজুড়ে। আবহাওয়ার মানুষরা বলছিলেন এক প্রস্থের বেশি গরম কাপড় ভালমতো শরীরে জড়িয়ে বের হতে হবে ঘরের বাইরে। বঙ্গবাজারের সেই জ্যাকেটটি দিয়ে সে ঠাণ্ডার সুরক্ষা হতো না যে, সে বিষয় নিশ্চয় করে বলা যায়। এবারের ডিসেম্বর মাস থেকে শীত নগরের মানুষকে টেনে নিয়ে চলছে খাদ থেকে খাদানের দিকে। গরম কাপড় একটা শুধু নয়, তার একটা বান্ডিল শরীরে চাপিয়েও যার হাত থেকে পরিত্রাণ মিলছে না। বছরের শেষ মাসে যে ঠাণ্ডার দেখা মিলেছিল শীত পরিভাষায় তার নাম বোন চিলিং। আমাদের বাংলা ভাষাতেও বোন চিলিং বা হাড় কাঁপানো ঠা-া বলে এক শব্দ আছে। কিন্তু নাম এক হলেও স্বভাবের মিল থাকবে এমন কথা তো নেই। বালিকা বয়সের হাড় কাঁপিয়ে দেয়া শীতের দিন এখনও স্মৃতিতে অক্ষয়। সকালের রোদ সামনের বারান্দাটায় উঁকি মারতেই পড়ার টেবিল থেকে ছুটে সেখানে এসে মাদুর বিছিয়ে বইপত্র নিয়ে পড়তে বসা হতো। গায়ে একটা হালকা চাদরই তখন ছিল যথেষ্ট। সকাল ১০টায় স্কুলে যাবার সময় ইউনিফর্মের ওপর শীত সিজনে খুব কম দিনই পরার দরকার হয়েছে উলের হাতে বোনা ছেলেবেলার শৌখিন সোয়েটারটি। আজ দেশের অর্থনীতি বদলে গেছে, কিন্তু আমাদের সমাজের হাজারো দরিদ্র মানুষের জন্য সে সময় গরম বস দূরের কথা সুতির কাপড়ই ছিলই না যুগ যুগ ধরে। কিছু ভাগ্যবান শিশু নারী পুরুষের কপালে জোটা আম শীত বস্ত্রটি তখন পরিচিত ছিল র‌্যাবের নামে। শরৎ বাবুর শ্রীকান্ত উপন্যাসে দুরন্ত দরিদ্র কিশোর ইন্দ্রনাথের কথা এখনও ভুলিনি। হাড় কনকনে শীতের রাতে ইন্দ্রনাথের শরীরে শীত পরিধেয় হিসেবে জুটেছিল কিছু একখানা। নৌকার মাঝি ইন্দ্রের শরীরের উর্ধভাগে মলিন সেই চিলতে বস্ত্র দেখে বিস্ময় ও তাচ্ছিল্য ভরা প্রশ্ন করেছিল সওয়ারী এক নতুন বাবু- তোর গায়ে কালোপনা ওটা কিরে? কি ব্যাপার? এবারের পৌষ মাসে যখন ফোন দেশে করতাম রংপুরের প্রায় সবাই তখন হি হি করে কেঁপে বলত-আমাদের এখানে খুবই ঠাণ্ডা- শীতে হাড় কাঁপছে এ যেন তোমাদের মতো ঠাণ্ডা। কিন্তু নিউইয়র্ক শহরে তখন বাংলাদেশের শূন্য ডিগ্রী বা ফ্রিজিং পয়েন্ট থেকে আরও নিম্নগামী হয়ে হাড়ের জোড়া শুদ্ধ কম্পন তুলছে। রসায়ন নামক শাস্ত্র মতে তাপমাত্রা যে বিন্দুতে পৌঁছালে তরল পদার্থ রূপান্তরিত হয়ে যায় কঠিন পদার্থ-জলীয় পদার্থ জমে যায় বরফে তাকেই বলে ফ্রিজিং পয়েন্ট। আমরা এখন সেই পয়েন্ট