ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কাশ্মীরে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪

প্রকাশিত: ০২:২২, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

কাশ্মীরে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪

অনলাইন ডেস্ক ॥ কাশ্মীরে উরির সেনাঘাঁটিতে জঙ্গী হামলায় ১৯ জন সেনার মৃত্যুর পরে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তা নিয়ে ভোটের আগে প্রচারও কম নয়। কিন্তু আজ, মোদী জমানার শেষ পর্বে কাশ্মীরে আরও বড় মাপের হামলা চালাল জঙ্গিরা। পুলওয়ামার অবন্তীপোরায় সিআরপি কনভয়ে গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৪ জন সেনা সদস্য। আহত ৪১ জন। ওই কনভয়ে ছিলেন হাওড়া-বাউড়িয়ার চককাশীর বাসিন্দা বাবলু সাঁতরা। পরিবার সূত্রের খবর, এ দিন সকালে বাবলু তাঁর স্ত্রী মিতাকে ফোনে বলেছিলেন, তাঁরা বাসে শ্রীনগরের দিকে যাচ্ছেন। টিভিতে হামলার খবর জানার পরে মিতা তাঁকে বারবার ফোন করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আর যোগাযোগ হয়নি। ঘটনার দায় নিয়েছে পাকিস্তানি মদতে পুষ্ট জঙ্গী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। উরির হামলাতেও তারাই জড়িত ছিল। শুধু তা-ই নয়, ২০০১ সালে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় গাড়িবোমা হামলাতেও ছিল এই সংগঠনটি। ১৮ বছর পরে উপত্যকায় গাড়িবোমা হামলাতেও তারা। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, জইশ-ই-মহম্মদকে পাকিস্তানের মাটি থেকে কাজকর্ম চালাতে দিচ্ছে সে দেশের সরকার। রাতে পুলওয়ামার জঙ্গী-হামলা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। ঘটনাটিকে ‘গভীর উদ্বেগের বিষয়’ বলে অভিহিত করে পাক সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা সব সময়েই কাশ্মীর উপত্যকায় সব ধরনের হিংসার নিন্দা করে আসছে। একই সঙ্গে পাকিস্তান বলেছে, ‘কোনও তদন্ত ছাড়াই ভারত সরকার এবং ভারতের সংবাদমাধ্যম যে-ভাবে পুলওয়ামার ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তানের নাম জড়ানোর চেষ্টা করছে, আমরা দৃঢ় ভাবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করছি।’ জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি অমিত কুমার জানিয়েছেন, আজ ৭৮টি গাড়ির সিআরপি কনভয় জম্মু থেকে শ্রীনগরের দিকে যাচ্ছিল। বাস, ট্রাক ও এসইউভি মিলিয়ে ২৫০০ জন জওয়ান ছিলেন তাতে। দুপুর সাড়ে ৩টায় জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে অন্তত ৩৫০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ঠাসা একটি স্করপিয়ো কনভয়ের দু’টি বাসে ধাক্কা মারে। প্রবল বিস্ফোরণের পরে একটি বাসে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণের পরে আধাসেনাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ও গুলি চালায় জঙ্গিরা। জইশের মুখপাত্র মহম্মদ হাসান দাবি করে, হামলা চালিয়েছে আদিল আহমেদ ওরফে ওয়াকাস নামে তাদের এক ফিদায়েঁ। হামলার কয়েক মিনিট আগে তোলা ওয়াকাসের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। তাতে জইশের কয়েকটি হামলার কথা ফলাও করে বলে ওয়াকাস জানিয়েছে, এই ভিডিয়ো যখন সকলে দেখবেন, তখন সে বেহশ্তে। পুলিশ জানিয়েছে, পুলওয়ামার বাসিন্দা ওয়াকাস গত বছর জঙ্গী দলে যোগ দিয়েছিল। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রধান দিলবাগ সিংহ জানিয়েছেন, তুষারপাতের কারণে গত তিন দিন ধরে বন্ধ ছিল জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক। ফলে যেখানে সাধারণত একটি কনভয়ে ১ হাজার জওয়ান যাওয়ার কথা, সেখানে এই কনভয়ে ২৫৪৭ জন সৈনিক ছিলেন। গোয়েন্দাদের ধারণা, তা জানতে পেরেছিল জঙ্গীরা। একটি সূত্রের দাবি, কাশ্মীরে আইইডি বিস্ফোরণের সম্ভাবনা নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি সতর্ক করেছিলেন গোয়েন্দারা। কিন্তু বাহিনী তাতে গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, এই রাস্তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে সিআরপি, পুলিশ এবং সেনা। ৫০ মিটার অন্তর অন্তর চেকপোস্ট। তার মধ্যেই কীভাবে হামলা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হামলার পর এ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামিকাল কাশ্মীরে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×