ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যারা এই হামলা চালিয়েছে, বড় মূল্য চোকাতে হবে তাদের ॥ মোদি

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

যারা এই হামলা চালিয়েছে, বড় মূল্য চোকাতে হবে তাদের ॥ মোদি

অনলাইন ডেস্ক ॥ জওয়ানের মৃত্যু বিফলে যাবে না। কখন, কোথায়, কী ভাবে প্রত্যাঘাত করা হবে সেটা সিদ্ধান্ত নেবে সেনারাই। আর এ বিষয়ে সেনাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। পুলওয়ামার হামলাকারীদের উদ্দেশে আজ শুক্রবার চরম হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, “যারা এই হামলা চালিয়েছে, বড় মূল্য চোকাতে হবে তাদের। শাস্তি পেতেই হবে। কোনও ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না ওদের।” প্রতিবেশী দেশ ভারতে চরম অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তাদের মনস্কামনা পূর্ণ হতে দবে না ভারত। হামলা হলে তার পাল্টা জবাব দেওয়া হবেই। নাম না করে পাকিস্তানকেও এ দিন কড়া বার্তা দেন মোদি। বলেন, “প্রতিবেশী রাষ্ট্র ষড়যন্ত্র করে ছাড় পাবে না।” এটা একটা সংবেদনশীল মুহূর্ত। এই সময় রাজনীতি থেকে দূরে থাকাটাই শ্রেয় বলে মনে করেন মোদি। বরং এই সঙ্কট মুহূর্তে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করা উচিত। মোদি বলেন, “এই সংবেদনশীল মুহূর্তে রাজনৈতিক বিরোধিতা থেকে দূরে থাকা দরকার। আমাদের একজোট হয়ে মোকাবিলা করতে হবে।” তবে সেনাদের মৃত্যু যে কোনও ভাবেই বিফলে যাবে না সে কথাও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। জঙ্গী সংগঠনগুলোর উদ্দেশে মোদির হুঁশিয়ারি, এই হামলা চালিয়ে তারা চরম ভুল করেছে। আর এই ভুলের মাসুল অনেক বড় আকারে চোকাতে হবে তাদের। বলেন, “দেশকে ভরসা দিচ্ছি, এই হামলার পিছনে যে শক্তি কাজ করছে তাদের শাস্তি হবেই।” নিহত জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোদী বলেন, “জওয়ানদের মৃত্যু বিফলে যাবে না। সেনার উপর আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা আছে। হামলার প্রতিশোধ নিতে তাই বাহিনীকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। ” অন্য দিকে, এই হামলায় কড়া বিবৃতি দিয়েছে সিআরপিএফ। টুইটে তারা জানিয়েছে, “আমরা ভুলব না। আমরা ক্ষমা করব না। পুলওয়ামার হামলায় নিহত জওয়ানদের পরিবারের পাশে আছি। এই জঘন্য হামলার বদলা নেবই।” বৃহস্পতিবার বিকেলে পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গীগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা চালায়। সেই হামলায় নিহত হয়েছেন ৪০ জন জওয়ান। নিখোঁজ আরও তিন। আহত হয়েছেন ৪১ জন। হামলার ভয়াবহতায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। ক্ষোভে ফুঁসছে দেশবাসী। আর একটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইকেরও দাবি উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই! ২০১৬-য় উরিতে সেনা ক্যাম্পে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছিল। সেই ঘটনায় ১৯ জন জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। হামলায় পাক মদতপুষ্ট জইশের নাম উঠে এসছিল। পুলওয়ামার হামলাতেও জড়িয়ে রয়েছে সেই জইশ জঙ্গীগোষ্ঠী। পাকিস্তান জঙ্গীদের মদত দিচ্ছে, আর উরি হামলা তারই ফল। তথ্যপ্রমাণ সহ সে কথা আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলেছিল ভারত। কিন্তু পাকিস্তান বার বারই সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। জঙ্গীদের মদত দিলে ফল ভাল হবে না। আমেরিকাও বার বার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানকে। কিন্তু তার পরেও একের পর এক হামলা হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের বুকে। পুলওয়ামার আগে সবচেয়ে বড় আঘাতটা ছিল উরিতে। কিন্তু সেই হামলার মূল্য যে চোকাতে হবে তখনও সেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ভারত। আর তার পরেই হয় সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। উরির পরে এ বার পুলওয়ামা। এ বার আরও বড়সড় হামলা। হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে উঠে এসেছে জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের নাম। এ বারও বরাবরের মতো হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। মোদি বলেছেন, হামলার বড় মূল্য চোকাতে হবে। তা হলে কি আরও একটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হতে চলেছে? শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। তবে এ দিনের সাংবাদিক বৈঠক করে মোদী যে চরম বার্তাটা পাকিস্তানকে দিয়ে দিলেন বলাই বাহুল্য। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×