ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাজনীন বেগম

অ ন্য র ক ম খ ব র ॥ চা খেয়েই ৩৩ বছর ভাল আছেন পিল্লী দেবী

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

অ ন্য র ক ম  খ ব র ॥ চা খেয়েই ৩৩ বছর ভাল আছেন পিল্লী দেবী

চা মানুষের প্রতিদিনের ক্লান্তি, অবসাদ, মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম পানীয়। যা মোটেও ক্ষুধাবৃত্তিকে নিরসন করতে পারে না। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় ন্যূনতম খাবার নির্ধারিত না থাকলে শুধুমাত্র চা পান করে দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকা সত্যিই কষ্টকর। এমনই চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছে ভারতের মধ্য প্রদেশের ছত্তিশগড়ের পিল্লী দেবীর বেলায়। ৪৪ বছর বয়স্ক এই নারী গত ৩৩ বছর ধরে শুধুু চা পান করে বেঁচে তো আছেনই এমনকি সুস্থভাবে দিনও কাটাচ্ছেন। মাত্র এগারো বছর বয়সে এই বালিকা খাদ্য তালিকা থেকে সব কিছু বাদ দিয়ে মাত্র চাকে সম্বল করে জীবন ধারণ করে আসছেন। এমন অভিনব ঘটনায় সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা ছাড়াও এই চল্লিশোর্ধ নারী শিশু-কিশোরদের মনোযোগ কেড়ে নেন। ভারি খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে এমন কার্পণ্য সত্যিই বিরল। প্রথম দিকে চায়ের সঙ্গে যৎসামান্যটাও (বিস্কুট) খেতেন বলে নিকটজনেরা জানায়। পরবর্তীতে সেটাও ছেড়ে দিয়ে চায়ের মতো তরল পানীয় পান করে জীবনের এতটা বছর কাটিয়ে দেয়া অনায়াসে নির্বিঘেœ সেও এক ব্যতিক্রমী নৈমিত্তিক যাত্রা। যা পিল্লী দেবী কোন অলৌকিক শক্তি বলে আয়ত্তে এনেছেন কিনা বলা মুশকিল। না, তেমন কোন দৈব ঘটনার প্রমাণ নেই এমন কৃচ্ছ্র সাধনের পেছনে। এই স্বল্পপায়ী মহিলা নিজ পাড়ায় ‘চায়েওয়ালি চাচি’ হিসেবে পরিচিত। পিতা রতিরামের ভাষ্য অনুযায়ী ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী পিল্লী জেলা স্তরের এক স্কুল প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে ঘুরে আসেন জনকপুরে। ফিরে এসে দেখা গেল ভারি খাবারের প্রতি এই মেয়েটির কোন আকর্ষণ কিংবা আগ্রহ একেবারেই নেই। শুরু থেকে বিস্কুট ও পাউরুটি খেলেও পরবর্তীতে শুধ চা-ই হয়ে ওঠে জীবন ধারণের একমাত্র আহার। বাবা-মা এবং ভাইয়েরা অনেক চেষ্টা করেও কোন ক্ষুধা নিবৃত্তির খাবার খাওয়াতে ব্যর্থ হয়। এক সময় তারা চিকিৎসকেরও পরামর্শ নেয়। সারাদিন অভুক্ত থেকে সূর্যাস্তের পর শুধু লাল চা পান করা জীবনের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস হয়ে যায়। তাই বিহারী লাল রাজভয়ে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বললেন বোনকে নিয়ে তারা অনেক চিকিৎসক এমনকি মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরও শরণাপন্ন হয়। কিন্তু পিল্লী দেবীর এমন খাদ্য গ্রহণের অভ্যাসকে কোন ব্যাখ্যা দেয়া কারও পক্ষেই সম্ভব হয়নি। সুতরাং প্রতিকারের উপায়ও হয়ে যায় অজ্ঞাত, অনিশ্চিত। গৃহ অভ্যন্তরে দিন যাপনে অভ্যস্ত এই নারী বাইরে বেরই হন না। শুধু তাই নয়, কুমারী এই মহিলা শিবকে পতিজ্ঞানে পূজা করে তার উপাসনালয়কে পূর্ণ করে রাখে। চিকিৎসকরাও এমন অভিনব খাদ্যপানে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তাদের মতে কোন পূজা বা পার্বণে শুধু চা পানে অনেকেই টানা উপবাস করেন কিন্তু দীর্ঘদিনের অভ্যাসে পরিণত হওয়া এই অভুক্ত জীবনাচরণ এই প্রথম বার তারা প্রত্যক্ষ করলেন। কিন্তু পিল্লী দেবী নির্বিকার-নিরুদ্বেগ তার বর্তমান খাদ্যাভ্যাস নিয়ে। সূত্র : ওয়েবসাইট
×