থেকেই অধিকাংশ দিনে গড়িয়ে পড়ছি নিচের দিকে। যদিও আমার কাছে সব অঙ্কের সঙ্গে হিমাঙ্কের অঙ্কের হিসাবটাও একরকম জটিল তারপরেও প্রসঙ্গক্রমে বলে নেই এখানে আমরা যখন ৩৩ ডিগ্রী ফারেন হাইটে থাকি বাংলাদেশের সেলসিয়াস মতে সেরকম আবহাওয়া হলে হয়ে যাবে শূন্য ডিগ্রী। এদেশে যখন শূন্য হয় তখন সেখানে হয়ে হবে মাইনাস অর্থাৎ শূন্যের ৩৩ ডিগ্রী নিচে। আমেরিকার ফারেন হাইট স্কেলের হিসেবে কখনও কখনও : হিম পরিমাপ যন্ত্রের পারদ নেমে যাচ্ছে বিলো জিরো...সাব জিরো...। এমনি করে নামতে নামতে মিডওয়েস্ট এবং নর্থ ওয়েস্ট আবহাওয়া হয়ে গিয়েছিল লাইফ থ্রেটেনিং। নির্মম শীত যখন যুক্তরাষ্ট্রের নানা স্থান রুদ্র বেশে জীবনকে নানাভাবে করে দিচ্ছে জেরবার, তখন আমাদের পড়শী বসন্তের ঘুঘু আচমকা এ বাড়ি ওবাড়ি চমকে দিয়ে গাওয়া শুরু করল বসন্তের বিরহ গান। এমন দুঃসময়ে পাখিটা বিবাগী হয়ে কোটর থেকে বেরিয়ে অচেনা সময়ে কেন যে তুলল ওর সেই চেনা সুর কে বলবে। হলফ করে বলতে পারি যে কোন অচেনা পথিকের মতো দূর-দূরান্তর থেকে সে আসে না। তার বসত কাছে পিঠেই। তার সুরের সঙ্গে নিউইয়র্কের আকাশে উঠেছিল জগৎজুড়ে আলোচিত রক্তিম সেই সুপার পূর্ণিমার চাঁদ। কিন্তু সেই আসন্ন রাতের বার্তা দিতে গিয়ে ওয়েদার ফোরকাস্ট এঁকেছিল চাঁদের লাল রঙের পাশাপাশি বিপদের লাল রং। একদিন নয় সেটি হলো পরপর দুদিনে জন্য। ঘরের হিটিংয়ের উষ্ণতার ভেতর দেখেছিলাম সে রাতে আমাদের শোবার ঘরের জানালায় উঁকি দিয়েছিল বিশাল রক্তিম পূর্ণিমার চাঁদ। গভীর নিশীথে অনেক মানুষ ঘুমিয়ে পড়ার পর, একটু একটু করে ছায়াময় মায়াময় হয়ে যখন চাঁদকে গ্রহণ করেছিল পৃথিবী তখন বাইরের শীতলতাকে বলা হয়েছিল ডেঞ্জারাসলি কোল্ড। কাউকে যদি একটি ডিপ ফ্রিজে লক করে রাখা হয় পরিস্থিতিটা ছিল এমন। কোন চন্দ্রাহত ব্যাকুল নারী কিংবা পুরুষ সে আবহাওয়ার সরাসরি সংস্পর্শে এলে নির্ঘাত ঘটবে হাইপো থার্মিয়ার ব্যাপার। এরকম মেডিক্যাল কন্ডিশনে শরীরের তাপমাত্রা নেমে গিয়ে হৃদয়, স্নায়ুতন্ত্র এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে সাধারণত কাজ করতে পারে না। অতি দ্রুত চিকিৎসা না দিতে পারলে সব কিছু বিকল হয়ে গিয়ে নিয়ে আসে মৃত্যুর পরোয়ানা। এ বছর শীতের কবলে পড়ে মৃতের সংখ্যা হয়েছে অনেক। এরই ভেতর টেলিভিশনে খবরে দেখাল