ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘গালি বয়’ আসলে জিতে যাওয়ার গল্প

প্রকাশিত: ০১:৪২, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

‘গালি বয়’ আসলে জিতে যাওয়ার গল্প

অনলাইন ডেস্ক ॥ ‘গালি বয়’ আসলে জিতে যাওয়ার গল্প। যেমন জিতে যাওয়া প্রতিদিন আমাদের জীবনে ঘটে। কেউ বুঝতে পারি। কেউ পারি না।সিনেমা যখন সেই জয়ের গল্প চিৎকার করে বলে, আমরা স্বস্তি পাই। বলি, ‘‘আরে, এই তো আমার গল্প।’’ ধারাভি মুম্বাইয়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় এক বস্তি এলাকা। সেখানে এমন গালি বয়দের দেখা যায় প্রত্যহ। এরোপ্লেন যখন মুম্বাইতে নেমে আসে, তখন আপাত চকচকে এ শহরের নীচের বিরাট বস্তি দেখা যায়। এই সব গলিগলতায় ঢুকে পড়লেই আপনি দেখা পাবেন রণবীর সিংহ আর আলিয়া ভট্টদের। গরিব প্রেমিক-প্রেমিকা। দেখবেন, নানা রকম র্যাপারদের। নানা প্রদেশ থেকে আসা র্যাপাররা গানের ভেতর দিয়ে তাঁদের যন্ত্রণার কথা বলেন ধারাভিতে। বলেন রাগ ও প্রেমের কথাও। আর সে সব কথা জড়িয়ে মড়িয়েই তৈরি এ ছবি। র্যাপ সঙ্গীতের এমন এক ধারা, যাতে মানুষের রাগ বা যন্ত্রণার কথা চাচাছোলা ভাষায় বলা হয়। বলা হয় অশান্ত ভাবে। রাগের মতোই। ছন্দে ছন্দে। এ ছবির গল্পও তাই একবারও ছন্দহীন হয় না। ছবিটা দেখতে দেখতে মাঝে মাঝেই মনে পড়ছিল, এন্টনি ফিরিঙ্গি ছবি। সে ছবির কবির লড়াইয়ের মতো এ ছবিতেও আসে গানের লড়াই। জীবনের লড়াইও। শেষে যদিও নিজের পথে জিতে যান ইরফান। জেতে আলিয়ার তাঁর প্রতি ভালবাসাও। গান আর প্রেমের হাত ধরে এ ছবি তরতরিয়ে এগিয়ে চলছিল। আলিয়া ভট্টের স্মার্ট অভিনয় এ ছবির সম্পদ। এমন কাঠখোট্টা প্রেমিকা বহুদিন দেখেনি হিন্দি ছবি। তেমনই রণবীর সিংহ। এক ফালি ঘিঞ্জি ঘরে র‍্যাপার হতে চাওয়ায় বাড়ির অশান্তি, তবু লড়ে যাওয়া, জীবনে নতুন প্রেম আসায় পুরনো প্রেমের সঙ্গে টানাপড়েন, সামান্য চাকরি, এবং র‍্যাপ লড়াইয়ে জিতে যাওয়া, এই সব কটা জীবনের পর্বই বিশ্বাসযোগ্য করে তোলেন রণবীর। ছবিটা দেখতে দেখতে জোর পাওযা যায় মনে। শুধুমাত্র ভালবাসা আর বিশ্বাস দিয়েই তা হলে জিতে যাওয়া যায়? বারবার এ কথাই মনে হয় সাবর। মুম্বাইয়ের ঝাঁ চকচকে দুনিয়া, শপিং মলের অন্তঃসারশুন্যতা আর ঘিঞ্জি গলির একরত্তি প্রেম আর স্বপ্নের নিত্য লড়াই চলে এ ছবিজুড়ে। বারবার মনে হয়, এই সামান্য গরিব ছেলেটি পারবে তো? পারবে তো সে তার গান গাইতে? পারবে তো ওই পাগলাটে মেয়েটাকে ভাল রাখতে? ওরা যেন ভাল থাকে ঠাকুর, দেখো। শেষমেশ যদিও ঈশ্বর ওদের মঙ্গল করেন। কোথাও বাস্তব জীবনের গল্প বলতে গিয়ে অবাস্তব হয় না এ ছবি। সেখানেই এ ছবির জোর। খুব বিশ্বাস করায় এ ছবির প্রেম, এ ছবির লড়াই। বলে, চাইলে তুমিও পারবে। প্রতি র্যাপে যতবার আঘাত ধেয়ে আসে রণবীরের দিকে, ততবার তা ফিরিয়ে দেন তিনি। শব্দ দিয়ে। কথা দিয়ে। জীবন দিয়ে। ধাক্কা মারেন। পিছু হটে যায় শত্রুপক্ষ। পিছু হটে যায় কিছু অশুভ। প্রেমিকা হাত বাড়ায় আর একবার। বিশ্বাস ফিরে পেয়ে। মনে হয়, আরে, জীবন কি সুন্দর! সত্যি তো! সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×