শিকাগোতে বয়ে যাচ্ছে স্মরণাতীতকালের শীতলতম ঝড়ের বাতাস যার নাম দেয়া হয়েছিল সাইবেরিয়ান এক্সপ্রেস। শুধু তাই নয়, তার লেক মিশিগান সুবিশাল জলরাশি অতল জল ঢেকে যাচ্ছে বরফের স্তরে। এরই সঙ্গে সবিস্ময়ে দেখা গেল লেক থেকে উদ্গিরণ হচ্ছে ধোয়ার কু-লী। কিন্তু তখন প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর শীতলতম দেশ সাইবেরিয়ার আবহাওয়া ছিল কেমন? বলা হলো সাইবেরিয়ায় শীতলতা নাকি তখন ছিল ২৮ ডিগ্রী আর আমাদের নিউইয়র্কে ২ ডিগ্রী- আর শিকাগোতে ছিল মাইনাস পঞ্চাশ। অন্যদিকে কানাডার সঙ্গে বর্ডার মিনিসোটা রাজ্যের টুইন সিটির জন মানুষ জম্মেও দেখেনি উইন্টারের এমন হুজ্জত যেখানে টেম্পারেচার হয়ে পড়েছে মাইনাস ৬০ ডিগ্রী। স্কুলগুলো ছুটি থাকল পুরো সপ্তাহ। আর এক সাংঘাতিক কা- হিসেবে দুনিয়া দেখল কাঁচা ডিমের বাক্সগুলো একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাইরে রেখে দিলে সেগুলো পরিণত হচ্ছে মার্বেল পাথরে কঠিন পাথরের ওপর আছড়ালেও সেগুলো ভাঙছে না। আমাদের নিউইয়র্ক নগরকে বলা হচ্ছিল আলাস্কা- তবে বরফে নয় ঠা-ায়। একটা কথা জানিয়ে রাখা ভাল খুব ঠা-ায় যে তুষারপাত হবে তা নয়। ধরতে গেলে আজকে ফেব্রুয়ারির লেখার শেষ দিন পর্যন্ত বড়সড় তুষাপাত ঘটেনি। কিন্তু মজার কথা এক কাপ ভয়ানক উষ্ণ কফি আকাশের দিকে ছুড়ে ফেললে সেটা ফিরে আসছিল ঝুরঝুরে বরফের রূপ ধরে। কিন্তু জীবন তারপরেও চলমান। কত নারী পুরুষ ঠা-ায় দাঁড়াতে না পেরে ড্রতে দৌড়াতে যাচ্ছে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ধরবার জন্য। আমাদের রাজেক ভাইয়ের আদরের বড় কন্যা রিনির নিবাস এখন শিকাগোতে। ওর কাছে খবর নিতে গিয়ে জানা গেল বাবা তাকে এই দুর্যোগে বাইরে বেরুতে বারণ করেছেন। কিন্তু ছোটবেলার সেই নরম শরম মেয়ের ভয়ডর আছে কি। সে ঠিকই গাড়ি ড্রাইভ করে তিন বছরের মেয়েকে স্কুলে দিয়ে প্রতিদিন অফিস যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদগণ লাল চিহ্নিত দিনের শীতলতাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন বোন ক্রাশিং বা হাড় গুঁড়োনো ঠা-া নামে। দেশে মায়েরা রেগে মেগে কতবার মেরে হাড় গুঁড়ো করার ভয় দেখাতেন সন্তানদের। কিন্তু মাদার নেচারের বোন ক্র্যাশিং ব্যাপারটি ভীরুকে ভয় দেখানোর মতো নয় গো। বলা হলো, প্রকৃতি এখন ডেঞ্জারাসলি ত্রুদ্ধ হয়ে উঠেছে। কাউকে বাগে পেলে ছাড়বে তুলো ধুনো করে। জানানো হয়েছিল ঘর ছেড়ে নিহায়ত প্রয়োজনে যদি বাইরে রাস্তায় বেরুতেই হয় হবে শরীরে বান্ডিলের মতো গরম কাপড় জড়িয়ে। পূর্ণিমার পর দিন মার্টিন লুথার কিং ডে। স্কুল ছুটি। সবার না হলেও অনেক প্রতিষ্ঠানেও সেদিন ছুটি থাকে।’ এমন দিনে মন খোলা যায়’? কিন্তু আমার বাড়ির একমাত্র মানুষ ছুটির সুখে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে শুয়ে নানান কিছু পড়ছে যে! আর আমি হট চকোলেটের এক মগ হাতে জানালার ওপারে তাকিয়ে দেখছি। নিস্তব্ধ সামনের ব্লকের পথটি নির্জন। বড় আশ্চর্য ব্যাপার আমাদের নিউইয়র্ক নগর রোদ ঝলমলে থাকে মহাপ্রতাপান্বিত শীতেও। দেখছি ছোট পথটায় হাঁটা মানুষ তো নেই গাড়িও প্রায় চলছে না। ভয় এবং বিপদ একসঙ্গে করে অনেক সময় শীতলতা আসে এদেশে। শীত বাতাসের সুতি পরশে বিশাল আকৃতির ঝাঁকড়া মাথাওয়ালা মেপল, বার্চ পপলার এসবের ডাল শূন্য হয় শুরুতেই। বড় পাখিরা উড়ে যায় অন্য কোন দেশে পরিযায়ী হয়ে। তবে মাঝারি ও ছোট পাখিগুলো এ শহরের আশ্রয় ছেড়ে যায় না যারা প্রচ- শীত সহিষ্ণু। পাখি পায়রার দল আশ্রিত হয়ে থাকে এই নগরেই। কাঠ বেড়ালীরাও ওদের দোসর হয়ে গাছের ওপর ওঠে নামে উঠছে চোখের নিমিষে। তবে কিছু পাখি সংগৃহীত খাবার নিয়ে সমস্ত শীতকালটা কাটায় নীরবে নিভৃতে। আর বাতাসে যখন বসন্তের আমন্ত্রণ আসে তখনই কঠোর ছেড়ে বেরিয়ে আসে সেগুলো। যেমন আমাদের পড়শী এক জোড়া এই ঘুঘু পাখি। আর আশ্চর্যের মতো দুটো কাক। হয়তো পালকগুলোই পাখিদের বা-ল আপ হয়। আজকের এমন দুর্দান্ত সময়েও ইতস্তত বিক্ষিপ্ত চলাচল থাকলেও মনে হচ্ছে আজ সত্যি সত্যি বোন ক্র্যাশিংয়ের ব্যাপার-স্যাপারে ওরাও সন্ত্রস্ত। প্রতিবেশী বাড়ির রান্নার চিমনির ওপর পাখা ছড়িয়ে সেঁকে নিচ্ছে নিজেদের। কিন্তু তাই বলে এমন রুদ্র সময়েও সেই বসন্তের বিবাগী ঘুঘু পাখিটা তার বিরহ গানের সুর তুলবে পঞ্চমে? কিন্তু পরের দিনই প্রকৃতি বিজ্ঞানীদের বরাতে খবর হলো এবারে বসন্ত নাকি আসছে আগাম। সেকি ওর বিরহ গানের জ্বালাতেই! সত্যি তো ম্যাপেল এর কুড়ি বেড়ে উঠছে মাথা উঁচু করে। তারপরও কাল প্রথমবারের মতো নিউইয়র্কে নামতে হচ্ছে তুষার। ইতোমধ্যে তো সিয়াটল ডুবে গেছে তুষারের ভারে। লেখক : আমেরিকা প্রবাসী
×